প্রতি বছর রোজার ঈদ, পূজা ও নতুন ধান ওঠার পর সবচেয়ে বেশি স্বর্ণের অলঙ্কার বিক্রি হয়। কিন্তু এবছর ঈদকে সামনে রেখে মানুষ স্বর্ণালঙ্কার কেনার বদলে উল্টো বিক্রি করে দিচ্ছেন।
ব্যাবসায়ীরা বলছেন, পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে—ক্রেতা না থাকায় বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ার পরও দেশের বাজারে বাড়ানো হচ্ছে না। ঈদ উপলক্ষে নানা ছাড় দিয়েও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। স্বর্ণের অলঙ্কার বিক্রি আশঙ্কাজনকহারে কমে যাওয়ায় অনেকটাই আয়হীন হয়ে পড়েছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। আবার বিক্রি না থাকায় স্বর্ণ শিল্পীরা কাটাচ্ছেন বেকার সময়।
মানুষ এখন স্বর্ণের অলঙ্কার কেনার বদলে বিক্রি বেশি করছে। কারণ করোনার প্রকোপে মানুষ এখন কষ্টে আছে। অনেকের আয় কমে গেছে। আবার কিছু মানুষ আছে জাকাত দেয়া লাগবে, এ কারণে বাড়তি স্বর্ণ বিক্রি করে দিচ্ছে। সব মিলিয়ে মানুষ এখন যা কিনছে, বিক্রি করছে তার থেকে বেশি
স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, গত বছর করোনার প্রকোপ শুরুর পর সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলে তার পর থেকেই স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও শিল্পীরা বিপাকে পড়েন। চলতি বছরের রোজার ঈদকেন্দ্রিক ভালো ব্যবসা করে লোকসান কিছুটা কাটিয়ে উঠবেন, এমন প্রত্যাশা ছিল ব্যবসায়ীদের। কিন্তু ঈদকেন্দ্রিক বিক্রি শুরু হওয়ার আগেই আবার করোনার প্রকোপ বেড়ে গেছে। ফলে মন্দা দেখা দিয়েছে স্বর্ণের ব্যবসায়। এখন মানুষ স্বর্ণালঙ্কার কেনার বদলে বিক্রি করছে বেশি। এর কারণ মানুষের আয় কমে গেছে। করোনার প্রকোপে অনেক মানুষ দরিদ্র হয়ে গেছে। আবার অনেকে আছে জাকাত দেয়ার জন্য বাড়তি স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করে দিচ্ছে। হাতে টাকা না থাকায় মানুষ এখন অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া শখের পণ্য খুব কম কিনছে।
এদিকে দেশের বাজারে মন্দা দেখা দিলেও সম্প্রতি বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় উত্থান হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১০ মে) সভা করে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
বাজুসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণ ৭১ হাজার ৪৪৩ টাকায় বিক্রি হবে। এছাড়া ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬৮ হাজার ২৯৩, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ ৫৯ হাজার ৫৪৪ ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ৪৯ হাজার ২২ টাকায় বিক্রি হবে।