আইন-বিচার
২০ বছর পর সাব্বির হত্যাকাণ্ডের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। অজানা কারণে ২০ বছর এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হওয়ায় খুশি স্বজনরা। দেরিতে হলেও ন্যায় বিচার চান তারা।
এর আগে ২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি শহরের মাসদাইর এলাকার বাসার সামনে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন সাব্বির আলম খন্দকার। তিনি বাংলাদেশ নিট ম্যানুফ্যাকচারাস অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোশিয়েসনের (বিকেএমইএ) সহ-সভাপতি ও জেলা চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক ছিলেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালে অপারেশন ক্লিনহার্ট চলাকালীন সময়ে ওই বছরের ২২ অক্টোবর প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এক সভায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন সাব্বির আলম খন্দকার। ওই বক্তব্যে তিনি নারায়ণগঞ্জের সন্ত্রাসী, গডফাডার ও মাদক ব্যবসায়ীদের নাম প্রকাশ করেছিলেন। সেই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেছিলেন। আর ওই বক্তব্য দেয়ার কয়েক মাস পর ২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দুর্বৃত্তদের গুলিতে তিনি নিহত হন।
সাব্বির আলম হত্যাকাণ্ডের পর তার বড়ভাই অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের তৎকালীন বিএনপির এমপি গিয়াসউদ্দিসহ ১৭ জনকে আসামি করে ফতুল্লা থানায় মামলা করেন। এরপর থেকে ৯ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়। পরে মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তর করা হয়। সিআইডির তৎকালীন এএসপি মসিহউদ্দিন দশম তদন্তকারী কর্মকর্তা দীর্ঘ ৩৪ মাস তদন্ত শেষে ২০০৬ সালের ৮ জানুয়ারি আদালতে আটজনকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন।
এতে মামলা থেকে গিয়াসউদ্দিন, তার শ্যালক জুয়েল, শাহীনকে অব্যাহতি দিয়ে সাবেক ছাত্রদল সভাপতি জাকির খান, তার দুই ভাই জিকু খান, মামুন খানসহ আটজনকে আসামি উল্লেখ করা হয়। মামলার প্রধান আসামি গিয়াসউদ্দিনকে মামলা থেকে বাদ দেয়ায় মামলার বাদী তৈমুর আলম খন্দকার সিআইডির দেয়া চার্জশিটের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২৪ জানুয়ারি আদালতে ‘না রাজি পিটিশন’ দাখিল করেন।
পিটিশনে তৈমুর আলম বলেছিলেন, গিয়াসউদ্দিনই সাব্বির হত্যাকাণ্ডের মূল নায়ক। গিয়াসউদ্দিন ও তার সহযোগীদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা গোঁজামিলের চার্জশিট দাখিল করেছেন। পরে আদালত মামলাটি পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন।
এরপর থেকে গেলো ৬ বছর ধরে নারায়ণগঞ্জ বিচারিক হাকিম আদালতে (ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট) মামলার শুনানি চলে। কিন্তু ২০০৭ সালের ১৮ এপ্রিল তৈমুর আলম খন্দকার যৌথবাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার এবং ২০০৮ সালের মে মাসে জামিনে মুক্তি পেলেও বিভিন্ন অজুহাতে নারাজি প্রদানে বিরত ছিলেন তৈমুর।
এর মধ্যে গেলো ১৬ ফেব্রুয়ারি সাব্বির আলম খন্দকার হত্যার মামলার অন্যতম আসামি নারায়ণগঞ্জের আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী ও সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি জাকির খানের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেয়ার মাধ্যমে ফের শুরু হয়েছে বিচারকাজ। এদিন বিএনপির চেয়ারপার্সনের সাবেক উপদেষ্টা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার সাক্ষী দিয়েছেন। সাক্ষী শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আবার অ্যাডভোকেট তৈমূরকে জেরা করেছেন। তবে এদিন জেরা শেষ হয়নি। আদালত আগামী ৬ মার্চ জেরার দিন ধার্য করেছেন।
জাকির খানের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রবিউল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, সাব্বির আলম খন্দকারের বড় ভাই অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন। এটি ২০০৩ সালের একটি হত্যা মামলা। দীর্ঘদিন পর আজ প্রথম মামলার বাদী সাক্ষী দিতে এসেছেন। আমরা জাকির খানের পক্ষে জেরা করেছি। আগামী তারিখেও আবার জেরা করা হবে।
বাবা সাব্বির আলম খন্দকার হত্যার বিচার নিয়ে তার বড় মেয়ে অ্যাডভোকেট খন্দকার ফাতেমা-তুজ-জোহরা সবনম বলেন, ২০০৩ সালে ক্লাস সেভেনে পড়তাম। তখন এতকিছু বুঝতাম না। তবে যতটুকু বুঝতাম আমার এখনও পরিষ্কারভাবে মনে আছে। আমাদের বাসার সামনে বাবাকে গুলি করা হয় সেই আওয়াজটা এখনও আমার কানে বেজে উঠে। ঠিক কয়টা বাজে গুলি করা ও কখন গুলি করা হয়েছে। আজকে ২০ বছর হয়েছে আমার বাবা মারা গেছেন। আর কতদিন আমরা বিচারের আশায় অপেক্ষা করবো। আমার মা এখন বিচারের অপেক্ষা ছেড়ে দিয়েছে। এ বিচার আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছেন তিনি।
সবনম আরও বলেন, তবে ২০ বছর মামলার প্রথম সাক্ষী হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সাক্ষী শুরু হয়েছে এটা ভালো লাগছে। এতদিন পর্যন্ত মামলাটা ঝুলে ছিল। আমরা বিচারের প্রার্থনাই করে যাচ্ছিলাম কিন্তু ২০ বছর যাবত কোনো বিচার হয়নি। যাই হোক সাক্ষী শুরু হয়েছে এটার জন্য আমি খুশি। আমি আশাবাদী আমার বাবার হত্যার উপযুক্ত শাস্তি হবে। আমার বাবা খুবই স্পষ্টভাষী ও সাহসী ছিলেন। নারায়ণগঞ্জের লোকজন তাকে টাইগার বলতো। কারণ আমার বাবার মতো সাহস আর কারো ছিল না।
সাব্বির আলমের বড় ভাই অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, আমার ভাই সাব্বির আলম খন্দকার একজন ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে সন্ত্রাসী বাহিনী যতো অপকর্ম করেছে এগুলোর বিরোধিতা করেছিল। এ হত্যা মামলায় অন্যতম আসামি জাকির খান হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়ে ৬ সপ্তাহের মধ্যে হাজির হবে বলে সে দেশত্যাগ করে পালিয়ে যান। এতদিন পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেনি। প্রকাশ্যে সে চাঁদাবাজি করছে। এ মামলার বাদী এবং সাক্ষীদের প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছে। তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম সে গ্রেপ্তার হওয়ার পর আমরা সাক্ষী দিবো।
তিনি আরও বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও এ মামলা প্রমাণের জন্য আমরা আদালতে পেশ করবো। আজ সাক্ষী দিয়ে গেলাম, পরে আবার সাক্ষী দিতে আসবো। বিভিন্ন হুমকি ধমকির পরও সাব্বির থামে নাই জাকির খানের চাঁদাবাজি, খুন, মাদক, ঝুট সন্ত্রাস এগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলেছিল। আমি সন্ত্রাসীদের সর্বোচ্চ সাজা চাই।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) আব্দুর রহিম গণমাধ্যমকে বলেন, বর্তমান সরকার সন্ত্রাস চাঁদাবাজ জুট সন্ত্রাসী এ ধরনের মামলাগুলোর ব্যাপারে জিরো ট্রলারেন্স। সে প্রেক্ষিতে সাব্বির আলম হত্যাকাণ্ডের বিচারকাজ সম্পন্ন করার রক্ষ্যে সাক্ষীগ্রহণ শুরু হয়েছে। এতদিন বাদী সাক্ষী দিতে না আসার কারণে বিচার কাজ বন্ধ ছিল। যেহেতু সাক্ষী শুরু হয়েছে সাক্ষীর পরিমাণ অনেক বেশি। আশা রাখি দ্রুতই মামলার বিচার কাজ শেষ হবে।
আইন-বিচার
প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ স্থগিত নিয়ে যা বললেন গণশিক্ষা সচিব
সদ্য অনুষ্ঠিত ঢাকা ও চট্টগ্রামের প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক নিয়োগের ভাইভা পরীক্ষা প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে বিষয়টি তদন্তেরও নির্দেশ দেয়া হয়। এতে অপেক্ষায় থাকা ৪৬ হাজার ভাইভা পরীক্ষার্থীদের আপাতত কোনো বার্তা দিতে পারছে না প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এ অবস্থায় স্থগিত হওয়া ভাইভা আদৌ হবে নাকি নিয়োগ প্রক্রিয়াটি বাতিল হবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, হাইকোর্টের রায়ে কপি এখনো পাইনি। রায়ের কপি পাওয়ার পর পরবর্তী করণীয় ঠিক করবো। কারণ রায়ে নানা ধরনের পর্যবেক্ষণ দিয়ে থাকে। সেটা না দেখে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত হবে না।
সচিব বলেন, আমরা আদালতের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আদালতের রায়ে যদি পরীক্ষা স্থগিতের কথা বলা হয়, তাহলে পরীক্ষা স্থগিত থাকবে। আর যদি অন্য কিছু বলে তাহলে সেভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ বিষয়েও এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা আগে রায়ের কপি দেখবো। এরপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো
এর আগে গেলো মঙ্গলবার রায়ের পর গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব জানিয়েছিলেন, এ রায়ের পর করণীয় ঠিক করতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয়ের আইন শাখার কর্মকর্তাদের জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। বুধবার বা বৃহস্পতিবার এ বৈঠক হতে পারে। বৈঠকে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তার মধ্যে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা বলা হবে। আপিলে যদি হাইকোর্টের রায় বাতিল হয় তাহলে ভাইভা নিতে কোনো সমস্যা থাকবে না। এরমধ্যে রায়ের কপি না পাওয়ায় সেই বৈঠকটি হয়নি।
মঙ্গলবার (২৮ মে) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের (তিন পার্বত্য জেলা বাদে) এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ভাইভা স্থগিত রাখার আদেশ দেন। একইসঙ্গে প্রশ্নফাঁস হয়েছে কি না তা তদন্ত করার নির্দেশ দেন।
রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস হয়েছিল। আর এই ফাঁস হওয়া প্রশ্নে অনেকে পরীক্ষা দিয়েছেন। ইতোমধ্যে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার ফলও প্রকাশিত হয়েছে। এ কারণে প্রকাশিত ফল নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার ঘটনার তদন্ত ও পরীক্ষা প্রক্রিয়া স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন ঢাকা ও চট্টগ্রামের কয়েকজন পরীক্ষার্থী।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরাধীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রাজস্ব খাতভুক্ত সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের (ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ) লিখিত পরীক্ষা গত ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন ২১ জেলায় (ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর ২১ এপ্রিল লিখিত পরীক্ষা ফল প্রকাশ করা হয়। এতে ২৩ হাজারে কিছু বেশি প্রার্থীকে উত্তীর্ণ দেখানো হয়। কিন্তু কারিগরি ত্রুটি দেখিয়ে একদিন পর ২২ এপ্রিল সংশোধিত ফল প্রকাশ করা হয়। এতে ৪৬ হাজার ১৯৯ জন প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। সেই প্রার্থীদের ভাইভা নেয়ার প্রস্তুতি শুরু করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
টিআর/
আইন-বিচার
মেয়াদ বাড়ল এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের শেয়ার হস্তান্তরে স্থিতাবস্থার
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির শেয়ার চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের কাছে হস্তান্তরে আপাতত স্থিতাবস্থাই থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। দেনা-পাওনা নিয়ে থাই ও চায়না কোম্পানির বিরোধ সিঙ্গাপুরের আরবিট্রেশন সেন্টারে প্রথম মিটিং হওয়া পর্যন্ত এই স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৮ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে ইতালিয়ান থাই কোম্পানির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন, শেখ মোহাম্মদ মোরসেদ, ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ ফারুক। চায়না কোম্পানির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী, ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান।
এর আগে গেলো ১৬ মে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির শেয়ার চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের কাছে হস্তান্তরের ওপর দুই সপ্তাহের স্থিতাবস্থা জারি করেন আপিল বিভাগ।
সেদিন আইনজীবী ব্যারিস্টার মেহেদী হাছান চৌধুরী বলেছিলেন, চায়না ব্যাংক অব এক্সিম জানিয়ে দিয়েছে শেয়ার হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত তারা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজে টাকা দেবেন না। এর ফলে আপাতত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকবে।
গেলো ১২ মে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির শেয়ার চীনের সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন লিমিটেডের কাছে হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞার আদেশ তুলে নেন হাইকোর্ট। এর ফলে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে থাইল্যান্ডের ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির শেয়ার চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের কাছে হস্তান্তর করতে বাধা কেটে যায়।
বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধরীর হাইকোর্টের একক কোম্পানি বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
সেদিন ব্যারিস্টার মেহেদী হাছান চৌধুরী বলেন, আদেশে আদালত বলেছেন, দেনা-পাওনা নিয়ে থাই ও চায়না কোম্পানির বিরোধ সিঙ্গাপুরের আরবিট্রেশন আদালত নিষ্পত্তি করবেন।
পরে এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে ইতালিয়ান থাই কোম্পানি।
এর আগে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির শেয়ার চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের কাছে হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।
হঠাৎ করেই শ্রমিকশূন্য ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে মগবাজার অংশ। নেই কোনো নির্মাণযজ্ঞ। পড়ে আছে এক্সপ্রেসওয়ের কাঠামো। কথা ছিল চলতি বছরই শেষ হবে অগ্রাধিকারমূলক উন্নয়ন প্রকল্প ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ে। এই সময় কাজ চলার কথা দ্রুতগতিতে। জানা যায় তিন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দ্বন্দ্বে এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ বন্ধ।
তিন বিদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে বন্ধ আছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ। থাইল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইতালিয়ান-থাই কিস্তির টাকা দিতে না পারায় তাদের শেয়ার দাবি করে চীনা প্রতিষ্ঠান। এই নিয়ে সিঙ্গাপুরে আরবিট্রেশন চলা অবস্থায় সরকারের অগ্রাধিকারে থাকা গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্প নিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্বন্দ্ব গড়ায় আদালত পর্যন্ত। সেই সঙ্গে ঋণ সহায়তা বন্ধ করে দেয় দুটি চীনা ব্যাংক।
থাইল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইতালিয়ান-থাই, চীনের শ্যানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ এবং সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড মিলে করছিল এক্সপ্রেসওয়ের কাজ। এই কাজে তিন প্রতিষ্ঠান শেয়ার যথাক্রমে ৫১, ৩৪ ও ১৫ শতাংশ। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ হলো এক্সপ্রেসওয়ের নির্বাহী প্রতিষ্ঠান।
প্রকল্পের চুক্তি অনুযায়ী নির্মাণ ব্যয়ের ৭৩ শতাংশের জোগান দেবে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। আর ২৭ শতাংশ দেবে বাংলাদেশ সরকার।
এসি//
আইন-বিচার
ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহীসহ চারজনের রিমান্ড নামঞ্জুর
পৃথক দুই মামলায় ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিমিন রহমানসহ চারজনের রিমান্ড ও জামিন বাতিলের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (২৯ মে) দুপুরে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রশিদুল আলমের আদালত এই আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন গুলশান থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার সাব-ইন্সপেক্টর শাহ আলম।
গেলো ২২ ফেব্রুয়ারি ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত লতিফুর রহমানের মেয়ে শাযরেহ হক বাদী হয়ে গুলশান থানায় পৃথক তিন মামলা করেন। মামলায় ট্রান্সকম গ্রুপের ১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ, সম্পত্তি দখল ও অবৈধভাবে কোম্পানির শেয়ার হস্তান্তর করার অভিযোগ আনা হয়।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ট্রান্সকম গ্রুপের হেড অব ট্রান্সফরমেশন যারেফ আয়াত হোসেনে, প্রতিষ্ঠানটির আইন উপদেষ্টা ফখরুজ্জামান ভূঁইয়া এবং করপোরেট ফাইন্যান্সের পরিচালক মো. কামরুল হাসান।
এই চার আসামির উপস্থিতিতে গুলশান ও বনানীর পৃথক দুই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জামিন বাতিল চেয়ে প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। এ সময় সিনিয়র আইনজীবী কাজী নজিবুল্যাহ হিরু, ঢাকা বারের সভাপতি আব্দুর রহমান রহমান, সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান মামুন ও শাহিনুর রহমানসহ আসামিদের পক্ষের আইনজীবীরা তাদের রিমান্ড আবেদন বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন।
বাদীপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবুসহ আরও অনেকেই রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করে জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের জামিন বাতিল করেন এবং রিমান্ডের আবেদন নামঞ্জুর করেন।
টিআর/
-
বাংলাদেশ2 days ago
জবির মসজিদে মধ্যরাতে ছাত্রী, ইমামকে অব্যাহতি
-
টুকিটাকি7 days ago
কাউন্সিলিংয়ের নামে ছাত্রকে ৩০ বার ধর্ষণ
-
বলিউড3 days ago
আব্রামের যোগাযোগ বাড়াতে করিনাকে অভিনব প্রস্তাব শাহরুখের
-
ঢালিউড3 days ago
গোপনে রাজ-বুবলীর বিয়ে!
-
জাতীয়6 days ago
পুড়ে যাওয়া বঙ্গবাজার আসছে নতুনরূপে
-
অপরাধ5 days ago
চামড়া ছাড়িয়ে ৮০ টুকরো করা হয় এমপি আজীমের দেহ
-
আবহাওয়া2 days ago
‘রেমাল’ শেষে আবারও দুঃসংবাদ দিলো আবহাওয়া অফিস
-
বাংলাদেশ7 days ago
এমপি আজিম হত্যা: ট্যাক্সি চালককে আটক করেছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন