বাংলাদেশ
হাওরে পানি ঢুকছে, ক্ষতি হতে পারে ৩০০ হেক্টর ধান
সুনামগঞ্জে আবারো ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে ৩০০ হেক্টর বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। গেলো রোববার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় দিরাইয়ে হুরামন্দিরা হাওরের ৪২ নম্বর পিআইসি বাঁধের সাতবিলা রেগুলেটর সংলগ্ন অংশ ভেঙে গেছে। এতে হাওরে পানি ঢোকা শুরু করে।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, দিরাইয়ে হুরামন্দিরা হাওরে ১০০০ হেক্টর জমি রয়েছে। এখন পর্যন্ত ৭০০ হেক্টরের বোরো ধান কেটেছেন কৃষক। সন্ধ্যায় বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ৩০০ হেক্টর জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে স্থানীয়রা বলছেন, হাওরে জমির পরিমাণ আরও বেশি। কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্য সঠিক নয়। বাঁধ ভাঙার ফলে ৩০০ হেক্টরের বেশি জমি তলিয়ে যেতে পাবে।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানান, দিরাইয়ে হুরামন্দিরা হাওরে ১০০০ হেক্টর জমি রয়েছে। রোববার পর্যন্ত হাওরের ৭০ ভাগ ধান কেটেছেন কৃষক।
এদিকে রোববার বিকেল ৪টার দিকে তাহিরপুরে টাঙ্গুয়ার হাওরের ২৭ নং পিআইসি ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে বর্ধিত গুরমা হাওরে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে ওই হাওরের প্রায় ৬০ হেক্টর ফসলি জমি ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর আগে সকাল ৮টায় ওয়াচ টাওয়ার-সংলগ্ন বাঁধের ওপর দিয়েও গুরমা হাওরে পানি প্রবেশ শুরু করে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টাঙ্গুয়ার হাওরের ২৭ নং পিআইসি ফসল রক্ষা বাঁধে ফাটল দেখা দেয়ায় স্থানীয় কৃষক ও প্রশাসন কাজ করছিল কয়েক দিন ধরে। তবে টাওয়ার-সংলগ্ন হাওর সংরক্ষিত এলাকা হওয়ায় উপচে পানি ঢোকা অংশে বাঁধ নির্মাণে বিধিনিষেধ ছিল। তাই এই অংশে বাঁধ নির্মাণ করেনি প্রশাসন। তবে পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায়
রোববার সকাল থেকে ওয়াচ টাওয়ার-সংলগ্ন কান্ধা (প্রাকৃতিকভাবে থাকা উঁচু রাস্তা) দিয়ে বর্ধিত গুরমা হাওরে পানি ঢোকা শুরু হয়। এরপর বিকেল ৪টার সময় নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে ২৭ নং ফসল রক্ষা বাঁধের মূল অংশ গাছসহ ভেঙে যায়।
জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জের নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সবকটি বাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই আজ রাতে ফসল রক্ষা বাঁধগুলোতে পাহারা দেয়ার জন্য সবাইকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
তাসনিয়া রহমান
জাতীয়
ড. ওয়াজেদ মিয়া ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস
বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া তার কর্মের জন্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে বেঁচে থাকবেন। বললেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার পঞ্চদশ মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষ্যে দেয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ড. ওয়াজেদ মিয়া ১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রংপুরের পীরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ডাক নাম ছিলো সুধা মিয়া। অসাধারণ মেধার অধিকারী সুধা মিয়া শৈশব থেকেই ছিলেন শিক্ষানুরাগী, যার প্রতিফলন ঘটে তাঁর শিক্ষা ও কর্ম জীবনে। তিনি ছিলেন দেশে আণবিক গবেষণার পথিকৃৎ। পরমাণু গবেষণায় তিনি উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে গেছেন এবং বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন পদে দক্ষতা ও সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর গবেষণা কর্মের পরিধি ছিলো অত্যন্ত ব্যাপক। তিনি ফান্ডামেন্টাল ইন্টার্যাকশন এন্ড পার্টিকেল ফিজিক্স, নিউক্লিয়ার এন্ড রিঅ্যাকটর ফিজিক্স, সলিড স্ট্যাট ফিজিক্স প্রভৃতি ক্ষেত্রে গবেষণা করেন।
মোঃ সাহাবুদ্দিন উল্লেখ করেন, ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বাংলাদেশ আণবিক শক্তি বিজ্ঞানী সংঘের দু’বার সাধারণ সম্পাদক ও পাঁচবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ পদার্থবিজ্ঞানী সমিতি, বাংলাদেশ বিজ্ঞান উন্নয়ন সমিতি, বাংলাদেশ বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞানজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৯৭ সালে তারই পরামর্শ ও পৃষ্ঠপোষকতায় জাতীয় সমন্বিত উন্নয়ন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। ড. ওয়াজেদ মিয়া তাঁর কর্মের জন্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে বেঁচে থাকবেন। বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠনে ড. ওয়াজেদ মিয়ার আদর্শ নতুন প্রজন্মের জন্য পাথেয় হয়ে থাকবে।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ড. ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণার পাশাপাশি জাতীয় রাজনীতিতে নীরবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে গেছেন। ষাটের দশকে তিনি ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত হন। ১৯৬২ সালে আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি গ্রেপ্তার হন এবং কিছুদিন জেলে কাটান।
১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে তিনি বঙ্গবন্ধু পরিবারের পাশে থেকে তাদের সাহস ও শক্তি যুগিয়েছেন।
ক্ষমতার কাছে অবস্থান করলেও ড. ওয়াজেদ ছিলেন নির্লোভ, নির্মোহ ও নিভৃতচারী একজন সহজ-সরল মানুষ। এ কর্মবীর বিজ্ঞানী ২০০৯ সালের ৯ মে মৃত্যুবরণ করেন। রাষ্ট্রপতি তার রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।
অপরাধ
মিল্টন সমাদ্দারের রিমান্ড শেষ, নেয়া হবে আদালতে
রিমান্ড শেষ মানবতার সেবক হিসেবে পরিচিত ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারের। বৃহস্পতিবার (৯ মে) তাকে কোর্টে উপস্থাপন করা হবে। রিমান্ডে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে দুপুর ১২টার দিকে বিস্তারিত জানাবেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
গেলো ৫ মে রাজধানীর মিরপুর থানায় দায়ের করা মানবপাচার আইনের এক মামলায় চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারকে চার দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এদিন বিকালে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শান্তা আক্তারের আদালত এ আদেশ দেন।
এর আগে মৃত্যুসনদ জালিয়াতির অভিযোগে মিরপুর মডেল থানায় দায়ের হওয়া মামলায় তিন দিনের রিমান্ড শেষে মিল্টন সমাদ্দারকে আদালতে হাজির করেন তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর জোনাল টিমের সাব-ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ কামাল হোসেন। এরপর তাকে মানবপাচার আইনের মামলায় গ্রেপ্রতার দেখানোসহ সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক শিকদার মাইতুল আলম।
গেলো ১ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ডিবি পুলিশের একটি দল রাজধানীর মিরপুর থেকে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করে। মিল্টন সমাদ্দার মানবতার সেবক হিসেবে পরিচিত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার সেবামূলক কর্মকাণ্ডের রয়েছে ব্যাপক প্রচারণা। যেখানে দেখা যায়, অসহায়-দুস্থ মানুষের সেবায় তিনি গড়ে তুলেন ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামের একটি বৃদ্ধাশ্রম। রাস্তা থেকে অসুস্থ ও ভবঘুরেদের কুড়িয়ে ওই বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় দিতেন।
তবে মানবিকতার আড়ালে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে ওঠে প্রতারণার তীব্র অভিযোগ। বিশেষ করে তিনি অসহায় মানুষকে আশ্রয় দেয়ার নামে তাদের কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেটে বিক্রি করতেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়ে গেলো ২৫ এপ্রিল দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে খবর প্রকাশ পায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর দক্ষিণ পাইকপাড়ায় মিল্টন সমাদ্দারের বৃদ্ধাশ্রমের কাছেই বায়তুল সালাম জামে মসজিদ। বৃদ্ধাশ্রমে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের একসময় এই মসজিদেই বিনামূল্যে গোসল করানো হতো। তার মানবিক কাজে উদ্বুদ্ধ হয়ে মসজিদ কর্তৃপক্ষ তাকে এই সুবিধা দিয়েছিল। তবে গোসল করানোর সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা প্রায় প্রতিটি মরদেহের বিভিন্ন স্থানে কাটাছেঁড়ার দাগ শনাক্ত করেন।
মিল্টন সমাদ্দারকে দীর্ঘদিন ধরে চেনেন স্থানীয় একটি মাদ্রাসার পরিচালক তোফাজ্জল হোসেন। তিনি ওই গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মিল্টন এক সময় বাসা ভাড়া দিতে পারতেন না। এখন তিনি এগুলো করে কোটি কোটি টাকার মালিক। দামি গাড়িতে চড়েন। আড়ালে মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চুরি করেন। আমাদের বায়তুল সালাম মসজিদে মরদেহ ফ্রি গোসল করিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিছু মরদেহ গোসল করানোর পর দেখা যায়, সবগুলোর শরীরে কাটা দাগ। এ বিষয়ে মিল্টনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি মরদেহ পাঠানো বন্ধ করে দেন।’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মানুষের কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেটে বিক্রির মতো ভয়ংকর অপকর্মের পাশাপাশি বহু অভিযোগ রয়েছে মিল্টনের বিরুদ্ধে।
এসি//
জাতীয়
দেশবরেণ্য পরমাণু বিজ্ঞানী ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী আজ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ও দেশবরেণ্য পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার (৯ মে)।
বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী বিজ্ঞানী ওয়াজেদ মিয়া ১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি লালদিঘীর ফতেহপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০০৯ সালের ৯ মে ইন্তেকাল করেন।
ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ রংপুর মহানগরীতে, পীরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন, ড. ওয়াজেদ মিয়ার পরিবার, উপজেলা আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন সংগঠন, ড. ওয়াজেদ স্মৃতি সংসদ ও ড. ওয়াজেদ ফাউন্ডেশান ফাতিহা পাঠ, কবর জিয়ারত, মিলাদ মাহফিল ও গরীবদের মাঝে খাবার বিতরণসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে কর্মসূচির আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জামাতা এম এ ওয়াজেদ মিয়া বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি তার সমগ্র কর্মজীবনে মেধা, মনন ও সৃজনশীলতা দিয়ে দেশ, জাতি ও জনগণের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। পিতা মরহুম আব্দুল কাদের মিয়া ও মাতা মরহুমা ময়জুন নেসার চার পুত্র ও তিন কন্যার মধ্যে তিনি ছিলেন সর্ব-কনিষ্ঠ।
গ্রামের প্রাইমারি বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণি ও পীরগঞ্জ থানার হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন শেষে তিনি ১৯৫২ সালে রংপুর শহরের সরকারি জেলা স্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি হন। ১৯৫৬ সালে এই স্কুল থেকে ডিস্টিংশনসহ ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন।
১৯৫৮ সালে তিনি রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। ১৯৬১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় এবং ১৯৬২ সালে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি ফজলুল হক হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন এবং ছাত্রলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ১৯৬১-’৬২ শিক্ষা বছরের জন্য হল ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনে গ্রেপ্তার বরণ করেন। ১৯৬৩ সালের ১ এপ্রিল তিনি তৎকালীন পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনের চাকরিতে যোগ দেন। ১৯৬৩-’৬৪ শিক্ষা বছরে তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ‘ডিপ্লোমা অব ইম্পেরিয়াল কলেজ কোর্স’ সম্পন্ন করেন। ১৯৬৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাজ্যের ‘ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়’ থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করলে, তাকে ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে ঢাকার আণবিক শক্তি গবেষণা কেন্দ্রে পদায়ন করা হয়।
আজন্ম সৎ, নির্লোভ ও নিখাদ দেশপ্রেমিক এই পরমাণু বিজ্ঞানী ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
১৯৬৯ সালে ইতালির ট্রিয়েস্টের আন্তর্জাতিক তাত্ত্বিক পদার্থ বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র তাকে এসোসিয়েটশিপ প্রদান করে। তিনি ওই গবেষণা কেন্দ্রে গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৬৯ সালের নভেম্বর থেকে ১৯৭০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন শহরের ড্যারেসবেরি নিউক্লিয়ার ল্যাবরেটরিতে পোস্ট ডক্টোরাল গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন।
১৯৭৫ সালের ১২ মার্চ থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত তিনি তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির কার্লসরবয়ে শহরের ‘আণবিক গবেষণা কেন্দ্রে’ আণবিক রিঅ্যাক্টর বিজ্ঞানে উচ্চতর প্রশিক্ষণ লাভ করেন। ১৯৭৫ সালের ১ অক্টোবর থেকে ১৯৮২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিনি ভারতের আণবিক শক্তি কমিশনের দিল্লির ল্যাবরেটরিতে গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি অনেক জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান বিষয়ক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। তাঁর অনেক গবেষণামূলক ও বিজ্ঞান বিষয়ক প্রবন্ধ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পত্রপত্রিকায় এবং সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকান্ডের পর দীর্ঘ সাত বছর নির্বাসিত জীবন কাটান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের পদার্থ বিজ্ঞান, ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান ও প্রকৌশলের ছাত্রদের জন্য দু’টি গ্রন্থ রচনা করেন।
তাঁর লেখা ৪৬৪ পৃষ্ঠার ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ঘিরে কিছু ঘটনা ও বাংলাদেশ’ শিরোনামের গ্রন্থটি ১৯৯৩ সালের জানুয়ারিতে এবং ৩২০ পৃষ্ঠার ‘বাংলাদেশের রাজনীতি ও সরকারের চালচিত্র’ শিরোনামের গ্রন্থটি ১৯৯৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিপ্রেস লিমিটেড থেকে প্রকাশিত হয়।
১৯৭২ ও ১৯৭৩ সালের জন্য তিনি পর পর দু’বার বাংলাদেশ আণবিক শক্তি বিজ্ঞানী সংঘের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮৩, ১৯৮৪ ও ১৯৮৫ সালে তিনি পর পর তিনবার ওই বিজ্ঞানী সংঘের সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত চার বছর তিনি বাংলাদেশ পদার্থ বিজ্ঞান সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯৭ সালে দু’বছর মেয়াদের জন্য ওই বিজ্ঞান সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি বিজ্ঞান সমিতির আজীবন সদস্য ছিলেন। ১৯৮৯ সালে দ’ুবছর মেয়াদের জন্য ওই বিজ্ঞান সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন।
ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত পরপর দু’টি দু’বছর মেয়াদকালের জন্য বাংলাদেশ বিজ্ঞান উন্নয়ন সমিতির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি এবং ১৯৯৪ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি পর পর দুই দু’বছর মেয়াদকালের জন্য ওই বিজ্ঞান সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন।
এ ছাড়া তিনি ওই সমিতির একজন আজীবন সদস্য। ১৯৯১-১৯৯২ সালে তিনি বাংলাদেশ আণবিক শক্তি বিজ্ঞানী সংঘের সভাপতি নির্বাচিত হন। এছাড়া ১৯৮৯ সাল থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত পরপর তিনবার দু’বছর মেয়াদকালের জন্য তিনি ‘বাংলাদেশ বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞানজীবী সমিতি’র সভাপতি নির্বাচিত হন এবং তিনি ওই সমিতির একজন আজীবন সদস্য। তিনি ঢাকার রংপুর জেলা সমিতির আজীবন সদস্য এবং ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত দু’বছর মেয়াদকালের জন্য এই সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি বাংলাদেশ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা এবং ঢাকার বৃহত্তম রংপুর কল্যাণ সমিতি, উত্তরবঙ্গ জনকল্যাণ সমিতি, রাজশাহী বিভাগীয় উন্নয়নফোরাম, বেগম রোকেয়া স্মৃতি সংসদ ও রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার মির্জাপুর বছির উদ্দিন মহাবিদ্যালয়ের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন।
মৃত্যুর পর তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী পীরগঞ্জ উপজেলার ফতেহপুর গ্রামে তাঁর বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়।
জেএইচ
-
ঢালিউড7 days ago
‘আমার আচরণে শাকিবের পরিবার এমন সিদ্ধান্ত নেবে, বিশ্বাস করি না’
-
আন্তর্জাতিক7 days ago
যৌন সম্পর্কের বদলে দেয়া হবে বেশি নম্বর!
-
তথ্য-প্রযুক্তি6 days ago
গ্রাহকদের দাবির মুখে সিদ্ধান্ত বদলালো জিপি
-
ঢালিউড7 days ago
শাকিবের বিয়ে: পরিবারের সিদ্ধান্ত নিয়ে মুখ খুললেন অপু বিশ্বাস
-
পরামর্শ7 days ago
পুনরায় গরম করলে যে ৭ খাবার হয় ‘বিষাক্ত’
-
জাতীয়3 days ago
১০০ টাকায় সয়াবিন তেল বিক্রি করবে টিসিবি
-
বাংলাদেশ5 days ago
স্কুলে দেরিতে আসায় শিক্ষিকাকে ঘুষি মারলেন অধ্যক্ষ
-
ঢাকা3 days ago
হেলে পড়েছে ৬ তলা ভবন, দুর্ঘটনার আশঙ্কা