সিলেট
ভয়াবহ হচ্ছে সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি
ভারতের মেঘালয় থেকে আসা পাহাড়ি ঢল আর কয়েকদিন ধরে চলা ভারী বৃষ্টিপাতে ক্রমেই ভয়াবহ হচ্ছে সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি। জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে নদীরে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দ্রুত পানি বাড়ায় জেলার পৌর শহরের বিভিন্ন সড়ক, দোকান ও বাসাবাড়িতে পানি ঢুকেছে। বসতবাড়ি ও দোকানের মালামাল রক্ষায় উৎকণ্ঠায় আছে নদী তীরবর্তী বসবাসকারী মানুষজন।
বুধবার (১৯ জুন) সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪০ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে বায়ান্ন টিভিকে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার।
স্থানীয়রা জানান, গেলো ১৮ জুন রাতে ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও তেমন বৃষ্টি হয়নি। তবে ভোর থেকে একটানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের নতুন পাড়া, শান্তিবগা, ধোপাখালী, বাঁধনপাড়া, বলাকা, মোহাম্মদপুর, ষোলঘর, নবীনগর, কাজীর পয়েন্টসহ বিভিন্ন এলাকায় পানি বেড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, একতলা বা কাঁচা ঘরে থাকা মানুষজন নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন। গতকাল রাত থেকেই অনেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন। সবার চোখে মুখে ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যার আতঙ্ক। এ পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন। ঝাওয়ার হাওরের পাশে বসবাসকারী অধিকাংশ মানুষের ঘরের চাল ছুঁই ছুঁই পানি। পরিবার পরিজন নিয়ে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছেন তারা।
স্থানীয় ফরিদ মিয়া জানান, দুই দিন আগেই তাঁর ঘরে পানি উঠেছে। প্রথম দিন কাজে বের হতে না পারলেও। দ্বিতীয় দিন রিকশা নিয়ে বের হয়ে তেমন রুজি রোজগার হয়নি। মঙ্গলবার রাতেই প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয় কেন্দ্রে গেছেন। আজ তিনি দেখেন তাঁর ঘরের প্রায় চাল সমান পানি।
জেলা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ছাতক উপজেলায় সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪৬ সেমি বা ৪.৭৯ ফিট উপুর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া দিরাই উপজেলায় সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৬ সেমি বা ৬.৩০ ইঞ্চি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ১০০ মি.মি. , লাউড়ের গড়ে ৭৮ মি.মি. , ছাতকে ৮৪ মি.মি. এবং দিরাইয়ে ৭৭ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নদীর পানি কমলেও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পানি বাড়তে পারে। বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানান, তাঁরা ৫১৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছেন। যাদের প্রয়োজন তারা আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রিতদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত জেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার ও সদর উপজেলা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আই/এ
সিলেট
ফের বন্যার কবলে পড়তে পারে সিলেট-সুনামগঞ্জ
গেলো কিছুদিন বৃষ্টিপাত কম থাকায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীর পানি কমেছিল। তবে আগামী দু-দিন মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এতে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করবে। বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেও ততটা ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা নেই। জানালেন সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার।
শুক্রবার (২৮ জুন) বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বন্যার মধ্যমেয়াদি পূর্বাভাসের পর এ তথ্য জানান তিনি।
পাউবোর ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মৌসুমি বায়ু দেশের ওপর সক্রিয় ও উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। ফলে, দেশের অভ্যন্তরে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা অববাহিকার উজানের কিছু স্থানে বিভিন্ন সময়ে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে মাঝারি থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।
এর আগে, গেলো ১৬ জুন থেকে সৃষ্ট বন্যায় বিপাকে পড়েছিল সুনামগঞ্জের মানুষ। উজানের পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিপাতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছিল প্রায় ১০ লাখ মানুষ। বন্যার পানি এখন কমে গেলেও নতুন করে আবারও বন্যার পূর্বাভাসে জনমনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
টিআর/
জনদুর্ভোগ
সিলেট-সুনামগঞ্জে ফের বন্যার শঙ্কা
বৃষ্টিপাত কমায় গত কিছুদিন ধরে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীর পানি ক্রমাগতভাবে কমে বন্যা পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছিল। কিন্তু আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের অধিকাংশ জায়গায় ভারী বর্ষণে সিলেট-সুনামগঞ্জে ফের বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২৮ জুন) বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানির সমতল বাড়ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে আগামী ২৪ ঘণ্টায় মাঝারি থেকে ভারি এবং আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টায় ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে এ সময় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদী সমূহের পানিসমতল বৃদ্ধি পেতে পারে।
এ ছাড়া আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা, কুশিয়ারা, পুরাতন-সুরমা, সারিগোয়াইন নদীর পানিসমতল দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।
এদিকে, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় লঘুচাপ বিরাজ করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ বিহার, কেন্দ্রস্থল এবং বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
এ অবস্থায় রংপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণ হতে পারে।
এএম/
দেশজুড়ে
বন্যার পানিতে কৃষকের ৪৪ কোটি টাকার ক্ষতি
ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢল এবং ভারী বৃষ্টিপাতে সুনামগঞ্জে প্রায় দুই হাজার ২৬৭ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে যায়। এতে জেলার কৃষকদের ৪৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। যারা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে চাষাবাদ করেছিলেন তাদের মাথায় ঋণের বোঝা যুক্ত হয়ে দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, এ বছর জেলায় আউশ আবাদ হয়েছিল ৭ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে এবং গ্রীষ্মকালীন শাক সবজি চাষ হয়েছিল ৩ হাজার ৩শ ৭৭ হেক্টর জমিতে। এর মাঝে ১৭শ হেক্টর আউশ আবাদি জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে এবং গ্রীষ্মকালীন সবজির ৫৬৭ হেক্টর জমি নিমজ্জিত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী আউশধানের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১১ কোটি টাকা এবং গ্রীষ্মকালীন সবজির ক্ষতি হয়েছে ৩৩ কোটি টাকার।
সদর উপজেলার কৃষক মহিবুর রহমান বলেন, স্ত্রীকে দিয়ে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ধুন্দল আর পটলের চাষ করেছিলেন। অনেক ফুলও এসেছিল, যে কারণে টাকা ঋণ নিয়েছি তাতে আমি সফল হয়েছেন বলে ভেবেছিলেন। কিন্তু বন্যা তাঁর সেই ভাবনায় জল ঢেলে দিলো। এখন কিস্তি কিভাবে পরিশোধ করবো সে চিন্তা করছেন তিনি।
দোয়ারাবাজার উপজেলার ডাউকেরখারা গ্রামের কৃষক জুবায়ের আহমদ জানান, ৫ একর জমিতে ডাটা, করলা, ধুন্দল, ঝিঙ্গার চাষ করেছিলেন। পাহাড়ি ঢলে গ্রামের বাধ ভেঙে গিয়ে স্রোতের তোড়ে সব কিছু ভেসে যায়। যে জমিতে ফসল চাষ করেছিলেন সেখানে কাদা ছাড়া কিছুই নেই।
বিমল চন্দ্র সোম জানান, সুনামগঞ্জ জেলায় এ পর্যন্ত ৮ হাজার ৪০০ জন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করা হয়েছে এবং তালিকা প্রণয়নের কাজ চলমান আছে। ভবিষ্যতে সরকারি প্রণোদনার মাধ্যমে সকল ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বিভাগের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হবে।
আই/এ
-
পর্যটন2 days ago
যে কারণে কক্সবাজারে বন্ধ প্যারাসেইলিং
-
ইসলাম2 days ago
পা ছুঁয়ে সালাম করা কি ইসলামে জায়েজ?
-
অপরাধ2 days ago
যৌতুকলোভী প্রেমিকের কাছে হেরে জীবন বিসর্জন দিলেন প্রেমিকা
-
আবহাওয়া4 days ago
শুক্রবার থেকে টানা ৬ দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা
-
টুকিটাকি3 days ago
লটারিতে ৩৭ কোটি টাকা পেয়ে হার্ট অ্যাটাক, অতপর…
-
রংপুর3 days ago
চলন্ত ট্রেনের ছাদে সাপ, আতঙ্কে যাত্রীরা
-
জাতীয়3 days ago
আনলকড দরজা, ছুটতে ছুটতে আবার রানওয়েতেই ফিরলো বিমান!
-
ক্রিকেট2 days ago
বিশ্বকাপ ফাইনাল পণ্ড হলে যারা জিতবে শিরোপা