ফুটবল
বিদায় কিংবদন্তি
৭২ বছর আগেরকার কথা। ১৯৫০ সালে ঘরের মাঠের বিশ্বকাপ ফাইনালে উরুগুয়ের মুখোমুখি ব্রাজিল। ফেভারিট হিসেবে শিরোপার মঞ্চে আসা সেলেসাওরা ৪৭ মিনিটে লিড নেয়। কিন্তু ৩২ মিনিটের ব্যবধানে মারাকানার ১ লাখ ৭৩ হাজার দর্শককে স্তব্ধ করে এগিয়ে যায় উরুগুয়ে। ভাগ্যের কাছে আরও একবার পরাজিত ব্রাজিল!
বিশ্বকাপের প্রথম আসর থেকেই ফেভারিট হিসেবে খেলে আসা দলটির এই হারটা কোনোমতেই মানতে পারছিলেন না ব্রাজিলিয়ানরা। রিও ডি জেনিরোর প্রতিটি কোণায় কোণায় তখন নেমে আসে শোকের ছায়া। হারের ধাক্কাটা ব্রাজিলিয়ানদের কাছে কেমন ছিল সেটা বোঝা যায় তখনকার এক সাংবাদিকের বর্ণনায়, শহরের প্রতিটি ঘরের জানালা বন্ধ ছিল। রাস্তা দিয়ে হাঁটলে চাপা কান্নার আওয়াজ শোনা যেত। মনে হচ্ছিল, প্রত্যেক ব্রাজিলিয়ান তাদের সবচেয়ে কাছের মানুষটিকে হারিয়েছে। অনেকেই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছেন, ফুটবলের ইতিহাসে ১৬ জুলাই যেন আর কখনোই ফিরে না আসে।
হারের ধাক্কাটা কোনোমতেই নিতে পারছিলেন না দোনদিনিয়ো। ঘরের কোণে ঝোলানো যিশু খ্রিস্টের ছবির দিকে তাকিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, হায় ইশ্বর, কেন আমাদের এই শাস্তি দিলে!
বাবার দুঃখটা সেদিন খুব ছুঁয়ে গিয়েছিল দোনদিনিয়ের ৯ বছর বয়সী ছেলেকে। কিন্তু ৯ বছর বয়সী কিশোর ফুটবল বিশ্বকাপের আর কিই বা বোঝে? তবু বাবাকে সেদিন বড় মুখ করে প্রতিশ্রুতি দেয়, ‘কেঁদো না বাবা! তোমার জন্য আমি ওই বিশ্বকাপ নিয়ে আসব একদিন।’
কথা রেখেছিলেন দোনদিনিয়ের ছেলে এডসন আরান্তেস দো নাসিমেন্তো। বাবা ও দেশবাসীর স্বপ্ন পূরণে সময় নিয়েছেন মাত্র ৮ বছর। মাত্র ১৭ বছর বয়সে দেশকে প্রথমবারের মতো বিশ্বজয়ের স্বাদ পাইয়ে দিয়ে হয়েছেন অমর। বিশ্ববাসীর ভালোবাসা জিতে হয়েছেন সবার প্রিয় ‘পেলে’।
১৯৪০ সালের ২৩ অক্টোবর ব্রাজিলের ত্রেস কোরাকোয়েস শহরের এক বস্তিতে জন্ম হয় পেলের।
দরিদ্র পরিবারের প্রথম সন্তান হিসেবে অভাব অনটনটা বেশ ভালোভাবেই অনুভব করতে হয়েছে ছোটবেলা থেকে। আর তাই অভাব মেটাতে কৈশোর থেকেই কাজ শুরু করেন চায়ের দোকানে। এখানেই শেষ নয় রেলস্টেশনে ঝাড়ু দেয়া কিংবা জুতা পরিষ্কার করা, এসব কাজও তাকে করতে হয়েছে ছোটবেলাতেই।
ফুটবল প্রতিভাটা শৈশব থেকেই তার মধ্যে ছিল। তবে অভাবের কারণে তখন ফুটবল দিয়ে খেলতে পারতেন না, বন্ধুদের সঙ্গে পেলেকে খেলতে হত মোজার ভেতরে কাগজ ঠেসে বানানো ফুটবলে। কিন্তু প্রতিভা থাকলে যে শত প্রতিকূলতাকে পেছনে ফেলা যায় সেটারই জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ হলেন পেলে। গলির ফুটবলে আলো কেড়ে নজরে চলে আসতে খুব বেশি সময় লাগেনি তার। ১৫ বছর বয়সেই সান্তোসের তৎকালীন তারকা ওয়ালদেমার ডি ব্রিতোর নজরে পড়েন ফুটবল জাদুকর। ফুটবলের পেলের যাত্রা শুরু সেখান থেকেই।
১৫ বছরের কিশোরকে ব্রাজিলের নামকরা ক্লাবে সান্তোসে নিয়ে যান ব্রিতো। তাকে সুযোগ করে দেন সান্তোসের বি টিমে খেলার। জাত চেনাতে সময় লাগেনি পেলের। এক বছরের ব্যবধানে জায়গা করে নেন ক্লাবটির মূল দলে।
সান্তোসে জায়গা করেই চমক দেখান পেলে। ১৬ বছর বয়সী কিশোর নিজের অভিষেক টুর্নামেন্টে হন সর্বোচ্চ গোলদাতা। নজরকাড়া এই পারফরম্যান্স মনে ধরে যায় সবার। এমনকি দেশের সরকারেরও নজর এড়ায়নি এ পারফরম্যান্স। পেলের এই পারফরম্যান্স সরকারের কাছে অমূল্য হিসেবে বিবেচিত হলো। তাই আইন করে পেলেকে ব্রাজিলের জাতীয় সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল তখনই!
পেলের এমন অতিমানবীয় পারফরম্যান্সের গল্প খুব দ্রুতই প্রচার হয়ে যায় বিশ্বব্যাপী। ইউরোপিয়ান নামিদামি ক্লাবগুলোর তখন তাকে পাওয়ার জন্য রীতিমতো লড়াইয়ে লেগে যাবার মতো অবস্থা। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে পেলে থেকে গেলেন নিজ দেশেই। সরকারের অনুরোধ মেনে নিয়ে হাসিমুখেই খেলতে থাকলেন নিজ দেশের লিগে।
ফলাফলটা এসেছে দ্রুতই। ১৯৫৭ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে যান পেলে। প্রথম ম্যাচ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। অভিষেক ম্যাচটা ব্রাজিলের হয়ে জিততে পারেননি মহাতারকা, তবে রেকর্ড ঠিকই নিজের করে নিয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক ফুটবলে ১৬ বছর ৯ মাসে গোল করে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার রেকর্ডটা নিজের করে নিয়েছিলেন।
ব্রাজিলের জার্সিতে মোট ১৪ বছর খেলেছেন পেলে। তাতে অসংখ্য অ্যাসিস্টের পাশাপাশি ৭৭টি গোল করে নিজের ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছিলেন। দীর্ঘ ৫০ বছরেরও বেশি সময় পর পেলের সেই গোলের রেকর্ড ভেঙেছেন হালের তারকা নেইমার। অর্জনটা যে কতোটা বড় সেটা এই পরিসংখ্যান দেখেই খানিকটা আন্দাজ করা যেতে পারে।
১৯৫৮ সালে বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট ছিল ব্রাজিল। সেসময়ের জিতো, গারিঞ্চা, দিদি, ভাভাদের দিয়ে সাজানো তারকাবহুল দলে ১৭ বছর বয়সী পেলের জায়গা পাওয়াটাই ছিল বিরাট চমক। তাই শুরুতে সাইডবেঞ্চে কাটাতে হয় ফুটবলের কালো মানিককে। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে মাজ্জেলার ইনজুরির কারণে মাঠে নামানো হয় পেলেকে। সে ম্যাচে কোনো গোল না পেলেও এক অ্যাসিস্টে কোচের ভরসা জেতেন মহাতারকা।
এরপর আবার কোয়ার্টারে সুযোগ মেলে তার। সে ম্যাচে রেকর্ডগড়া গোল এল তার পা থেকে। বিশ্বকাপে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার একমাত্র গোলে সেমির মঞ্চে ব্রাজিল। গোল পাওয়ার পরই যেন পুরো মোড় ঘুরে গেল পেলের ক্যারিয়ারে। এরপর তিনি হয়ে উঠলেন অদম্য, অপ্রতিরোধ্য।
সেমিফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক ১৭ বছর বয়সী পেলের। বিশ্বকাপের ইতিহাসে তখন সর্বকনিষ্ঠ হ্যাটট্রিকম্যান বনে গেলেন তো বটেই, ছড়ালেন বিস্ময়ও। এখানেই থামেননি পেলে, ১৭ বছর বয়সী তরুণ ফাইনালেও দুই গোল করে ব্রাজিলকে জেতালেন বিশ্বসেরার শিরোপা। রাখলেন বাবাকে দেয়া তার সেই প্রতিশ্রুতি। স্বাভাবিকভাবেই সে বিশ্বকাপের সিলভার বল ও সিলভার বুট দুটো পুরষ্কার জেতেন পেলে। তবে যে নাম এবং সম্মান তিনি জিতেছিলেন, সেটা কোনো পুরষ্কারে পরিমাপ করা সম্ভব নয়।
ইনজুরির কারণে ১৯৬২ সালের বিশ্বকাপটা তেমন ভালো কাটেনি পেলের। তৎকালীন সেরা খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ শুরু করে প্রথম ম্যাচটা খেলেছিলেন সেরার মতোই। চিলির বিপক্ষে ম্যাচে এক গোল ও এক অ্যাসিস্ট। তবে পরের ম্যাচেই চেকশ্লোভাকিয়ার বিপক্ষে খেলতে নেমে ইনজুরিতে তিনি। এরপর খেলতে পারেননি টুর্নামেন্টের আর একটি ম্যাচেও। তবু পেলের দেখানো পথেই আবারও বিশ্বকাপটা নিজেদের করে নেয় ব্রাজিল।
১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপেও ইনজুরির থাবা। প্রথম ম্যাচে বুলগেরিয়ার বিপক্ষে গোল পাওয়ার পর ইনজুরিতে পড়েন মহাতারকা। নামতে পারেননি পরের ম্যাচে। পর্তুগালের বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচে দলের প্রয়োজনে ইঞ্জুরড পেলেকে নামানো হলে অসংখ্য ফাউলের শিকার হন তিনি। ব্রাজিল হেরে গিয়ে গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পড়ে যায়। রাগে ক্ষোভে জাতীয় দল থেকে অবসরের ঘোষণাও দিয়ে ফেলেন পেলে। কিন্তু এখানেই যে ‘হ্যাপি এন্ডিং’ না সেটা জানা যায় তিন বছর পর।
জাতীয় দলে কিছুটা বিরতি দিয়ে ১৯৬৯ সালে আবার দেশের হয়ে খেলতে নামেন পেলে। বাছাইপর্বের ৬ ম্যাচে করেন ৬ গোল। এরপরই এসে পড়ে পেলের শেষ বিশ্বকাপ। ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপে পেলেকে খেলানো হয় প্লে মেকার হিসেবে। এ কারণে তার পা থেকে আসে চারটা গোল। তবে নিজে খুব বেশি গোল না করলেও গোল করিয়েছেন ৭টা। তাতে টুর্নামেন্টের সেরা পুরষ্কারটা নিজের করে নেয়ার পাশাপাশি দেশের হয়ে জিতে ফেলেন তৃতীয় বিশ্বকাপ ট্রফি। জুলে রিমে ট্রফি হয়ে যায় আজীবনের জন্য ব্রাজিলের।
মাত্র ২৯ বছরে তিনটা বিশ্বকাপের মালিক হন পেলে। বিশ্বকাপের ৯২ বছরের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত এ রেকর্ড ভাঙতে পারেনি বিশ্বের কোনো ফুটবলার। নিকট অতীতেও তা সম্ভব কিনা সেটা নিয়েও আছে সন্দেহ!
ফুটবলটা যেন তার কাছে শিল্পীর রঙ তুলির মতো। এই বল দিয়েই পুরো ক্যারিয়ারটা শিল্প কর্ম করে গেছেন ব্রাজিলিয়ান নাসিমেন্তো। ২০০০ সালে আইএফএফএইচএস (International Federation of Football History & Statistics) এর তত্ত্বাবধানে সাবেক খেলোয়াড় আর সাংবাদিকদের ভোটে বিংশ শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড় নির্বাচন করা হয়। তাতে ১৭০৫ ভোট পেয়ে সেরা হন পেলে, দ্বিতীয় হওয়া ইয়োহান ক্রুইফের সঙ্গে তার ব্যবধানটা ছিল ৪০২ ভোটের।
ফুটবল ইতিহাসে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় কে, এটা নিয়ে আছে বিভিন্ন তর্ক বিতর্ক। তবে বিশ্বকাপের ইতিহাসে যে পেলেই সেরা এটা মানেন সবাই। কারণ মাত্র ২৯ বছরে বিশ্বকাপের চার আসর খেলে চারটাতেই গোল করা এবং তিনটিতে শিরোপা ছিনিয়ে নেয়া বিশ্বকাপের ইতিহাসেই বিরল এক ঘটনা হয়ে থাকবে শতাব্দীর পর শতাব্দী।
ফুটবলে পেলের অবদান একটা ঘটনা থেকে সহজেই জানা যায়। পেলের সময়কালে ইউরোপিয়ান নন এমন খেলোয়াড়দের ব্যালন ডি অর পুরষ্কার দেয়া হতো না। তবে ২০১৬ সালে অদ্ভুত এক কান্ড করে বসে পুরষ্কার কমিটি। ১৯৯৫ সালের আগ পর্যন্ত ইউরোপের বাইরের খেলোয়াড়দের বিবেচনায় এনে পুরষ্কারের একটি তালিকা করে ব্যালন ডি অর কমিটি। সেখানে ১৯৫৮ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত মোট ৭ বার ব্যালন বিজয়ী ঘোষণা করা হয় পেলেকে, যা এখন পর্যন্ত ফুটবল ইতিহাসের সর্বোচ্চ ব্যালন ডি অর জয়ী লিওনেল মেসির সমান।
মাঠের ফুটবলে পেলে যেমন দ্যুতি ছড়িয়েছেন, মাঠের বাইরেও তার আলো পেয়েছে গোটা বিশ্ব। ১৯৬৭ সালে নাইজেরিয়ায় গৃহযুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছিলেন ফুটবলের এই কিংবদন্তি। সেসময় শুধু পেলেকে দেখার জন্য ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল গৃহযুদ্ধে জড়িত দলগুলো। ফুটবলের বাইরে টিভির পর্দাতেও ছিলেন পেলে। বিভিন্ন টিভি অনুষ্ঠানে নিয়মিতভাবে অতিথি হওয়ার পাশাপাশি সিনেমা ও টেলিভিশন ধারাবাহিকেও কাজ করেছেন তিনি। হলিউডের সিনেমা এসকেপ টু ভিক্টোরিতে এক যুদ্ধবন্দীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
মানুষ পেলেও যেন ছিলেন সবার আপন। অভাব অনটনে বড় হওয়া পেলে খেলোয়াড় থাকা অবস্থায়ই দরিদ্র শিশুদের জন্য গড়েন ফাউন্ডেশন। এরপর ইউনিসেফ ও জাতিসংঘের দূতও হয়েছেন তিনি। পেলেকে সম্মান জানাতে ২০০১ সালে ব্রাজিল ফুটবলে দুর্নীতির বিচার করতে পেলে ল নামে একটি আইন চালু হয়। ১৯৯৯ সালে নিউ ইয়র্কের টাইম ম্যাগাজিন প্রকাশিত বিংশ শতাব্দীর সেরা ১০০ জন মানুষের তালিকায় ছিলেন পেলে।
জীবনের সবটুকু নির্যাস উপভোগ করে শেষ বয়সে এসে ক্যান্সারে আক্রান্ত হন পেলে। তবে মরণব্যধির সঙ্গেও লড়াইটা কম করেননি। অবশেষে হার মানলেন ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর। তবে পেলে ধরার মায়া ত্যাগ করলেও ‘মৃত্যু’ হয়নি তার।
কারণ ভক্তদের হৃদয়ে তো অনেক আগেই অমরত্ব গড়ে নিয়েছেন তিনি। আর শতাব্দীর পর শতাব্দী মনে রাখার মতো অর্জন কুড়িয়ে নেয়া এমন তারকাদের কি কখনো মৃত্যু হয়? তাই পেলে না থেকেও ধরার বুকে থাকবেন চিরকাল।
ফুটবল
মাদ্রিদ স্কোয়াডের প্রতিফলন হোসেলু, মন্তব্য আনচেলত্তির
হোসেলুর কাছে স্বপ্নের মতো এক রাত কেটেছে। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে মাঠে নেমেছেন ৮১ মিনিটে। তখন বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ১ গোলে পিছিয়ে মাদ্রিদ। সেখান থেকে ৮৮ মিনিটে সমতা, এরপর আরও এক গোলে দলের জয়- হোসেলুর কাছে স্বপ্নের চেয়েও বেশি কিছু মনে হওয়ার কথা। স্পেনের এই ফুটবলারকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তি।
হোসেলুর জন্য একেবারেই সহজ ছিল না। যেখানে বেশিরভাগ সময় বেঞ্চেই বসে থাকতে হয়েছে তাকে। তবে এমন এক মুহূর্ত জানান দিতে যতটুকু প্রতিজ্ঞা থাকতে হয়, নিজের মধ্যে তা লালন করেন এই স্প্যানিশ ফরোওয়ার্ড।
চলতি মৌসুমে এস্পানিওল থেকে লোনে মাদ্রিদে এসেছেন। নানা ক্লাবে ঘোরাঘুরি করছিলেন। তবে নিজের ভেতরে মাদ্রিদের জৌলুস ঠিকই অনুভব করেন তিনি। আর নিজেকে আরও বেশি প্রকাশ করতে এমন কিছু দরকার ছিল হোসেলুর জন্য।
মাদ্রিদের ইতালিয়ান কোচ আনচেলত্তি হোসেলু সম্পর্কে বলেন, “ সে একজন চমৎকার প্রতিফলন। কারণ এই মৌসুমে খেলোয়াড় হিসেবে অনেক বেশি অবদান রেখেছেন তিনি। যদিও খুব বেশি মিনিট তিনি খেলেননি।“
স্কোয়াডের প্রতিফলন হিসেবে হোসেলুকে উল্লেখ করেছেন আনচেলত্তি। বেঞ্চে থাকলে সাধারণত আত্মবিশ্বাসে ছেদ পড়ার কথা। তবে হোসেলুর ক্ষেত্রে তেমনটি ঘটেনি। মাদ্রিদ কোচ মনে করেন, এই স্প্যানিশের আরও অনেক কিছু দেওয়ার রয়েছে।
এম/এইচ
ফুটবল
ভুল স্বীকার করেছে লাইনসম্যান, দাবি ডি লিটের
বায়ার্ন মিউনিখ ডিফেন্ডার ম্যাথিয়াস ডি লিটের কাছে ভুল স্বীকার করেছেন লাইনসম্যান। এমন এক দাবি করেছেন তিনি। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে বুধবার রাতের ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরেছে বায়ার্ন। এই জয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল নিশ্চিত করে মাদ্রিদ।
ফিরতি লেগে সুযোগ ছিল দুই দলের জন্য। তবে ফলাফল যখন প্রকাশিত হয়েছে, তখন জয় দেখা গেল মাদ্রিদের পক্ষে। ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতে দুই লেগ মিলে ৪-৩ এর ব্যবধান গড়ে তোলে মাদ্রিদ। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজেদের আধিপত্যের জানান আবারও দিয়েছে এই স্প্যানিশ ক্লাবটি।
বিতর্কের জন্ম দিয়েছে যোগ করা ১৩ মিনিটের খেলা। যেখানে মুলারের হেড থেকে করা এক পাসে ডি লিট গোল করে বসেন। মূলত জশুয়া কিমিখের এক বাড়ানো শটে মুলার ও ডি লিট দুজনেই দৌড়ে যান। এক মুহূর্তে লাইন্সম্যান পতাকা তোলেন, রেফারি বাজান তার বাঁশি। রিয়ালের খেলোয়াড়েরা থেমে যায়, সিদ্ধান্ত হয় অফসাইডের। ভিআর এর মাধ্যমে দেখার কোনো ব্যবস্থা ছিল না, রেফারি বাঁশি দেওয়ায়। তবে পরে দেখা যায় সিদ্ধান্তটি বেশ আলোচনা করার মতো ছিল। যেখানে অফসাইড হতে পারে বলেও মনে হয়েছে।
এই গোলটি হলে সমতায় ফিরতে পারত বায়ার্ন। ফাইনালে যাওয়ার সুযোগও তৈরি হতো এতে। তবে ডি লিট জানিয়েছেন নতুন এক খবর। যেখানে তিনি বলেন, “লাইনসম্যান আমাকে বলেছেন ‘দুঃখিত, ভুল করেছি।“ অর্থাৎ এই ডাচ ডিফেন্ডারের কাছে কিছুটা অনুতপ্ত বোধ করেছেন ম্যাচের লাইনসম্যান। মাদ্রিদ-বায়ার্ন ম্যাচ নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। মূলত রেফারি, লাইনসম্যানের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে বায়ার্নের অভিযোগ ভেসে উঠছে নানা মাধ্যমে।
এম/এইচ
ফুটবল
গোল বাতিল নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়লেন মুলার
মাদ্রিদে এটা প্রায়ই হয়। মন্তব্য করেছেন টমাস মুলার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মুখোমুখি হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ ও বায়ার্ন মিউনিখ। এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বুধবার রাতের ম্যাচে। যা নিয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছেন মিউনিখ তারকা।
এমন টানটান উত্তেজনার ম্যাচে কোনো সিদ্ধান্ত দলের অনুকূলে না হলে, তা হজম করা শক্ত। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে এক দারুণ ম্যাচ হয়ে গেল। যেখানে ২-১ গোলে হেরে যায় বায়ার্ন। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ গোলের ব্যবধান তৈরি হয়।
ম্যাচের যোগ করা সময়ের ১৩ মিনিটের এক ঘটনা। যেখানে মুলারের হেড থেকে করা এক পাসে ম্যাথিয়াস ডি লিট গোল করে বসেন। মূলত জশুয়া কিমিখের এক বাড়ানো শটে মুলার ও ডি লিট দুজনেই দৌড়ে যান। এক মুহূর্তে লাইন্সম্যান পতাকা তোলেন, রেফারি বাজান তার বাঁশি। রিয়ালের খেলোয়াড়েরা থেমে যায়, সিদ্ধান্ত হয় অফসাইডের।
ভিআর এর মাধ্যমে দেখার কোনো ব্যবস্থা ছিল না, রেফারি বাঁশি দেওয়ায়। তবে পরে দেখা যায় সিদ্ধান্তটি বেশ আলোচনা করার মতো ছিল। যেখানে অফসাইড হতে পারে বলেও মনে হয়েছে। গোলটি হলে ২-২ সমতায় খেলা অতিরিক্ত মিনিটে গড়াতে পারত। এমন সুযোগ হারাতে কে চায়? তাই মুলার নিজের হতাশা প্রকাশ করেছেন, “রেফারি ভিএআর এর সাহায্য নেয়নি। তিনি এটা দেখার সুযোগও পাননি। এমন পরিস্থিতি খুব অদ্ভুত, এত দ্রুত বাঁশি বাজালেন! অবিশ্বাস্য সিদ্ধান্ত। সাধারণত বাঁশি বাজানোর আগে তিন মিটার দৌড়ানোর সুযোগ দেওয়া হয়। জানি না আসলে কী ঘটেছে।” মুলার আরও বলেছেন, “দুঃখজনকভাবে মাদ্রিদে এটা প্রায়ই হয়। ২০১৭ সালেও আমাদের সঙ্গে এটা ঘটেছে, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো দুই গোল করেছিল…তবে সেটা ভিএআরের আগে।”
এম/এইচ
-
তথ্য-প্রযুক্তি7 days ago
গ্রাহকদের দাবির মুখে সিদ্ধান্ত বদলালো জিপি
-
জাতীয়3 days ago
১০০ টাকায় সয়াবিন তেল বিক্রি করবে টিসিবি
-
বলিউড5 days ago
সিনেমায় চুমু প্রতি স্ত্রীকে দিতে হতো একটি ব্যাগ: ইমরান হাশমি
-
আন্তর্জাতিক2 days ago
স্বামীর গোপনাঙ্গ পুড়িয়ে নির্যাতন
-
বাংলাদেশ6 days ago
স্কুলে দেরিতে আসায় শিক্ষিকাকে ঘুষি মারলেন অধ্যক্ষ
-
ঢাকা4 days ago
হেলে পড়েছে ৬ তলা ভবন, দুর্ঘটনার আশঙ্কা
-
জাতীয়5 days ago
তিনদিন ৩ ঘণ্টা করে বন্ধ থাকবে ফ্লাইট ওঠানামা
-
খুলনা7 days ago
রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় পুলিশ কর্মকর্তা নিহত
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন