এবার বাউল সম্রাটের স্মরণে তেমন কোনো আয়োজন নেই
সুনামগঞ্জ: ‘কোন মেস্তরি নাও বানাইলো কেমন দেখা যায়/ঝিলমিল ঝিলমিল করে রে ময়ূরপঙ্খি নায়’ সহ অসংখ্য গানের রচিতা কিংবদন্তিতুল্য বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম। তার গান ও সুরধারা কোটি কোটি তরুণসহ সব স্তরের মানুষের মন ছুঁয়ে যায়।
বাউল সম্রাট শাহ্ আব্দুল করিম মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পথে পথে ঘুরে গানের মাধ্যমে গণজাগরণ সৃষ্টি করেছেন, মানুষকে উজ্জীবিত করেছেন।
শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বাউল সম্রাটের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে এরছর তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সুনামগঞ্জে তেমন কোনো আয়োজন নেই। স্মরণসভার আয়োজনও করা হয়নি। তার জন্মস্থান দিরাই উপজেলার উজান ধল গ্রামেও নেই তেমন কোনো আয়োজন। শাহ আব্দুল করিমের পরিবার ও শাহ আব্দুল করিম স্মৃতি পরিষদ দিরাইর উদ্যোগে করিমের গ্রামের বাড়িতে সীমিত পরিষরে দোয়া-মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া জেলার ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাউল সম্রাটের ভক্তরা এসে জড়ো হবেন তার মাজার প্রাঙ্গণে। সেখানে তারা নিজেদের মতো করে গুরুকে স্মরণ করবেন। সারা তার ধরে গাইবেন করিমের গাওয়া ও লেখা সব গান।
জানা যায়, অসংখ্য গণজাগরণের গানের রচয়িতা বাউল শাহ্ আব্দুল করিম ১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনয়িনের উজানধল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আমৃত্যু তিনি উজানধল গ্রামেই ছিলেন। অত্যন্ত সহজ-সরল জীবন-যাপন করতেন তিনি। ধর্মান্ধদের বিরুদ্ধে গানে-গানে অর্ধ শতাব্দিরও বেশি লড়াই করেছেন। এজন্য মৌলবাদীদের দ্বারা নানা লাঞ্চনারও শিকার হয়েছিলেন তিনি। ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর কোটি ভক্তকে কাঁদিয়ে পরপারে চলে যান এ বাউল।
বাউল সম্রাটের ভক্ত রণেশ ঠাকুর জানান, আমরা চাই বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের যে গানগুলো এখনও সংরক্ষণ করা হয়নি সেগুলো সংরক্ষণ করা হোক। তার স্মৃতি ধরে রাখতে যে সাংস্কৃতিক জাদুঘর নির্মাণের কথা রয়েছে তা দ্রুত করা হোক।
বাউল সম্রাট শাহ্ আব্দুল করিম স্মৃতি পরিষদ দিরাই শাখার সভাপতি আপেল মাহমুদ বলেন, করোনার কারণে আমরা এবছর কোনো আয়োজন করিনি। তবে সীমিত পরিষরে মিলাদ-মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া বাউল সম্রাটের ভক্তরা উনার বাড়িতে এসে জমায়েত হলে সেখান কিছু গান হতে পারে।
জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল আহমেদ মঞ্জুরুল চৌধুরী পাভেল জানান, যেহেতু দেশে এখন করোনা প্রকোপ চলছে, তাই জেলা শিল্পকলা একাডেমির পক্ষ থেকে অনলাইনভিত্তিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে বাউলকে স্মরণ করা হবে। সেখানে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও বাউল শিল্পী সূর্য লাল দাস ও বশির উদ্দিনসহ আরও কয়েকজন শিল্পী অংশ নেবেন।