আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

কৃষকের কাছে জনপ্রিয় হচ্ছে সোলার পাম্প

সৌরশক্তিচালিত পাম্পের মাধ্যমে জমিতে সেচ দিচ্ছেন বিভিন্ন জেলার কৃষকরা। সময়ের বিবর্তনে আধুনিক হচ্ছে ফসল উৎপাদন পদ্ধতি, ব্যবহার বেড়েছে সৌরশক্তিচালিত সেচ পাম্পের। এতে কমে গেছে বোরো ধান উৎপাদনের খরচ। স্বস্তি মিলেছে কৃষকদের। বাড়তি খরচ বা ঝামেলা না থাকায় এই পাম্পের দিকে ঝুঁকছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকরাও।

ঠাকুরগাঁও জেলার  মাঠে মাঠে বোরো ধান আবাদে কৃষকের ব্যস্ততা বেড়েছে। ভালো ফলন পেতে জমি পরিচর্যায় ভোর থেকেই ব্যস্ত হয়ে পড়ে কৃষক। আগাছা তোলা, সার কিটনাষক প্রয়োগ ও সেচ দেয়া থেকে শুরু করে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করছে কৃষক বোরো ধান উৎপাদনে।

ঠাকুরগাঁও-বালিয়াডাঙ্গী সড়কের আশপাশের জমিতে সোলার প্যানেল ব্যবহারের মাধ্যমে সেচ দিয়ে বোরো আবাদ করতে দেখা গেছে কৃষকদের। ভোগান্তি নিরসনের পাশাপাশি মাত্র ২ হাজার টাকায় ইচ্ছেমত সেচ সুবিধাসহ মাঠ থেকে মেশিন চুরির ভয় কেটেছে কৃষকের।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় বোরো আবাদ হয়েছে ৬০ হাজার ৬৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে ১৪১ টি সোলার সেচ পাম্পের সুবিধা নিচ্ছেন কৃষকরা।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা চিলারং ইউনিয়নের সোলার পাম্প এর সুবিধা নেয়া কৃষক রফিকুল ইসলাম ও আমির আলী জানান, আমরা সোলারের মাধ্যমে জমিতে সেচ দিচ্ছি। এতে আমাদের বেরো উৎপাদন খরচ অনেক কমে গিয়েছে। বর্তমানে ১ বিঘা জমিতে সোলার পাম্প দিয়ে সেচ দিতে খরচ হচ্ছে ২ হাজার টাকা। আবার এই টাকা পরিশোধ করতে হবে ধান কেটে বিক্রি করার পরে।

আরেক কৃষক রহমত আলী জানান, আমি কৃষকের উন্নয়নে নিয়মিত চিন্তা করে যাচ্ছি। বর্তমানে আমার ১৩টি সোলার পাম্প দিয়ে বোরো সেচ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। আমি এই সোলার এর পরিধি আরো বাড়াতে চাই। এছাড়াও আমার কাছ থেকে অনেকে সোলার পাম্প ক্রয় করে নিয়ে যায়।

তিনি বলেন, সোলারের কারণে বর্তমানে অল্প খরচে বোরো ধান রোপণ করা যাচ্ছে। শ্যালো মেশিনে তেল, মেশিন চুরি, নষ্টের ভয় ছিল ও শব্দ দূষণ হত। সোলারের কারণে এখন আর এসব নিয়ে চিন্তা করতে হয় না।

জেলার হরিপুর উপজেলা ঢাঙ্গী পুকুর এলাকার আরেক কৃষক জুলফিকার আলী বলেন, বর্তমানে সব কছিুর দাম বেশি। সার, বিষ, ডিজেল, দৈনিক হাজিরা সব কিছু বৃদ্ধি পাওয়ায় বোরো আবাদ এর ব্যয় বৃদ্ধি পায়। এতে পরে ধান বিক্রয় করে আমরা কৃষকরা লাভবান হতে পারি না।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. আবদুল জলিল জানান, বাজারে ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে জেলার প্রায় ৭ হাজার কৃষক এখন সোলার পাম্পের মাধ্যমে সেচ সুবিধা নিচ্ছেন। সোলার পাম্পের মাধ্যমে জমিতে সেচ দিয়ে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা। এতে ডিজেল ও বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীলতা কমছে।

উল্লেখ্য, চলতি মৌসুমে ঠাকুরগাঁওয়ে বোরো ধানের চাষ হয়েছে ৬০ হাজার ৬৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে ১৪১টি সৌরশক্তিচালিত সেচ পাম্পের সুবিধা নিচ্ছেন কৃষকরা। সৌরশক্তিচালিত পাম্পের মাধ্যমে জমিতে সেচ দেয়ায় ডিজেল ও বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীলতাও কমেছে কৃষকদের।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন