আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

একই রশিতে দুই যুবকের লাশ, পরকীয়ার জেরেই হত্যা

গাইবান্ধায় একই রশি থেকে দুই যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় প্রেস ব্রিফিং করেছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

আজ রোবাবর (১৫ অগাস্ট) দুপুরে নিজস্ব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেন পিবিআই গাইবান্ধার পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফ।

ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার জানান, আত্নহত্যা নয়, পরকীয়ার জেরে দুই বন্ধু মৃণাল চন্দ্র দাস ও সুমন কান্তি দাসকে হত্যা করা হয়েছে। এরপর তাদের লাশ গাইবান্ধা সদর উপজেলার মিয়ারবাজার এলাকার একটি গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়। হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন গ্রেপ্তারকৃত প্রদীপ চন্দ্র।

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার আরও জানান, গত ১২ আগষ্ট সকালে গাইবান্ধা সদর উপজেলার  পিয়ারাপুর গ্রামের একটি গাছের বাগানে একই রশিতে ঝুলন্ত অবস্থায় মৃণাল ও সুমনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পরপরই গ্রেপ্তার করা হয় তাদের বন্ধু প্রদীপকে। প্রদীপ পিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সাথে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেন। তিনি গতকাল শনিবার (১৪ আগষ্ট) আদালতেও স্বীকারোক্তি দেন।

গ্রেপ্তারকৃত প্রদীপ পিবিআই ও আদালতের কাছে জবানবন্দিতে জানায়, নিহত সুমন কান্তি দাসের মায়ের সাথে তার বন্ধু নিতাই চন্দ্র দাসের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়। এনিয়ে সুমন ও নিতাই দুই বন্ধুর মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে এই বিরোধের জের ধরে নিতাই পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী প্রদীপ চন্দ্র দাসের সহযোগীতায় সুমন কান্তি দাস ও মৃনাল কান্তি দাসকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তাই তারা মাদক সেবনের প্রলোভন দেখিয়ে গত ১১ আগষ্ট রাতে নিতাইকে ডেকে নিয়ে যায়।

এরপর পুর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী নিতাই ও প্রদীপসহ আরও তিন-চারজনের সহযোগীতায় মৃনাল ও সুমনকে হত্যা করে। পরে এই হত্যাকান্ড আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার জন্য একটি গাছে একই রশির দুই মাথায় মৃনাল ও সুমনকে ঝুলিয়ে রাখা হয়। পরে নিতাই, প্রদীপ ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়।

তিনি আরও জানান, গত ১২ আগষ্ট সকালে গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় মৃণাল ও সুমনের মরদেহ দেখে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ওইদিন দুপুর দুইটায় রংপুরস্থ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের কর্মকর্তারা লাশ দুইটি উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে দুটি গাছে ছুড়ি দিয়ে নিতাইয়ের নাম খোদাই করা ছিলো। একটি গাছে কাচি ও আরেকটি গাছে চাকু আটকানো ছিলো। এমনকি তাদের দুজনের মরদেহের পাশে একটি রশিতে সাজিয়ে রাখা তাদের ব্যবহৃত রুমাল, মাস্ক, তোয়ালে, ব্যাগ, মানিব্যাগ জব্দ করা হয়। ওইদিনই এ ঘটনায় সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটির তদন্তভার পায় গাইবান্ধা পিবিআই।

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার জানান, এ ঘটনায় মুল পরিকল্পনাকারী নিতাই ও তার সহযোগীরা সবাই পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।

মুনিয়া

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন