আর্কাইভ থেকে এশিয়া

আফগানিস্তানে তালেবানের পূণরুত্থান: ২০ বছরে মার্কিন অভিযান নিয়ে প্রশ্ন

আফগানিস্তানে তালেবানের অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনে দীর্ঘ ২০ বছরের মার্কিন অভিযানের যৌক্তিকতা ও সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও কূটনীতিকদের তড়িঘড়ি কাবুল ত্যাগকে ভিয়েতনামের সায়গন থেকে পলায়ণের সঙ্গে তুলনা করছে অনেকে। বলা হচ্ছে, লড়াইয়ের ময়দানে যুক্তরাষ্ট্রের আরও একবার পরাজয় হলো। যদিও আফগানিস্তান অভিযানে পরাজয় বা ব্যর্থতা স্বীকার করতে রাজি নয় দেশটি।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, রোববার সারাদিন কাবুলের আকাশে বেশ কিছু মার্কিন হেলিকপ্টারকে উড়তে দেখা গেছে। তড়িঘড়ি মার্কিন কর্মকর্তা ও নাগরিকদের সরিয়ে নিতে এই ব্যস্ততা ছিল। মালপত্র নিয়ে দূতাবাস থেকে মার্কিনিদের গন্তব্য ছিল কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

মাত্র দুইদিন আগেও তালেবানের কাবুলে প্রবেশে অন্তত ৩০ দিন সময় লাগার পূর্বাভাস ছিল মার্কিন গোয়েন্দাদের। কিন্তু রোববারের নাটকীয়তায় পাল্টে গেছে পরিস্থিতি। অবিশ্বাস্য গতিতে তালেবানের অগ্রযাত্রার জন্য আফগান বাহিনীর ওপর দায় চাপাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, নিজেদের দেশকে রক্ষায় গেল সপ্তাহে আফগান বাহিনীর ভয়াবহ ব্যর্থতা দেখা গেছে। অথচ ২০ বছরে তাদের জন্য শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছি। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, প্রতিরোধ গড়তে ব্যর্থ হয়েছে তারা। এই মুহূর্তে আমাদের কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা স্বাভাবিকভাবেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।

আফগানিস্তান থেকে মার্কিনিদের সরিয়ে নিতে তিন হাজার সেনা পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছিল ওয়াশিংটন। কিন্তু, ঘটনার আকস্মিতায় অতিরিক্ত সেনা পৌঁছার আগেই উদ্ধার অভিযান শুরু করতে হয়। হুড়োহুড়ি করে নাগরিকদের সরালেও একে পালানো বলতে নারাজ মার্কিন সরকার।

তবে, যে পরিস্থিতি এবং যেভাবে মার্কিনীরা আফগানিস্তান ছাড়ছে তাতে সমালোচনার ঝড় উঠেছে খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই। ভিয়েতনামের রক্তাক্ত পরাজয়ের সঙ্গে তুলনা চলছে। ৫৮ হাজারের বেশি সেনা নিহতের পর ভিয়েতনাম ছাড়া ছিল মার্কিন সামরিক ইতিহাসের অন্যতম লজ্জাজনক অধ্যায়। সে তুলনায় আফগানিস্তানে নিহত অনেক কম। তবে মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘ অভিযানে প্রাপ্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

অ্যান্টনি ব্লিংকেন আরো বলেন, নাইন-ইলেভেনের কারণেই আমাদের আফগানিস্তানে যেতে হয়েছিল। আর এখনকার পরিস্থিতি তখনকার সময়ের চেয়ে অনেক ভালো। যুক্তরাষ্ট্রে হামলা করার ক্ষমতা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমেছে। কেউ সে চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেওয়ার সক্ষমতা বেড়েছে আমাদের। ২০ বছর আগের চেয়ে অনেক কিছুই বদলে গেছে।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন