চীনে গ্রামবাসীর ভাগ্য বদলে দিয়েছে পিচ গাছ!
ঠিক যেন রুপকথার দৃশ্য। যেদিকে দুই চোখ যায়, শুধুই পিচ ফুল। প্রতি বসন্তেই গোলাপি রঙয়ের ফুলে ভরে যায় চীনের তিব্বতীয় অঞ্চলের গালা গ্রামটি। মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য্য উপভোগে ছোট্ট এ গ্রামটিতে ছুটে যায় বিভিন্ন অঞ্চলের হাজারো পর্যটক।
পিচ চাষের মধ্য দিয়ে ভাগ্য খুলেছে চীনের গালা গ্রামের মানুষের। ফল বিক্রির পাশাপাশি পিচ ফুলের সৌন্দর্য কাজে লাগিয়ে তিব্বতের অঞ্চলটিকে পর্যটন কেন্দ্রে রূপ দেওয়া হয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে গ্রামের নারী-পুরুষ সবাই। চীনে এখন উন্নয়নের রোল মডেল হয়ে উঠেছে গ্রামটি।
চীনা গণমাধ্যমগুলো জানায়, গোটা বিশ্ব যখন জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব দেখছে তখন সবুজায়ণের মাধ্যমে জীবনমান উন্নয়নের দেশটির এই উদ্যোগকে প্রশংসনীয় বলছে বিশেষজ্ঞরা।
অথচ তিব্বতের নিয়াংঝি জেলার গ্রামটি এক সময় দারিদ্র আর ক্ষুধাপীড়িত ছিল। জীবনযাত্রা বদলের লক্ষ্যে টেকসই উন্নয়নের পথ বেছে নেয় গ্রামবাসী। পাহাড়ি গ্রামটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়।
বহু আগে থেকেই পিচ ফলের জন্য বিখ্যাত চীনের তিব্বত অঞ্চল। আর এই ফলনকে কাজে লাগিয়েই গ্রামের উন্নয়ন করা হয়েছে। ১৮ হেক্টর পাহাড়ি এলাকাজুড়ে পিচের বাগান বানানো হয়েছে। পর্যটকদের কথা ভেবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়েছে। আর এতেই স্বচ্ছল আর স্বনির্ভর হয় বাসিন্দাদের জীবন।
স্থানীয় নেত্রী পেমবা বলেন, কয়েক বছর আগেও গণহারে পিচ গাছ কেটে রান্নার কাজে ব্যবহার করতো গ্রামবাসী। পরবর্তীতে পরিবেশবান্ধব এই উদ্যোগ নিই। গ্রামজুড়ে প্রচুর পিচ গাছ লাগানো হয়। ২০১৫ সালে পর্যটনভিত্তিক সব স্থাপনা নির্মাণকাজ শেষ করি। পর্যটনকেন্দ্র হবার পর অন্তত দশগুণ বেড়েছে বাসিন্দাদের রোজগার।
শুধু পর্যটন নয়, পশু পালন, কৃষিকাজের মাধ্যমেও নিজেদের অর্থনীতিকে এগিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাসী।
চীনের গ্রাম উন্নয়ন কর্মকর্তা ইয়েশি কোয়েডন জানান, আমরা আরও কিছু পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথা ভাবছি। আমাদের নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী উৎসবগুলোকে বড় পরিসরে তুলে ধরতে চাই। এতে পর্যটনকাল একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবদ্ধ থাকবে না। এখানে সারাবছরই পর্যটকদের আনাগোনা থাকবে।
কয়েক বছরে গ্রামবাসীর বার্ষিক আয় বেড়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ। পর্যটন শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছে এলাকার অন্তত সাড়ে ছয় লাখ মানুষ।
এসএন