আর্কাইভ থেকে এশিয়া

ইরানের দুটি পরমাণু স্থাপনায় ইউরেনিয়ামের অস্তিত্ব আছে: আইএইএ

ইরানের দুটি পরমাণু স্থাপনাতে ইউরেনিয়াম কণা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি- আইএইএ। শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

রয়টার্স জানায়, ইরানের ওই দুই স্থাপনায় আইএইএর গবেষকদের প্রবেশে দীর্ঘদিন ধরে বাধা দিয়ে যাচ্ছিল ইরান। গেল আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে সেখানে গিয়েছিল গবেষকরা। নমুনা দেখে তারা বলছে, ইউরেনিয়ামের কণার উপস্থিতি মিলেছে ওই দুই পরমাণু স্থাপনায়।

অনেক দিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র ও আইএইএ অভিযোগ করে যাচ্ছে, গোপনে পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি পরিচালনা করছে ইরান। তবে দেশটি বরাবরই তা নাকচ করে যাচ্ছে।

চলতি মাসের শুরুতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, ইরানের দুটি পরমাণু স্থাপনা পরিদর্শনকারী গবেষকদের নেওয়া নমুনায় রেডিওঅ্যাকটিভ বস্তুর সন্ধান মিলেছে।

রয়টার্সকে আইএইএর গবেষকদলের সঙ্গে ঘনিষ্ট পর্যায়ে কাজ করা চার কূটনীতিক বলেছেন, নমুনায় পাওয়া বস্তুগুলোর মধ্যে ইউরেনিয়াম রয়েছে। সমৃদ্ধ করা ইউরেনিয়াম পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহার হতে পারে। তাই আইএইএ’র সদস্য দেশ হিসেবে ইউরেনিয়ামের ব্যাখ্যা দিতে বাধ্য ইরান।

ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বাধা দেওয়ার কথা বলে ২০১৮ সালে পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যান সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশটির বিরুদ্ধে একতরফা নিষেধাজ্ঞা জারি করেন তিনি। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর পরমাণু চুক্তিতে ফেরার বিষয়টি খতিয়ে দেখা শুরু করেন জো বাইডেন। এখন ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাইছে তার প্রশাসন। তবে ইরান এখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবে কি না, তা স্পষ্ট নয়।

এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, ইরানের পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য ও জার্মানির আমন্ত্রণ গ্রহণ করবে যুক্তরাষ্ট্র।

২০১৯ সালে চুক্তি ভেঙে ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়ায় ইরান। গেল কয়েক মাসে ইউরেনিয়াম মজুদ অনেকটা বাড়িয়েছে দেশটি। পাশাপাশি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কাজও করছে। পরমাণু বোমার জন্য যা জরুরি।

সম্প্রতি ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও-বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। পরে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ইরান ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি মানলে চুক্তিতে ফিরবে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের সঙ্গে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ জানান, যুক্তরাষ্ট্রকেই আলোচনার জন্য উদ্যোগী হতে হবে। আগে ইউরোপের দেশগুলোকে নিজেদের প্রতিশ্রুতি পালন করতে হবে। ট্রাম্প যেভাবে ইরানের ওপর যাবতীয় দায় চাপিয়ে দিয়ে আর্থিক সন্ত্রাসবাদের পথ নিয়েছিল তা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরে যেতে হবে। ইরান আগে কাজ দেখতে চায় বলেও মন্তব্য করেন ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন