আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

রাজশাহীতে সেনা সদস্যের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটন, দুই যুবতি গ্রেপ্তার

রাজশাহীতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মজিবুর রহমান আত্মহত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে ২ যুবতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নগরীর বোয়ালিয়া থানা পুলিশ রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে এই দুই যুবতিকে গ্রেফতার করে। এসময় উদ্ধার করা হয়েছে মৃতের খোয়া যাওয়া মোবাইল ও কাগজপত্র। 

সোমবার দুপুরে প্রেস ব্রিফিং করে নগর পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক এ তথ্য জানান।

গেফতারকৃতরা হলো নওগাঁ মান্দা উপজেলার বালিচগ্রামের মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী আইরিন ইয়াসমিন লিজা (৩৪) ও ঢাকার সাভার থানার ডেন্ডাবর নতুনপাড়া পলাশবাড়ী গ্রামের ফিরোজের মেয়ে শামীমা আক্তার (২৪)। শামীমা আক্তার সাভারে একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা।

পুলিশ কমিশনার জানান, সাবেক সেনা সদস্য মৃত মজিবুর রহমান তার পরিবার নিয়ে রাজশাহীর উপশহর ২নং সেক্টর, হোল্ডিং নং-৯০/২ বাসায় ভাড়ায় থাকতেন।  গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯ টা হতে তিনি আত্মহত্যা করেন। সেদিন মজিবুর রহমানের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বাসায় ছিলো না। সংবাদ পেয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ সেনা সদস্যের মৃতদেহ তার বাসা থেকে দরজা ভেঙ্গে উদ্ধার করে।

মৃতের বড় ছেলে তার পিতার আত্মহত্যার বিষয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। তার ছেলে জানায়, মৃত্যুর পর তার পিতার মোবাইল ফোন সেট পাওয়া যায়নি এবং মৃতের স্ত্রী জানায়, তার বাসায় থাকা চার লক্ষ টাকা এবং ব্যাংক এর কিছু কাগজপত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিকের নির্দেশে আত্মহত্যার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ। সর্বশেষ বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নিবারণ চন্দ্র বর্মনসহ পলিশের একটি দল রোববার সাড়ে ৮ টায় তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় অভিযান পরিচালনা করে  ঢাকা জেলার সাভাবর থেকে আইরিন ইয়াসমিন লিজাকে গ্রেফতার করে। 

এসময় মজিবুর রহমানের খোয়া যাওয়া মোবাইল জব্দ করা হয়। এরপর বোয়ালিয়া থানার একই রাতে অপর আসামী শামীমা আক্তারকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃত আইরিন জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, মৃত মজিবুর রহমানের সাথে তার কথপোকথন ও অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল এবং ঘটনার দিন তারা মজিবুর রহমানের বাসায় স্বেচ্ছায় এসে তার পাশের রুমে অবস্থান করছিলো। লিজাকে মৃত মজিবুর ম্যাসেঞ্জারে ম্যাসেজ দিয়ে তার রুমে ডাকে। আইরিন তার রুমে যেতে না চাইলে সে আত্মহত্যা করবে বলে ম্যাসেঞ্জারে হুমকি প্রদান করে। 

এরপর আসামী আইরিন মৃত মজিবর রহমান এর নিকট না গেলে একপর্যায়ে অভিমান করে গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাত ৩ টার পর যেকোন সময় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরো জানায়, তারা সকাল সাড়ে ৭ টায় মজিবুরকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করতে দেখে তার মোবাইল ফোন সেট, চাবি ও নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় বোয়ালিয়া থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন