আর্কাইভ থেকে আইন-বিচার

মুদি দোকানি থেকে মানবপাচারকারী টুটুল-তৈয়ব

এক সময়ে মুদির দোকানী ওভারসিজের মালিক। তারপর মধ্যপ্রাচ্যে লোভনীয় চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ। বিদেশে মানবপাচার করে বিক্রি করে দেয়ার মত অপরাধে জড়িয়ে পড়েছেন তিনি।  এমন অপকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগে টুটুল নামে একজনকে সাত সহযোগীসহ গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। 

বুধবার (১৩ অক্টোবর) সকালে কাওরান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে র্যা ব ৪ এর পরিচালক জানিয়েছেন, গেলো জুন মাসে আসমা নামে এক তরুনীকে জর্ডানে পাঠায় টুটুল ও তার সহযোগীরা। 

প্রথমে কিছুদিন আসমা দেশে আত্নীয় পরিজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে। কিছুদিন পর তার হদিস পাওয়া যায়না। বিদেশে পাঠানোর কথা বলে, এমন ২৫ জনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বছরের পর বছর টালবাহানা করছে টুটুল ও তার সহযোগীরা। কৌশল হিসেবে বেকার ও অস্বচ্ছল যুবক-যুবতীদের টার্গেট করে তারা। তারপর সৌদি আরব, জর্ডান ও লেবাননসহ বিভিন্ন দেশের বাসা বাড়ীতে উচ্চ বেতনের চাকরির লোভ দেখায়। সেই প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নে হয়। 
জব্দ করা সরঞ্জাম 


এমন অভিযোগ পেয়ে রাজধানীর বাড্ডার লিংক রোডে টুটুল ওভারসীজ, লিমন ওভারসীজ ও লয়াল ওভারসীজে অভিযান চালায় র্যা ব-৪ এর একটি দল।  উদ্ধার করা হয়, দুজন পুরুষ ও দুজন নারী ভিকটিমকে। জব্দ করা হয়, ১০ টি পাসপোর্ট, ১৭ টি মোবাইল, তিনটি মোবাইল সীম, দুটি টি কম্পিউটার এবং নগদ ১০ হাজার ৭০ টাকা । 

গ্রেফতার করা হয় টুটুল ও তার অন্যতম সহযোগী তৈয়ব,  মোঃ সাইফুল ইসলাম, মোঃ তৈয়ব আলী , শাহ্ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন লিমন, মোঃ মারুফ হাসান, মোঃ জাহাঙ্গীর আল, মোঃ লালটু ইসলাম, মোঃ আলামিন হোসাইন, মোঃ আব্দল্লাহ আল মামুনকে।  

র‌্যা বলেছে, এইচএসসি পাশ টুটুল এক সময় মেহেরপুরের গাংনীর  কামন্দী গ্রামে মুদির দোকানদারী করতো। পরে বাড়তি টাকা আয়ের লোভে মানবপাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে দালালী শুরু করে। তারপর বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশে লোক পাঠানো শুরু করে। পরবর্তীতে নিজেই রাজধানীর বাড্ডায় স্থাপন করে টুটুল ওভারসিজ, লিমন ওভারসিজ ও লয়াল ওভারসিজ নামে তিনটি প্রতিষ্ঠান।এসব প্রতিষ্ঠানের কোন অনুমোদন ছিলোনা।

টুটুল তার সহযোগীরা ইতোমধ্যে কয়েকজন নারীকে বিদেশের বাসাবাড়ীতে কাজের কথা বলে বিক্রি করেছে। এছাড়া কয়েকজন পুরুষকে অমানবিক কাজে নিয়োজিত করতে সৌদি আরবের জেদ্দা ও রিয়াদ, জর্ডান ও লেবাননে টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেছে।  

মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে ৮ জনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব

এছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বেকার ও শিক্ষিত  অনেক নারী ও পুরুষকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে লাখ লাখ টাকা আত্নসাত করেছে।
 
এক সময়ের চায়ের দোকানদার তৈয়বই ছিলো টুটুলের অপকর্মের মূল সহযোগী। সে নিজেকে একটি সনামধন্য এয়ারলাইন্সের ম্যানেজার হিসেবে পরিচয় দিতো। বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনে চাকুরী এবং দেশের নামী-দামী মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীতে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাৎ করেছে। 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন