বয়স ৩০ পার হলেই মহিলাদের যে পরীক্ষাগুলি করা জরুরি
মহিলারা নিজেদের স্বাস্থ্য নিয়ে খুবই উদাসীন। তারা সংসারের গণ্ডি পেরিয়ে অফিস যেতে পারেন, তবে স্বাস্থ্যের দিকে নজর ফেরাতে বললেই গায়ে জ্বর! তাই তো বহু অসুখ তাদের পিছু নেয়। এমনকী অবহেলার কারণে রোগ শরীরে জাঁকিয়ে বসে। তাই নারী দিবসের আগে মহিলাদের অবশ্যই স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নেয়ার অঙ্গীকার করতে হবে।
বিশেষত, বয়স ৩০ পেরলেই এখন বহু রোগ বাসা বাঁধছে। মহিলাদের ক্ষেত্রে সমস্যা কিছুটা বেশি। বিভিন্ন ঘাতক রোগ ৩০ বছর হলেই হচ্ছে। বিশেষত, জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসই এই সমস্যার পেছনে রয়েছে।
স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলে থাকেন- এখন বয়স ৩০ পেরলেই কিছু টেস্ট অবশ্যই করে নেয়া দরকার। এই পরীক্ষাগুলিই বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার খবর দেয়। তারপর সেই মতো চিকিৎসা শুরু করা যায়। তাই তড়িঘড়ি এই পরীক্ষাগুলি করিয়ে নিন।
ডায়াবিটিস ও প্রেশার মাপুন
ডায়াবিটিস এখন কম বয়সেই হচ্ছে। সেক্ষেত্রে পরিবারে কারও এই রোগ থাকুক না থাকুক, বয়স ৩০ পেরলে ৬ মাসে অন্তত একবার ফাস্টিং ও পিপি টেস্ট করিয়ে নিন। এছাড়া প্রয়োজনে করতে হতে পারে এইচবিএ১সি টেস্ট। এসবের পাশাপাশি প্রেশার মাপতে হবে ৬ মাসে একবার। কারণ মহিলাদের মধ্যে ব্লাড প্রেশারের সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মনে রাখবেন, এই দুই অসুখ কিন্তু শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের উপর গুরুতর প্রভাব ফেলে। তাই সচেতন হন।
থাইরয়েড ও কোলেস্টেরল
মহিলাদের মধ্যে থাইরয়েডের সমস্যা খুবই বেশি। বিশেষত, হাইপোথাইরয়েড অসুখটি বেশি করে দেখা যায়। সেক্ষেত্রে ৬ মাসে একবার থাইরয়েড পরীক্ষা অবশ্যই করান। এছাড়া এখন ঘরে ঘরে কোলেস্টেরল রোগী। রক্তে কোলেস্টেরল বেশি থাকলে নানা গুরুতর রোগ পিছু নেয়। হতে পারে হার্টের অসুখও। তাই সচেতন হন। এক্ষেত্রে লিপিড প্রোফাইল টেস্ট বছরে অন্তত একবার করতে হবে।
ক্যানসার স্ক্রিনিং জরুরি
কিছু ক্যানসার রয়েছে যা মহিলাদের মধ্যেই আঘাত হানে। এক্ষেত্রে ব্রেস্ট ক্যানাসার, সার্ভাইক্যাল ক্যানসার অন্যতম। ব্রেস্ট ক্যানসার স্ক্রিনিং করতে হবে চিকিৎসকের কাছে এসে। চিকিৎসক ফিজিক্যালি পরীক্ষা করতে পারেন এবং কিছু টেস্ট দিয়ে থাকেন। ইউএসজি, ম্যামোগ্রাফি পরীক্ষায় ব্রেস্ট ক্যানসার সম্পর্কে জানতে পারা যায়। আবার সাভাইর্ক্যাল ক্যানসারের ক্ষেত্রে করাতে হতে পারে এইচপিভি স্ক্রিনিং, প্যাপ স্মিয়ার ইত্যাদি, এমনটাই জানালেন ডা: দেবলীনা ব্রহ্ম।
হাড়ের স্বাস্থ্য নিয়ে সাবধান
হাড়ের খেয়াল রাখাটা মহিলাদের কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। হাঁটুতে ব্যথা তো সবারই সাধারণ সমস্যা। তাই করে নিন ভিটামিন ডি৩ টেস্ট। এছাড়া ক্যালশিয়াম পরীক্ষা, বোন ডেনসিটি টেস্টও কিন্তু করতে হবে। আবার ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা কিন্তু এখন যখন তখন দেখা যায়। তাই করাতে হবে ইউরিক অ্যাসিড টেস্ট। এই টেস্টের মাধ্যমে গাউট আর্থ্রাইটিস ধরা যায়।
চোখের পরীক্ষা এবং অন্যান্য আরও কিছু টেস্ট
৩০ বছরের পর থেকেই বছরে অন্তত একবার চোখের পরীক্ষা মাস্ট। সেক্ষেত্রে পাওয়ার তো দেখতেই হবে, পাশাপাশি গ্লকোমার মতো সমস্যা আগেভাগে ধরতে হয়। এছাড়া করুন সিবিসি, লিভার ফাংশন টেস্ট। এই টেস্টগুলি থেকেও সুস্থ থাকার মাপকাঠি পাওয়া যায়। তবে সবার আগে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তিনিই আপনাকে সঠিক দেখাতে পারবেন।
দ্রষ্টব্য : এ প্রতিবেদনটি সচেতনতার জন্য লেখা। কোনও সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।