আর্কাইভ থেকে জাতীয়

ওয়াসার প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান

ঢাকা ওয়াসার কয়েকটি প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতির নানা অভিযোগে সংস্থাটির প্রধান অতিরিক্ত প্রকৌশলী মো. আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার (১৮ অক্টোবর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। অভিযোগের বিষয়ে দুদকের উপপরিচালক মো. আলী আকবরকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে কমিশন। দুদকের জনসংযোগ দফতর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগেও আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের আরও একটি অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধান করছে কমিশন। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত আরও কিছু অভিযোগ কমিশনে জমা পড়েছে। সব অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধান কর্মকর্তাকে তদন্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে সরকারের শত শত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্পের নামে বরাদ্দ হওয়া অর্থ কাজ না করে কখনও বা নিম্ন মানের পাইপ সরবরাহ করে নিজে আত্নসাত করেন। এর মধ্যে পদ্মার জশলদিয়া প্রকল্পে নিম্ন মানের পাইপ স্থান করে অন্তত: ৫শ’ কোটি টাকা আত্নসাত করেন। নদীর তলদেশে পাইপ সুরক্ষার কেসিং পাইপের জন্য বরাদ্দকৃত ১শ’ কোটি টাকা ও রামপুরা-কমলাপুর পানির পাম্প প্রকল্পের ৪শ’ কোটি টাকা রয়েছে। ডিডব্লিউএসএনআইপি প্রকল্প পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে প্রকল্পে ঠিকাদার নিয়োগে ৪০ কোটি, গুলশান-বারিধারা লেক দূষণমুক্ত প্রকল্পের ৫০ কোটি ও ঢাকা ওয়াসার কর্মচারী সমিতির মাধ্যমে ৪৪৫ কোটিসহ ৫৩৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে। করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের পৃথক দু’টি অভিযোগপত্রে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনানুগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থেকে ঢাকা পর্যন্ত পাইপ বসাতে তিনটি নদী ক্রসিং করতে নদীর তলদেশে পাইপ সুরক্ষার কেসিং পাইপের জন্য বরাদ্দকৃত ১শ’ কোটি টাকার পুরোটাই আত্মসাৎ করা হয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতায়। এভাবে প্রতি ক্ষেত্রে দুর্নীতি জড়িয়ে থাকায় প্রতিদিন ৪৫ কোটি লিটার পানি সরবরাহের কথা থাকলেও সরবরাহ করা হচ্ছে তিন ভাগের এক ভাগ। এছাড়া রাজধানীর জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানে ৪শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে রামপুরা ও কমলাপুরে দু’টি পানির পাম্প স্থাপনের কথা থাকলেও প্রকল্পের কাজ শেষ না করেই পুরো টাকাই আত্মসাৎ করেছেন প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম। তার স্ত্রীর নামে থাকা ঠিকাদারি লাইসেন্স দিয়ে ওয়াসার কাজ করার অভিযোগও রয়েছে ঢাকা ওয়াসার পদ্মা (জশলদিয়া) ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্রকল্পের এই পরিচালকের বিরুদ্ধে।

২০১৯ সালের শুরুর দিকে ঢাকা ওয়াসার কর্মচারী সমিতির (পিপিআই) চেয়ারম্যান হওয়ার পরে পিপিআইয়ের মাধ্যমে ৪৪৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। দুর্নীতিলব্ধ অর্থ বেনামী একাউন্টে স্থানান্তর করা হয়। এ দুর্নীতির বিষয়ে ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রির ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্তৃক আক্তারুজ্জামানকে একটি চিঠিও দেয়া হয়।

এদিকে পৃথক অনুসন্ধান শুরু হয়েছে ঢাকা ওয়াসার আরেক কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।

দুদকে আসা অভিযোগের বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, কোনো অভিযোগ নিয়ে দুদক তদন্ত করলে এর সত্যতা বের হবে। এখন যেহেতু  তদন্ত শুরু হয়েছে, সেই তদন্ত শেষ না হওয়ার পর্যন্ত এ বিষয়ে কথা বলা ঠিক হবে না।

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন