অবৈধ ভিসা বাণিজ্য: ৮ বাংলাদেশিসহ সৌদির কয়েকজন গ্রেপ্তার
ঘুষ নিয়ে অবৈধভাবে ভিসা দেয়ার অভিযোগে সৌদি আরবের ৪ কর্মকর্তা ও ৮ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির তদারকি ও দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষ-নাজাহা। এ ঘটনায় সৌদিতে ফিলিস্তিনি এক বিনিয়োগকারীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছেন মোহাম্মদ নাসের উদ্দিন নূর নামে একজন, যিনি বাংলাদেশে একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক।
শনিবার (৪ মার্চ) নাজাহা বলেছে, এই কেলেঙ্কারিতে জড়িত সবার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হচ্ছে।
গ্রেপ্তার অন্য ৭ প্রবাসী বাংলাদেশি হলেন-আশরাফ উদ্দিন আকনাদ, আলমগীর হোসেন খান, শফিক আল-ইসলাম শাহজাহান, জায়েদ উসাইয়েদ মাফি, আবুল কালাম মোহাম্মদ রফিক আল-ইসলাম, আজিজ আলহাক মুসলিম উদ্দিন এবং পর্যটক আলামিন খান শহীদ আল্লাহ খান।
তারা অবৈধ ভিসা বাণিজ্য এবং সৌদি আরবের বাইরে বেআইনি ব্যবসা ও অর্থ পাচারে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাজাহা বলেছে, এ ঘটনায় প্রথমে সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মীকে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ৬০ হাজার রিয়ালের বিনিময়ে এক সৌদি নাগরিককে বিদেশি বিনিয়োগকারীর সঙ্গে ২ কোটি ৩০ লাখ রিয়ালের আর্থিক চুক্তি স্বাক্ষরে বাধ্য করেছেন।
গ্রেপ্তার ওই দুই কর্মী হলেন-রিয়াদ অঞ্চলে আদালতের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সার্জেন্ট মেতাব সাদ আল-ঘনুম ও স্পেশাল মিশন ফোর্সের করপোরাল হাতেম মাস্তুর সাদ বিন তাইয়েব। সংশ্লিষ্ট ফিলিস্তিনি বিনিয়োগকারী সালেহ মোহাম্মদ সালেহ আল-শালাউতকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে আরও দুই সৌদি কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন-ঢাকায় সৌদি দূতাবাসের কনস্যুলার বিভাগের প্রধান ও সাবেক উপ-রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ ফালাহ মুদাহি আল-শামারি এবং কনস্যুলার বিভাগের উপ-প্রধান খালেদ নাসের আয়েদ আল-কাহতানি। তারা বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাছ থেকে ৫ কোটি ৪০ লাখ সৌদি রিয়াল ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় ওই অর্থের পরিমাণ প্রায় ১৫৪ কোটি টাকা।
নাজাহা বলেছে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা বাংলাদেশে সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে অবৈধ ভিসা বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ২ কোটি ১ লাখ ৮০ হাজার রিয়াল পাওয়া গেছে। এছাড়াও স্বর্ণ ও বিলাসবহুল গাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) সভাপতি আবুল বাশার বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় সৌদি দূতাবাসের কর্মকাণ্ড নিয়ে অভিযোগ করে এসেছি, আন্দোলন করেছি। এখন তারা নিজ দেশে আটক হয়েছেন। সত্যের জয় হয়েছে।’
বায়রা সভাপতি বলেন, এসব কাজে যেসব বাংলাদেশি সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তাদের উদ্বুদ্ধ করেছে তাদের বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া উচিত। বিশেষ করে যে রিক্রুটিং এজেন্সি মালিক এই অভিযোগে আটক হয়েছেন তার অপরাধ প্রমাণিত হলে বায়রার পক্ষ থেকেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
The #Oversight_and_Anti_Corruption_Authority initiates a criminal case. #Country_with_no_corruption pic.twitter.com/N2PeVCcEwv
— Oversight and Anti-Corruption Authority (@nazaha_en) March 4, 2023