আর্কাইভ থেকে ভর্তি -পরীক্ষা

গুচ্ছভর্তি পরীক্ষায় না থাকার সিদ্ধান্তে এখনও অনড় জবিশিস

গোলমালের গুচ্ছভর্তি পরিক্ষায় না থাকার সিদ্ধান্তে অনড় অবস্থায় আছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি(জবিশিস)। শিক্ষকদের নিজস্বতা,ছাত্রদের হয়রানি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব মান টিকিয়ে রাখাসহ বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বুধবার ( ২২ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক লাউঞ্জে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এসব কথা তুলে ধরেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

একটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে নিজস্ব মান টিকিয়ে রাখার দাবীসহ বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে এবছরের শুরু থেকেই গুচ্ছবিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরিক্ষায় যেতে চাচ্ছে না জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সর্ববৃহৎ সংগঠনসহ সকলের অনুমোদন নিয়ে গুচ্ছে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে এখনও অনড় অবস্থায় আছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় না যাওয়ার পক্ষে সকলে সম্মতি দিয়েছেন।

অন‍্যদিকে গত ২০ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন  (ইউজিসি) ও শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সাথে গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ভিসিদের এক বিশেষ মিটিংয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় থাকার নির্দেশ প্রদান করেন।

তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি মনে করেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছে না থাকার বিষয়ে একাডেমিক কাউন্সিলে গৃহীত সিদ্ধান্তের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের ( ইউজিসি) মন্তব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ২০০৫ এর ৪০ নং ধারার সাথে সাংঘর্ষিক হবে।

এ সময় তারা বলেন, গত ১৫ই মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে সকলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হওয়ায় যে সিদ্ধান্ত হয়েছে সেই সিদ্ধান্তে তারা এখনো অটুট আছে বলে মন্তব্য করেন। একাডেমিক কাউন্সিলে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তা খুব দ্রুতই সিন্ডিকেট সভায় গৃহীত হয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে বলেও তারা মনে করেন।

লিখিত বক্তব্যে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ কে এম ড.লুৎফর রহমান বলেন, কোনো ধরণের গবেষণা ছাড়া তাড়াহুড়া করে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে প্রথম গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নানাবিধ শঙ্কার কারণে যেতে রাজি ছিল না। কিন্তু তৎকালীন প্রশাসন শিক্ষক সমিতির সিদ্ধান্তকে তোয়াক্কা না করে জোর করে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ঠেলে দেন। পরে দেখা যায় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধের বদলে হয়রানি আরো বহুগুণ বেড়ে যায়।

তিনি আরও বলেন,  গুচ্ছের মত একটি অদূরদর্শী প্রক্রিয়ার মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্ভুক্তির ফলে বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থানকে অবনমন করা হয়েছে। শুধু তাই নয় কিছু বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছের ভিতরে এবং কিছু বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছের বাইরে এটা একটা বৈষম্য নীতিও বলে মনে করেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ২০০৫ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা গ্রহনের ক্ষেত্রে একাডেমিক কাউন্সিল সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এ আইনের ৪০ নং ধারায় "বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও  অন্যান্য পাঠ্যক্রমে ছাত্রভর্তি একাডেমিক কাউন্সিল কর্তৃত এতদুদ্দেশ্যে নিজস্ব ভর্তি কমিটি কর্তৃক প্রণীত বিধি দ্বারা প্ররিচালিত হবে। "

এ সময় লিখিত বক্তব্য ছাড়াও তাদের পক্ষ থেকে মন্তব্য করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন যারাই ভঙ্গ করবে তাদেরই সেই দায়ভার নিতে হবে। মন্ত্রণালয় বা ইউজিসি যদি একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে অবহেলা বা আইনের পরিপন্থী কিছু করে তাহলে তার দায়ভার তাদেরই নিতে হবে।

 

একাডেমিক কাউন্সিলে নেয়া সিদ্ধান্তই বহাল থাকবে বলে মনে করেন জৈ‍ষ্ঠ‍্য প্রফেসররা। এরপরও যদি এ আইনের প্রতি অবহেলা বা তোয়াক্কা না করে তাহলে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় যে সিদ্ধান্ত হবে তাই বাস্তবায়ন করা হবে।

উল্লেখ্য, 'গুচ্ছে থাকা না থাকার প্রশ্নে' জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী না থাকার দাবী জানিয়ে শিক্ষক সমিতির এ সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন