আর্কাইভ থেকে ঢালিউড

রহমত উল্লাহর নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে শাকিবের মামলা

প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে এবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন চিত্রনায়ক শাকিব খান। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পরে আদেশ দেবেন বলে জানান।

সোমবার (২৭ মার্চ) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জুলফিকার হায়াতের আদালতে এ মামলা করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিবের আদালতে চাঁদাবাজি ও হত্যার হুমকির অভিযোগ এনে রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা করেন সুপারস্টার চিত্রনায়ক শাকিব খান। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ পরে আসামি রহমত উল্লাহকে আগামী ২৬ এপ্রিল আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেছেন। একইসঙ্গে আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আগামী ৬ জুন পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, চার বছর আগে চিত্রনায়ক শাকিব খান বাংলা ছায়াছবি ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ নামক ছবিতে অভিনয় করতে চুক্তিবদ্ধ হন। এ সিনেমায় নায়িকা হিসেবে শিবা আলী খানকে মনোনীত করা হয়। এ ছবির শুটিংয়ের জন্য ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট অস্ট্রেলিয়া যান শাকিব খান। শিবা আলী খান ভিসা জটিলতার জন্য শুটিং করতে অস্ট্রেলিয়া যেতে পারেননি। তার জায়গায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান রেনেসা সাবরিনের সঙ্গে শাকিবকে অভিনয় করার প্রস্তাব দেন রহমত উল্লাহ। তবে শাকিব তার ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে বিষয়টি নাকচ করে দেন।

মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, শুটিং শেষে শাকিবকে রিফ্রেশমেন্টের জন্য ক্লাবে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রেনেসা সাবরিনসহ আরও ২/৩ জন অপরিচিত লোক দেখতে পান শাকিব। মামলার আসামি রহমত উল্লাহসহ অন্যদের সঙ্গে একসঙ্গে ক্লাবে খাওয়া-দাওয়াসহ বিভিন্ন প্রকার পানীয় পান করেন। এক পর্যায়ে শাকিব অসুস্থবোধ করেন। হোটেলে ফেরত আসার সময় রহমত উল্লাহ এবং অন্যদের খোঁজ করেন সাকিব। তবে তাদের না পেয়ে রেনেসা সাবরিনের কাছে বিদায় নিয়ে গভীর রাতে হোটেলে ফিরতে চান শাকিব।

তখন রেনেসা সাবরিন বলেন, ‘আপনি যেহেতু অসুস্থবোধ করছেন, তাহলে আমি আপনাকে হোটেল রুমে পৌঁছে দিয়ে আসি।’ শাকিব অনেকটা নিরুপায় হয়ে তার প্রস্তাবে রাজি হন এবং হোটেল রুমের যেতে ক্লাব থেকে বের হন। হোটেলে ফেরার সময় বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে অজ্ঞান হয়ে যান শাকিব।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পরদিন সকালে আসামি রহমত উল্লাহ শাকিবকে ফোনে জানান যে, ‘তুমি রাতে ওই নারীর সঙ্গে কী করেছো সবকিছুর ভিডিও ক্লিপ আমার হাতে। তুমি যদি আমাকে এক লাখ ডলার চাঁদা না দাও তাহলে সব ভিডিও ক্লিপ এবং রেনেসা সাবরিনকে নিয়ে পুলিশের কাছে গিয়ে তোমার নামে অভিযোগ করবো। তাহলে তুমি বাংলাদেশে যেতে পারবে না।’

এই রকম বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখানো হলে এক পর্যায়ে শাকিব ভয় পেয়ে যান। শাকিব ভয়ে এবং তার ব্যক্তিগত জীবন ও পারিবারিক সমস্যার কথা চিন্তা করে আসামি রহমত উল্লাহকে ৫ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার দেন। পরবর্তীতে আসামি রহমত উল্লাহ তাকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে মোট ৪০ লাখ টাকা চাঁদা নিয়েছেন। এরপর আর চাঁদা দিতে না পারায় শাকিবকে জানানো হয় যে, তোমার নামে অস্ট্রেলিয়ায় অভিযোগ করা হয়েছে। চাঁদা দেয়া বন্ধ করে দিলে আসামি রহমত উল্লাহ বিভিন্ন জায়গায় যেমন- ইলেকট্রনিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া, বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এবং শাকিবের পরিবারের সদস্যদের কাছে মিথ্যাচার ও কুৎসা রটাতে থাকেন।

এরপর ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ রহমত উল্লাহ চিত্রনায়ক শাকিব খানের কাছে এক লাখ ডলার চাঁদা দাবি করেন ও প্রাণনাশের হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন