আর্কাইভ থেকে এশিয়া

নারী শিক্ষা অধিকারকর্মীকে গ্রেপ্তার করল তালেবান

আফগানিস্তানের একজন বিশিষ্ট নারী শিক্ষা অধিকারকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে তালেবান। একইসঙ্গে কিশোরি ও নারীদের শ্রেণিকক্ষে না আসতে বলা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি'র এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়।

ওই নারী শিক্ষা অধিকারকর্মীর নাম মাতুল্লাহ ওসা। ৩০ বছর বসয়ী এই ব্যক্তি আফিগানিস্তানের প্রত্যন্ত এলাকায় ঘুরে ঘুরে নারীদের শিক্ষার ব্যাপারে সচেতন করতেন। কিন্তু এ কাজ করতে গিয়ে তিনি তালেবানের বাধার শিকার হন।

তবে তাকে তালেবানের হেফাজতে নেয়া হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।

নারী শিক্ষার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন এমন বেশ কয়েকজন কর্মীকে আটক করার মধ্যেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

প্রফেসর ইসমাইল মাশাল, নারী শিক্ষার উপর নিষেধাজ্ঞার একজন স্পষ্টবাদী সমালোচক, বিনামূল্যে বই দেয়ার সময় ফেব্রুয়ারিতে তিনি কাবুলে গ্রেপ্তার হন। ৫ মার্চ তিনি মুক্তি পেলেও এরপর থেকে কোনো কথা বলেননি।

২০২১ সালে তালেবান নারী শিক্ষার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর থেকেই ওসা নারী শিক্ষার জন্য প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

তিনি টুইটারে সোমবার শেষবারের মতো টুইট করেন। এর পরের দিনই তাকে গেপ্তার করা হয়। টুইটে তিনি নারী সেচ্ছাসেবিদের একটি ছবি শেয়ার করেন। সেখানে তিনি জানতে চেয়েছেন ইসলাম কী নারী শিক্ষার অধিকান দেয়নি।

মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী প্রত্যাহারের পর ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে ধীরে ধীরে নারী অধিকার ক্ষুণ্ণ হতে থাকে।

শুধু ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে কিছু নারী-পুরুষ শিক্ষক দ্বারা মাধ্যমিক স্কুল চলছে।

২০২২ সালের মার্চে মেয়েদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির অনুমতি দেয়া হবে এমন একটি ঘোষণার পরে দেশটির নারীরা নতুন একটি আশা দেখেছিল। কিন্তু নেতৃত্বের আকস্মিক ইউ-টার্ন হওয়ার পর সে আশা ভেঙে যায় নারীদের।

তালেবানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি না করা পর্যন্ত এগুলো বন্ধ থাকবে।

শুধু তাই নয় নারীদের ক্ষেত্রে আরও কিছু নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে এমনভাবে পোশাক পড়তে হবে যেন চোখ ছাড়া অন্য কিছু দেখা না যায়। এছাড়া ৭২ কিলোমিটারের বেশি দূরে গেলে নিকট আত্মীয় কোনো পুরুষকে সঙ্গে নেয়া।

গত বছরের নভেম্বরে নারীদের পার্কে যাওয়া, জিম ও সাঁতার কাটার ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এছাড়া দেশটির বিভিন্ন প্রদেশ নারীদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন আইন জারি করা হয়েছে। যার ফলে দেশটির নারীরা ভয় এবং উদ্বিগ্নতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন