আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

আলু নিয়ে বিপাকে

আলু নিয়ে এখন বড় বিপাকে আছেন কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার কৃষক। আলুর দাম কমে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন হিমাগারে আলু মজুত করা কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। 

বাজার দর আনুযায়ী বর্তমানে প্রতি কেজি আলু পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৭-৮ টাকায়। গত বছর যেখানে পাইকারি বিক্রি হয়েছিল ২০ টাকা কেজি দরে।

জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে নভেম্বর মাসের শুরু থেকে হিমাগারে মজুত করা আলু বাজারে বিক্রি করে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বেশ লাভবান হতেন। এ বছর আলু উৎপাদন বেশি হওয়ায় বাজার পড়ে গেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

দাউদকান্দি উপজেলার কাদিয়ারভাঙা গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী নাছির উদ্দিন বলেন, চলতি বছর মাল্টা ও ডায়মন্ড জাতের ৫৫ কেজির ৫০ হাজার বস্তা আলু নৈয়ার সরকার আইস অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজে রেখেছি। ৫৫ কেজির প্রতি বস্তা আলু হিমাগারের ভাড়াসহ রাখতে খরচ আমার হয়েছে ৯৯০ টাকা। বর্তমান বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে ৩৮৫ থেকে ৪০০ টাকা। প্রতি ৫৫ কেজির বস্তায় লোকসান হচ্ছে ৫৯০ থেকে ৬০৫ টাকা।

নৈয়ার গ্রামের ব্যবসায়ী রফিক মিয়া ৬০০ বস্তা, আঞ্জু বেগম ১১৩, বীরবাগ গোয়ালী গ্রামের ইব্রাহিম ব্যাপারী ১২০০, নোয়াদ্দা গ্রামের শফিকুল ইসলাম ২৩৫, তিনপাড়া গ্রামের মেস্তাক সরকার চার হাজার বস্তা আলু নৈয়ার সরকার আইস অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজে রাখেন। কুমিল্লা ফুড অ্যান্ড অ্যালাইড হিমাগারে পেন্নাই গ্রামের দ্বীন ইসলাম ৯৯ হাজার বস্তা আলু রেখেছেন। বাজারে আলুর দাম না থাকায় তারা এখন অনেক বেশি লোকসানের মুখে পড়েছেন।

কুমিল্লা ফুড অ্যান্ড অ্যালাইড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপক আবদুস সালাম বলেন, তাদের হিমাগারে ১ লাখ ৮০ হাজার বস্তা আলু রাখার ব্যবস্থা আছে। চলতি বছর আলুর দাম কমে যাওয়ায় হিমাগারের মালিকেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আলুর দাম বর্তমানের চেয়ে আরও কমে গেলে অনেক ব্যবসায়ী হিমাগারের ভাড়া দিয়ে আলু উত্তোলন করবেন না। তখন হিমগারের মালিকেরা স্বাভাবিকভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

আলুর দাম নিয়ে কাদিয়ারভাঙা গ্রামের কৃষক নাসির উদ্দিন বলেন, গত বছর পাইকারি বাজারে আলুর দাম ছিল ২০ টাকা কেজি। আর খুচরা বিক্রি হয়েছে ৩০-৩৫ টাকায়। ফলে গত বছর বেশ লাভ হয়েছিল। এ বছর আলুর বাজার খুব খারাপ।

আলুর দাম কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন,  চাহিদার তুলনায় বেশি আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করা ও করোনাকালে বিধিনিষেধ, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, কওমি মাদরাসা, লিল্লাহ বোর্ডিং, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হল ও হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় এবং বিদেশে রপ্তানি করতে না পারায় হিমাগারে সংরক্ষিত আলু বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। এজন্যই ব্যবসায়ীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

এসএস/নভেম্বর

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন