আর্কাইভ থেকে ছাত্র-শিক্ষক

ইবিতে বাইক নিয়ে ঢুকতে নিষেধ করায় নিরাপত্তা কর্মকর্তা লাঞ্ছিত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বাইক নিয়ে ঢুকতে নিষেধ করায় প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ নিরাপত্তাকর্মীদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তরা হলেন স্নাতক ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের তরিকুল ইসলাম তরুন ও একই বর্ষের ইংরেজি বিভাগের সামিউল ইসলাম। তারা উভয়েই শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী বলে পরিচিত।

বুধবার বিকেল সোয়া ৫ টার দিকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিরাপত্তাকর্মীদের অভিযোগ, বিকেলের দিকে বাইক নিয়ে ছাত্রলীগ কর্মী তরুন ও সামিউল ক্যাম্পাসে প্রবেশের জন্য বাইক নিয়ে এসেছিলেন। তাদের সাথে স্থানীয় বহিরাগতরাও ছিল। এসময় মেইন গেট বন্ধ থাকায় তারা ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারছিলেন না। একপর্যায়ে গেট খুলতে তারা নিরাপত্তাকর্মীদের উপর চড়াও হন। নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের বাইক নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে নিষেধ করায় তাদের উপর মারতে উদ্যত হন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম সেলিম বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে মেইন গেট আমরা বন্ধ রাখি। এলাকার বিশ্ববিদ্যালয় তাই আমরা কিছু লোকজন ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেই। তারা পাশের পকেট গেট দিয়ে ঢোকে। কিন্তু মোটর সাইকেল এলাও করা হয় না। তবুও ছাত্রলীগের সেক্রেটারিসহ তাদের ছেলেপেলের রেফারেন্সে অনেকে মোটর সাইকেল নিয়ে ঢোকে। তাদের সাথে বাইরেরও (বহিরাগত) অনেক ছেলেপেলে আসে। ওদের ঢুকতে দিলে তো আরো আলাদা ২০/৫০টা বাইক ঢুকবে।

তিনি আরও বলেন, আজকে বিকেলেও তরুন আর সামিউল বাইক নিয়ে আসছিল। ওদের মোটর সাইকেল নিয়ে ঢুকতে বাঁধা দিলে আমার ও আমাদের আনসারদের সাথে তারা বাকবিতণ্ডায় জড়ায়। তাদের সাথে বহিরাগতরাও ছিল। একপর্যায়ে তরুণ আমাদের মারতে ধেয়ে চলে আসছিল। বিষয়টি প্রো-ভিসি, ট্রেজারার ও প্রক্টরকে জানিয়েছি। এরা ছাত্রলীগের সেক্রেটারির নাম করে প্রতিদিন ঝৈঝামেলা করতেছে।

এ বিষয়ে তরিকুল ইসলাম তরুন বলেন, শিক্ষার্থী পরিচয় দেয়ার পরেও তারা (নিরাপত্তাকর্মীরা) ক্যাম্পাসে ঢুকতে দিচ্ছিল না। তখন একটু কথাকাটাকাটি হয়েছে। এর বেশি কিছু হয়নি। পরে পাশের পকেট গেট দিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকেছিলাম।

আরেক অভিযুক্ত সামিউল ইসলাম বলেন, তেমন কোনো ঝামেলাই হয়নি। পরিচয় দেয়ার পরেও সেলিম ভাই বলছিল ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট ২৮ তারিখের পর। আমাদের সাথে এলাকার দুইজন বড় ভাই ছিল। পড়ালেখা শেষ হয়ে গেছে ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসছিল।

ইবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, শুনেছি বিষয়টা। তেমন কোনো ঝামেলাই হয়নি। আসলে এখন তো সব প্রবেশ নিষেধ। রানিং শিক্ষার্থী ওরা ওদের ঢুকতে দিচ্ছিল না। পরে কথা বলে ঠিক করে নেয়া হয়েছে।

তার রেফারেন্সে ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের এলাকায় তো ঘোরার জায়গা কম। ঈদের ছুটিতে যারা এসে আমার নাম বলে এটা তো সম্পূর্ণ প্রশাসনের ব্যাপার। আমার কাছে এমন ফোন আসলেও বলি যে, প্রশাসনের লোকজন আছে। ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ। বাইরে থেকে ঘুরে চলে চাও।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ঈদের ছুটিতে ক্যাম্পাসে অনেক লোকজন আসছে। তাই নিরাপত্তার স্বার্থেই মেইন গেট বন্ধ ও বাইক প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আজকের বিষয়টি শুনেছি। নিরাপত্তার জন্য তারা পরিবার ছেড়ে ক্যাম্পাসে আছে। যেখানে তাদের সহযোগিতা করা উচিত সেখানে এমন আচরণ দুঃখজন। আমি ক্যাম্পাসে এসে সবার সাথে বিষয়টি নিয়ে বসবো। এরপর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন