ঢামেকে রোগী ভাগিয়ে নিতে চিকিৎসক-দালালের তীব্র বাগবিতণ্ডা
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে নেয়ার চেষ্টায় এক চিকিৎসক ও এক দালালের মধ্যে তীব্র বাগবিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে। দুজনই ওই রোগীকে নিজের পছন্দের বেসরকারি হাসপাতালে নিতে চেয়েছিলেন। এ ঘটনায় হাসপাতালে চাঞ্চল্যের তৈরি হয়।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলের দিকে ঢামেক হাসপাতালের ২১২ নম্বর ওয়ার্ডের অপারেশন থিয়েটারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি স্বীকার করেছেন হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া। তিনি জানান, অন্য হাসপাতালের আইসিইউতে রোগী পাঠানো নিয়ে চিকিৎসক ও দালালের মধ্যে ঝগড়ার খবর পেয়েছি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল (২৬ এপ্রিল) ভর্তি হওয়া বৃষ্টি নামে এক গাইনি রোগীকে আইসিইউতে রেফার করেন ডা. নাজনীন মনি। এরপর ওই রোগীকে মোহাম্মদপুর কলেজ রোডের বেসরকারি টিজি হাসপাতালে পাঠানোর জন্য নোবেল নামে এক দালালকে ডাকেন তিনি।
এসময় সেখানে উপস্থিত থাকা বেসরকারি সুপার হাসপাতালের মার্কেটিংয়ের কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন দালাল নোবেলকে আসতে বাধা দেন। তিনি এ বিষয়ে ডা. মনির সঙ্গে তর্কে জড়ান।
তিনি বলেন, ‘আপনি ডাক্তার হয়ে কেন বেসরকারি (টিজি) হাসপাতালে রোগী পাঠাচ্ছেন। রোগীর যেখানে ইচ্ছা সেখানে যাবে।’
এরপর ডা. মনি বলেন, ‘আপনারা কি আমাদের কিছু দেন, আমরা আপনাদের কেন রোগী দেব?’
এ নিয়ে দালাল ও ডাক্তারের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ বাগবিতণ্ডা হয়। এসময় টিজি হাসপাতালের দালাল নোবেল উপস্থিত ছিলেন।
পরে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। বর্তমানে ওই রোগী (বৃষ্টি) ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেলে দায়িত্বরত আনসারের সহকারী প্লাটুন কমান্ডার (এপিসি) মো. মতিউর রহমান বলেন, ‘২১২ নম্বরে একটি ঘটনা ঘটে বলে আমরা খবর পাই। ঘটনাস্থলে গিয়ে রোগী ছাড়া অতিরিক্ত যারা ছিল তাদের সবাইকে বের করে দিই এবং পরিস্থিতি শান্ত করি।
বাগবিতণ্ডায় জড়ানো দালাল আলমগীর হোসেন বলেন, একজন ডাক্তার কেন বেসরকারি হাসপাতালে কমিশনের লোভে রোগী পাঠাবে? তার কাজ রোগীকে আইসিইউতে রেফার করা। রোগীর যেখানে ভালো লাগে সেখানে যাবে। ডা. মাহফুজের টিজি হাসপাতালে পাঠানোর জন্য এখানকার ‘ম্যাট-৫’-এর চিকিৎসকরা উদগ্রীব হয়ে থাকেন। তাদের স্বার্থ কী, কেন তারা এই হাসপাতালে পাঠাতে চান?
এ বিষয়ে জানতে ২১২ নম্বর ওয়ার্ডের চিকিৎসক ডা. নাজনীন মনিকে ফোন করলে তিনি রোগী ভাগানোর চেষ্টা বা বাগবিতণ্ডার বিষয়টি অস্বীকার করেন।