আর্কাইভ থেকে জাতীয়

বুদ্ধের জীবনাদর্শ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে : রাষ্ট্রপতি

আজকের এই অশান্ত ও অসহিষ্ণু বিশ্বে মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ, যুদ্ধ-বিগ্রহ, ধর্ম-বর্ণ-জাতিগত হানাহানি রোধসহ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মহামতি বুদ্ধের দর্শন ও জীবনাদর্শ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। বললেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

বৃহস্পতিবার (৪ মে) শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে গতকাল বুধবার (৩ মে) দেয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মৈত্রীময় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। মহামতি গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ ও মহাপরিনির্বাণ শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমার সাথে গভীরভাবে সম্পৃক্ত। মহামতি বুদ্ধ পৃথিবীকে সুখী ও শান্তিপূর্ণ করে গড়ে তোলার জন্য নিরন্তর প্রয়াস চালিয়েছেন।’

মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘বুদ্ধের চেতনায় ছিল দুঃখ জয়ের মাধ্যমে জীবের মুক্তি কামনা। মহামতি বুদ্ধ মানবজীবনে দুঃখ ও দুঃখের কারণ এবং তা নিবারণের উপায় সম্বন্ধে অন্তর্দৃষ্টি লাভ করেন, যা চতুরার্য সত্য নামে পরিচিত। চতুরার্য সত্য তত্ত্বে তিনি জীবনে দুঃখ, দুঃখের উৎপত্তি, দুঃখ ভোগের কারণ এবং তা থেকে মুক্তির পথ দেখান। তাঁর মতে নির্বাণ লাভের মাধ্যমে মানুষ জীবনের পরমার্থ অর্জন এবং সব প্রকার দুঃখ থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে পারে। এজন্য তিনি অষ্টমার্গ তথা প্রজ্ঞা, শীল ও সমাধি চর্চার উপদেশ দেন। তিনি স্থান-কাল-পাত্রের ঊর্ধ্বে উঠে পৃথিবীর সব জীবের কল্যাণ ও সুখ কামনা করেন।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘মহামতি বুদ্ধ একটি সৌহার্দ্য ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় আজীবন সাম্য ও মৈত্রীর বাণী প্রচার করে গেছেন। অহিংস পরম ধর্ম বুদ্ধের এই অমিয় বাণী আজও সমাজে শান্তির জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। প্রাচীনকাল থেকে বাংলার জনপদের সঙ্গে বৌদ্ধ সভ্যতা ও কৃষ্টি গভীরভাবে মিশে আছে। পাহাড়পুর ও ময়নামতি শালবন বিহার তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আবহমানকাল থেকে এ দেশের সব ধর্মের মানুষ তাদের নিজ নিজ ধর্ম ও আচার-অনুষ্ঠানাদি অত্যন্ত জাঁকজমকভাবে পালন করে আসছে যা আমাদের সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যের চর্চা ও বুদ্ধের মহান আদর্শকে ধারণ করে বৌদ্ধ সম্প্রদায় দেশের উন্নয়নে তাদের কর্মপ্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন এ প্রত্যাশা করি।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সব্বে সত্তা সুখীতা হোন্তু অর্থাৎ পৃথিবীর সব প্রাণি সুখী হোক, গৌতম বুদ্ধের শাশ্বত এ দর্শন আমাদের সমাজে শান্তির প্রতিফলন ঘটাবে এই কামনা করি।’

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন