ফরিদপুরে হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ফরিদপুরে জিয়া মোল্লা (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে তিন ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে দশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। জরিমানার অর্থ অনাদায়ে তাদেরকে আরও ৬ মাস সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের পশ্চিম গঙ্গাবর্দী গ্রামের বাসিন্দা মো. বাবলু সরদার (৪৬), শাহিন সরদার (৪০) ও জুবায়ের মোল্লা (৩০)।
বুধবার (১০ মে) দুপুর দেড়টার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক শিহাবুল ইসলাম এ আদেশ দেন। রায় প্রদানের সময় তিন আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাদের জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
গেলো ২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ফরিদপুর সদরের কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের পশ্চিম গঙ্গাবর্দী গ্রামে। হত্যার আট বছর পর বুধবার এ হত্যা মামলার রায় দেয়া হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর স্থানীয় গোবিন্দপুর গ্রামের বাজার থেকে মোটরসাইকেলে করে বাড়িতে ফিরছিলেন জিয়া মোল্লা (৩৫), তার চাচাতো ভাই জিয়া মাতুব্বর (৪৩) ও বন্ধু ইমন প্রামাণিক (৪৪)। তারা পশ্চিম গঙ্গাবর্ধী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে পৌঁছালে আগে থেকে ওত পেতে থাকা কয়েকজন ব্যক্তি তাদের উপর লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে মারাত্মক আহত হন জিয়া মোল্লা ও তার চাচাতো ভাই জিয়া মাতুব্বর। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে ওইদিন (৩০ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জিয়া মোল্লা মারা যান। পরদিন ১ অক্টোবর মৃতের বাবা মো. শাহিদ মোল্লা (৭৮) বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ ও ৬/৭ জনকে অজ্ঞাতনামা দেখিয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তীতে এ মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ফরিদপুরের পরিদর্শক মো. এমারত হোসেন ও মো. শাহজাহান মিয়া তদন্ত করেন। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক শেখ শাহ আলম তদন্ত করে ৯ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র প্রদান করেন। আদালতে প্রমাণিত না হওয়ায় অন্য আসামিদের বেকসুর খালাস দেন আদালত।
আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে ওই আদালতের পিপি সানোয়ার হোসেন বলেন, ১৮৬০ সালের ফৌজদারি আইনের ৩০২/৩৪ ধারায় এ রায় প্রদান করা হয়। এর ফলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুযোগ হবে এবং দেশে ও পরিবারে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে।