আর্কাইভ থেকে টুকিটাকি

গরম মশলাকে কেন ‘গরম’ বলা হয়? 

ভারতীয় এবং বাঙালি রান্নায় অতি পরিচিত উপকরণ হল গরম-মশলা। এটি একটি মশলা নয়। কয়েক ধরনের মশলার সমষ্টি। সেগুলি কী কী? মূলত, ছোট এলাচ, বড় এলাচ, লবঙ্গ, দারুচিনি, সাদা ও কালো মরিচ, জায়ফল, জয়িত্রি, জিরে এবং ধনে।

তবে কোনও কোনও জায়গায় এর বাইরে অন্য কিছু মশলাও এতে থাকে। যেমন তেজপাতা, শুকনো লঙ্কা, মৌরি, সরষে, স্টার অ্যানিশ, মেথি ইত্যাদি। কিন্তু একে গরম মশলা বলা হয় কেন? উত্তর লুকিয়ে রয়েছে আয়ুর্বেদে।

আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে গরম মশলা শরীরের তাপমাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই এই মশলার নামের সঙ্গে ‘গরম’ শব্দটি জুড়ে দেয়া হয়েছে। রান্নায় সুগন্ধ যোগ করতে এটি ব্যবহৃত হয়। সাধারণত রান্নার শেষে মশলা মেশানো হয়। তাতে সুগন্ধ বেশি পাওয়া যায়। তবে শুধু সুগন্ধ নয়, এর ফলে শরীরের অনেক উপকারও হয়। দেখে নেওয়া যাক, সেগুলি কী কী।

শরীর এবং ত্বকে বয়সের প্রভাব কম পড়ে: খাবারে গরম মশলা ব্যবহার হলে শরীরে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তার কারণে শরীর এবং ত্বকের বয়স কমতে শুরু করে। এর ফলে জৈবিক বয়স বাড়লেও শরীর এবং ত্বকের উপর তার প্রভাব কম পড়ে।

রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ে: একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত গরম মশলা খাওয়া শুরু করলে ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়তে পারে। ফলে একদিকে যেমন নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে, তেমনি কোনও ধরনের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে।

অ্যানিমিয়া কমে: গরম মশলায় থাকা জিরেয় রয়েছে প্রচুর মাত্রায় আয়রন।এটি লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন এত মাত্রায় বাড়িয়ে দেয় যে, রক্তাল্পতা দূর হতে সময় লাগে না। হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটাতেও এই উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

খাবার থেকে বেশি পুষ্টি পাওয়া যায়: আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বলা হয়েছে হজম ক্ষমতার উন্নতিতে গরম মশলা নানাভাবে কাজে লাগে। এই মশলা পাচক রসের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়।বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বলের মতো রোগের প্রকোপ কমে যেতে পারে। খিদেও বাড়ে এতে

শক্তি পাওয়া যায়: এই মশলা নিয়মিত খেলে শরীরের কর্মক্ষমতা বেড়ে যায়। এতে কাজ করার শক্তি বাড়ে। মন চনমনে থাকে।

মারণরোগকে দূরে রাখে: রান্নায় গরম মশলার ব্যবহার বাড়লে শরীরে ক্যানসার কোষের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা কিছুটা কমে যেতে পারে। এক জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে টানা ১০ দিন গরম মশলা খেলে শরীরের ভেতরে টক্সিক উপাদানের মাত্রা কমতে শুরু করে।

হার্টের ক্ষমতা বাড়ে: এই মশলাটি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে শুরু করে। সেই সঙ্গে হার্টে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বাড়িয়ে দেয়। ফলে হার্টের অসুখ অনেকটাই কমে যেতে পারে বা নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে।

ডায়াবিটিস কমতে পারে: রক্তে সুগারের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এই মশলায় থাকা দারুচিনি। এতে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। যাদের সুগার লেভেল একবারে বর্ডারে রয়েছে, তারা গরম মশলা খেলে উপকার পেতে পারেন।

কোষ্ঠকাঠিন্য কমে: গরম মশলা খাওয়া শুরু করলে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই অ্যাসিডিটির সমস্যা কমে। তাতে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা কমতে সময় লাগে না।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন