আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

বাসচাপায় শিক্ষার্থী নিহত, বিএনপি-জামায়াতের অপকর্মের পুনরাবৃত্তি কি না : কাদের

রাজধানীর রামপুরায় বাসের চাপায় ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনা নিছক দুর্ঘটনা নয়। এ ঘটনা বিএনপি-জামায়াতের অতীত সহিংস অপকর্মের পুনরাবৃত্তি কি না তা খতিয়ে দেখতে জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন। এটা কি নিছক দুর্ঘটনা নাকি পূর্ব পরিকল্পিত। খবরটি ছড়িয়ে পড়ার ১০ মিনিটের মধ্যেই প্রায় ১৫টি বাসে আগুন দেয়া শেষ হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে বিষয়টি আসলেই দুর্ঘটনা কি-না? বললেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ বুধবার (১ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটি আয়োজিত ‘ফাইভজি: দ্য ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি’শীর্ষক সেমিনারে নিজ বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ সব কথা বলেন।

সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, ওই কলেজ ছাত্রের মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাহত ও ব্যথিত।

তিনি বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য মতে ঘটনাটি ঘটে রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে, এর ১২ মিনিট পর ১০টা ৫৭ মিনিটে নিরাপদ সড়ক চাই ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে ওই স্থান থেকে লাইভ করা হয়। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে ১৭টি বাসে আগুন দেওয়া হয় এবং অসংখ্য গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

তিনি আরও বলেন, রাত ১১টায় জামায়াত পরিচালিত টেলিগ্রাম চ্যানেলে খবরটি প্রকাশিত হয় এবং দুর্ঘটনার স্থান থেকেই ইন্টারনেটে সমস্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবরটি ছড়িয়ে পড়ে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ঘটনার ১২ মিনিটেই নিরাপদ সড়ক চাই পেইজ লাইভে গেলো কীভাবে? নাকি তারা আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল? বাঁশের কেল্লা ১৫ মিনিটের মধ্যেই সব খবর পেয়ে গেল কীভাবে? আর বাকি ১০ মিনিটেই ১০টি গাড়িতে আগুন কীভাবে দেওয়া হলো?

তিনি বলেন, এতো জনবল রাত ১১টার পর ঘটনাস্থলে এলো কীভাবে? তাহলে তার কি আগেই প্রস্তুত ছিল? সেনাবাহিনী, পুলিশ বা ফায়ার বিগ্রেড ঘটনাস্থলে এতো তাড়াতাড়ি পৌঁছাতে পারে না যতটা দ্রুত গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। এতো রাতে অল্প বয়সী শিক্ষার্থীরা কি এতো দ্রুত পৌঁছে গেছে?

সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, এমনিতেই সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে আন্দোলন চলছে, যারাই দুর্ঘটনা কবলিত হচ্ছেন তারা সবাই শিক্ষার্থী। গাড়িতে কি ছাত্র ছাড়া অন্য আর যাত্রী থাকে না? এই ঘটনায় যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতে সরকার বদ্ধপরিকর।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিজয়ের মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা ৫জি যুগে প্রবেশ করবে। ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় দেশে ৫জি প্রযুক্তির সেবা পরীক্ষামূলকভাবে শুভ উদ্বোধন করবেন। সরকারি মোবাইল অপারেটর টেলিটকের মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ৫জি চালুর কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. হোসেন মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং উপ-কমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর এবং টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. সাহাব উদ্দিন বক্তব্য রাখেন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০১৮ সালে ঘোষিত বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশে ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে সর্বাধুনিক মোবাইল প্রযুক্তি সেবা ৫জি চালু করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ও বিটিআরসি নির্দেশনা মোতাবেক রাষ্ট্রীয় একমাত্র মোবাইল অপারেটর টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড প্রাথমিক পর্যায়ে বর্তমান ৪জি নেটওয়ার্কের সাথে সংযোগ স্থাপন পূর্বক সীমিত পরিসরে আগামী ডিসেম্বর মাসে ৫জি চালু করার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। প্রথমে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু সরকারি কার্যালয় ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানসমূহে সীমিত পরিসরে ৫জি সেবা চালু হবে। ২০২৩ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে এই সেবা দেশের অন্যান্য বিভাগীয় শহর ও শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্ভর এলাকাসমূহে বিস্তারের পরিকল্পনা রয়েছে।

তিনি বলেন, ৫জি প্রযুক্তি সেবা কেবল গ্রাহকের মোবাইল ব্রডব্যান্ড ও ভয়েস কলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শিল্প প্রতিষ্ঠান, সরকার ও এন্টারপ্রাইজ এবং ইউটিলি সার্ভিস প্রোভাইডাররা আইওটি, হিউম্যান টু মেশিন, মেশিন টু মেশিন ডিভাইস ব্যবহার করে ক্রিটিক্যাল মিশন সার্ভিস, স্মার্ট গ্রিড, স্মার্ট সিটি, স্মার্ট ফ্যাক্টরি সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে। মুজিব বর্ষে এটি একটি বিশাল উদ্যোগ। ৫জি প্রযুক্তির মাধ্যমে মোবাইল গ্রাহকরা অধিকতর উন্নত গুণগত মানের ভয়েস কল ও ৪জি হতে ২০ গুন দ্রুত মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারে সক্ষম হবেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন