আর্কাইভ থেকে আন্তর্জাতিক

ঘূর্ণিঝড় 'মোখা': মিয়ানমার মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৯

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‌‌‌‘মোখা’র আঘাতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ জনে। বঙ্গোপসাগরে উৎপন্ন হয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজার এবং মিয়ানমারের সিত্তের মধ্যবর্তী অঞ্চলে ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার বেগে রোববার (১৪ মে) সন্ধ্যায় আঘাত হানে মোখা, যা এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে উপকূলে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়।

সিত্তের উত্তর-পশ্চিমে খাউং ডোকে কার গ্রামে অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছে। রোহিঙ্গা শিবিরের এক নেতা বার্তা সংস্থা এএফপিকে এমনটি বলেছেন। তবে দেশটির জান্তা প্রতিশোধের ভয়ে নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, নিচু এলাকা, রোহিঙ্গা গ্রাম ও আইডিপি ক্যাম্পে আরও কয়েকজন নিখোঁজ থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তবে দেশটির সামরিক জান্তা সরকার এর আগে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মিয়ানমারে ঘূর্ণিঝড়ের কবলে কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছে এবং কিছু বাসিন্দা আহত হয়েছে। তবে বিবৃতিতে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

রাজধানী সিত্তের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্বরত টিন নিন ওও বলেছেন, সিত্তের তিন লাখ বাসিন্দাদের মধ্যে চার হাজারের বেশি মানুষকে অন্য শহরে সরিয়ে নেয়া হয়েছে এবং ২০ হাজারের বেশি মানুষকে মজবুত ভবনে আশ্রয় দেয়া হয়েছে।

স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন `রাখাইন ইয়ুথস ফিলানথ্রোপিক অ্যাসোসিয়েশন` এর এক নেতা বলেন, ` মিয়ানমারের কয়েকটি শহরের উচ্চভূমিতে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ২০ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তীব্র ঝড়ো বাতাসে তাদের মধ্যে ৭০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে।

রোববার সন্ধ্যার দিকে ঝড়টি শিথিল হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার আশ্রয়কেন্দ্র ঝড়ের আঘাত থেকে রক্ষা পায়। সেখানকার কর্মকর্তারা বলেছেন ঝড়ে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে কোন মৃত্যু হয়নি।

ঘূর্ণিঝড় মোখার শক্তি সিডারের কাছাকাছি ছিল। কিন্তু সিডারে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছিল, মোখার আঘাতে ততটা ক্ষতি হয়নি বলেই মনে করছেন কক্সবাজার প্রশাসন। উপকূলবর্তী অঞ্চলে ১২ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে প্রায় তিন লাখ মানুষের।

তবে ঝড়টি স্থলভাগে ঢোকার সময় গতি খানিকটা কমায়। মূল ঝাপটা মিয়ানমারের উপর দিয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের উপকূলবর্তী অঞ্চল খানিকটা হলেও বেঁচে গেছে।

প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিনে ৪২০টি নারকেলগাছসহ অন্তত ৩ হাজার গাছগাছালির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে আহত হয়েছেন ১১ জন। এ ছাড়া জলোচ্ছ্বাসে দ্বীপটির উত্তর পাড়া, পশ্চিম পাড়া ও পূর্ব দিকের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

সূত্র: এএফপি

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন