শিশু হামদানের গল্প সিনেমাকেও হার মানায়
অন্যের সন্তানকে নিজের সন্তান দাবি করে দ্বিতীয় স্বামীর সম্পত্তির অংশীদার হওয়ার জন্য ভুয়া বাবা সাজানোর অভিযোগে নারীকে আটক করেছে পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এমন ঘটনা ঘটেছে সাভারে।
সোমবার (১৫ মে) সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান।
তিনি জানান, ঢাকার সাভারের তালবাগ এলাকার এইচ এম দেলোয়ার হোসেন নামে এক ব্যাক্তির প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর ২০২১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর হালিমা বেগম নামে এক বিধবা নারীকে বিয়ে করেন। বিয়ের প্রায় তিন মাস পর হালিমা তার বাবার বাড়িতে অবস্থান করতে থাকে। এক পর্যায়ে স্বামী দেলোয়ারকে জানান যে, তিনি গর্ভবতী।
পরে তার স্বামীকে জানানো হয় ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর হালিমার গর্ভের সন্তান তার মায়ের বাড়িতে জন্ম হয়েছে। নবজাতকের নাম রাখা হয় রিয়াদুস সালেহীন ওরফে হামদান। এই ধারাবাহিকতায় হালিমা রিয়াদুস সালেহীন ওরফে হামদানকে নিয়ে গেলো ৭ অক্টোবর তার স্বামীর বাড়িতে ফিরে আসেন। সময়ের পরিবর্তনে রিয়াদুস সালেহীন ওরফে হামদান বড় হতে থাকে। তখন শিশুর চেহারা লক্ষ্য করে হালিমার স্বামী দেলোয়ারের মনে সন্দেহ হয় যে, হামদান তার ওরশের সন্তান নয়।
দেলোয়ার তার স্ত্রী হালিমাকে নানাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হালিমা স্বীকার করেন যে, হামদান তার গর্ভের সন্তান নয়। তিনি কৌশলে হামদানকে নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর থানা এলাকা থেকে এনেছেন।
ওই সন্তানের মাধ্যমে হালিমা তার স্বামীর সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হিসেবে প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন।
বিষয়টি জেনে গেলো ৫ মে হালিমার স্বামী দেলোয়ার হালিমাকে তালাক দেন। একই সঙ্গে বিষয়টি সাভার মডেল থানা পুলিশকে জানান।
পুলিশ অনুসন্ধান করে ও হালিমার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে জানতে পারে শিশুটির আসল পিতা-মাতা বগুড়া জেলার সান্তাহার উপজেলা এলাকায় থাকে। পরে সাভার মডেল থানা পুলিশ সেখানে গিয়ে শিশুর বাবা-মায়ের সন্ধান পায়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, তারা হতদরিদ্র, অস্বচ্ছল ও অসহায়। শিশুর মা অসুস্থ। এসব কারনে সন্তান নিখোঁজের বিষয়ে কোন খোঁজ খবর নিতে পারেন নি। পরে পুলিশ তাদেরকে ঢাকায় এনে হামদানকে তাদের কাছে হস্তান্তর করে।