বিমান কর্মকর্তা সেজে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ
জাবের হোসেন চৌধুরী ওরফে জাহিন চৌধুরী বেকার হলেও নিজেকে সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্মকর্তা পরিচয় দিতেন। লোকজনকে চাকরি দেয়া, স্বর্ণের বার ও কম মূল্যে গাড়ি নিয়ে দেয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। টাকা পয়সা আছে এমন বয়স্ক ও বিধবা নারীদের টার্গেট করে টাকা হাতিয়ে নিতেন। সাকিনা মল্লিক (৫৬) নামের এক নারীর করা মামলায় অবশেষে রাজধানীর রামপুরা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর) এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্পেশাল ব্রাঞ্চের পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তিনি জানান, জাবের হোসেন চৌধুরী হযরত শাহজালাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের ‘অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অডিট (অ্যাডমিন অ্যান্ড প্ল্যানিং হেড অব দ্য ডিপার্টমেন্ট) হেডকোয়ার্টার্স অ্যান্ড ভিভিআইপি টার্মিনালের কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণা করতেন। সাকিনা মল্লিক (৫৬) নামে এক নারী মিরপুর মডেল থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেন।
তিনি আরও জানান, পেশায় একজন শিক্ষক, ওই নারী গেলো ২৮ জানুয়ারি একটি অনলাইন গ্রুপের সঙ্গে নিঝুম দ্বীপে বেড়াতে যান। ওই গ্রুপের সদস্য হিসেবে আসামি জাহিন চৌধুরীর (৪০) সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে মোবাইল ফোন ও হোয়াটস অ্যাপে নিয়মিত তাদের যোগাযোগ হতো। অনলাইন গ্রুপের সদস্যদের সঙ্গে আরও বেশ কয়েকটি স্থানেও বেড়াতে যান তারা। সিলেট থেকে ফেরার কিছুদিন পর আসামি জাহিন চৌধুরী ওই নারীকে জানান, চাকরির সুবাদে তাকে ৮৫ লাখ টাকার গাড়ি দেয়া হবে যার বিপরীতে সমপরিমাণ টাকার ব্যাংক স্টেটমেন্ট অফিসে জমা দিতে হবে। কিন্তু তার ২৮ লাখ টাকা কম আছে এবং তার কাছে এই টাকা ধার হিসেবে নিতে চায়।
জাহিন গেলো ২৮ মার্চ ৭২ ঘণ্টার জন্য ফান্ড ট্রান্সফারের অনুরোধ করলে ওই নারী রাজি হয়ে ১১ লাখ টাকা ট্রান্সফার করেন। টাকা ফেরত দেয়ার কথা থাকলেও আসামি টাকা ফেরত দিতে টালবাহানা করতে থাকেন এবং যোগাযোগ করলে মোবাইল বন্ধ পান। পরে হযরত শাহজালাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে যেগাযোগ করে ওই নারী জানতে পারেন জাহিন চৌধুরী নামে সেখানে কেউ চাকরি করেন না। পরে মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা করেন তিনি।
পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা আরও জানান, তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে পিবিআইয়ের একটি বিশেষ টিম ঢাকা মহানগরীর রামপুরা থানা সংলগ্ন ওমর আলী লেনে বর্তমান বাসা থেকে জাহিন চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়। সাকিনা মল্লিককে প্রতারিত করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার কথা স্বীকার করেন জাহিন।
জাহাঙ্গীর আলম আরও জানান, এর আগে প্রতারণার মামলায় চট্টগ্রামের হালিশহর থানায় গ্রেফতার হন জাহিন এবং জামিনে মুক্ত হয়ে একইভাবে বিভিন্ন লোকদের প্রতারিত করে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে লক্ষীপুর সদর থানা ও চট্টগ্রামের হালিশহর থানায় মামলা রয়েছে।