আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

‘মনের শক্তি ফুড়িয়ে এলে দেহের শক্তি যতই থাকে সম্ভব না বাঁচা’

ছাত্রাবাস থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গেলো বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দিবাগত রাত ১২টার পর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর এলাকার 'স্টুডেন্ট প্যালেস' নামের একটি ছাত্রাবাস থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের সময় তার কক্ষ থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে।

নিহত মো. তানভীর ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি নীলফামারী সদর থানার কাঞ্চন পাড়া এলাকার আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডি দড়ি দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে (তানভীর ইসলাম) পাওয়ার পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসি। পরে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি আর‌ও বলেন, তানভীরের ঘরে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। যেখানে কাউকে দোষারোপ না করে স্বেচ্ছায় মৃত্যু লেখা রয়েছে। হাসপাতালে এখন পোস্টমর্টেম করা হবে। পরে আমরা মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবো।

তানভীরের লেখা দাবি করা চিরকুটটিতে লেখা আছে, ‘প্রিয় বাবা-মা, আপনাদের অনেক ভালোবাসি। জানি না কোথায় কমতি ছিল। আম্মুর জন্য বেশি খারাপ লাগছে। আমাদের ফ্যামিলিতে আম্মুর অবদানই বেশি বলে আমি মনে করি। কথাটা বলার অনেক কারণ আছে। সেটা আব্বু জানে। তোমাদের জন্য কিছু করতে তো পারলামই না। উল্টো ফ্যামিলিকে শেষ করলাম। ছোট বোনটার কথা আর বললাম না। কান্না পাচ্ছে।’

সেখানে আরও লিখা আছে, ‘দিনের পর দিন আপনাদের ঠকিয়ে গেছি। এসব আপনারা জানতে পারলে হয়তো ভেতর থেকেই মরে যেতেন। সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকতাম। গলা দিয়ে খাবার নামতো না। শেষ করলাম সবকিছু। এসব কিছু থেকে বাঁচার জন্য এ সিদ্ধান্ত। আর কোনো উপায় ছিল না আমার কাছে। শেষমেষ একাকীত্ব আমাকে গিলে খেলো। মনের শক্তি ফুড়িয়ে এলে দেহের শক্তি যতই থাকে সম্ভব না বাঁচা। যদিও ক্ষমার যোগ্য না আমি, পারলে ক্ষমা করে দিয়েন। আপনাদের অযোগ্য সন্তান।’

নগরীর মতিহার থানার এসআই (উপ-পরিদর্শক) মফিজুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় তার হাতে লেখা একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করি আমরা। তার মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনো জানতে পারিনি। ময়নাতদন্ত শেষে জানা যাবে।

এএম

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন