জাম খেলে কী কী উপকার হতে পারে?
কর্মসূত্রে প্রতি দিনই বাসে করে এসে ফার্মগেট নামতে হয় রাখিকে। গলদঘর্ম হয়ে, হাঁপাতে হাঁপাতে রাস্তা পার হতে চোখ যায় ফুটে বসা ফলবিক্রেতার দিকে। দু’-একরকম মৌসুমি ফলের সঙ্গে এক ঝুড়ি জাম নিয়ে প্রায় রোজই বসছেন ইদানীং। রাখির বাবা ডায়াবিটিসের রোগী। তাই পুষ্টিবিদের পরামর্শ মতো জামের খোঁজ চলে প্রায়ই। দেখতে পেয়েই আড়াইশো গ্রাম কিনে ব্যাগে পুরে নিয়েছেন তিনি। তবে রাখি জাম খেতে মোটেই ভালবাসেন না। তার চেয়েও বড় কথা, এত দিন তার ধারণা ছিল, শুধু মাত্র রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার জন্যেই বোধ হয় জাম খেতে হয়। তবে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণ করা তো বটেই, শরীরের আরও নানা উপকারে লাগে জাম। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে ভিটামিন সি এবং আয়রনে ভরপুর জাম রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে শরীরে রক্ত সঞ্চালনও ভাল হয়। রক্তের মাধ্যমে দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন পৌঁছলে শারীরবৃত্তীয় কাজ কর্ম সঠিক হয়। ব্রণের সমস্যা দূর করে জামের মধ্যে রয়েছে ‘অ্যাস্ট্রিঞ্জেন্ট’ জাতীয় একটি উপাদান। যা তৈলাক্ত ত্বক থেকে অতিরিক্ত সেবাম ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে ব্রণের সমস্যা দূর হয়। চোখের যত্নে চোখের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হল ভিটামিন এ। জামের মধ্যে এই ভিটামিন রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে। তাই চোখ ভাল রাখতে গেলে যে কয়েকটা দিন জাম পাওয়া যায়, খেয়ে নেয়াই ভাল। হার্টের জন্য ভাল ১০০ গ্রাম জাম থেকে পটাশিয়াম পাওয়া যায় প্রায় ৫৫ গ্রাম। হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে পটাশিয়াম। হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ধমনী সংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে জাম খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদেরা। মাড়ির সমস্যায় মাড়ি থেকে রক্ত পড়া বা দাঁতের সমস্যা মেটাতেও কার্যকরী জাম। এ ক্ষেত্রে জাম খাওয়ার পাশাপাশি জামের গুঁড়ো মাজন হিসেবে ব্যবহার করলেও উপকার পাওয়া যায়।
সূত্র: হেলথ লাইন