যে চুক্তিতে মসনদ বাঁচলো পুতিনের
ক্রেমলিনের সঙ্গে সমঝোতার পরিপ্রেক্ষিতে মস্কো অভিমুখে অভিযান বন্ধ করে পিছু হটছে ওয়াগনার গ্রুপ। এরই মধ্যে ভাড়াটে বাহিনীর সৈন্যরা রাশিয়ার দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় রোস্তভ-অন-ডন শহরের সামরিক সদর দপ্তর ত্যাগ করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে ওয়াগনার সৈন্যদের শহর ছাড়তে দেখা গেছে।
রোববার (২৫ জুন) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সিএনএন’র এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে আলোচনার পর দৃশ্যত ক্রেমলিনের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছেছেন ওয়াগনার প্রধান ইভজেনি প্রিগোজিন। তবে এই বিষয়ে খুব সামান্যই তথ্য দিয়েছে পুতিন প্রশাসন।
এক নজরে দেখে নেয়া যাক কোন কোন শর্তে মস্কো অভিযান বন্ধ করলো ওয়াগনার-
প্রিগোজিনকে বেলারুশে পাঠানো হবে
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রিগোজিনকে কথা দিয়েছেন, তিনি রাশিয়ায় ছেড়ে বেলারুশে যেতে পারবেন। যদিও প্রিগোজিনকে রোস্তভ-অন-ডন ছেড়ে যেতে দেখা গেছে, তবে তার বর্তমান অবস্থান অজানা।
মামলা প্রত্যাহার
পেসকভ জানিয়েছেন, চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য প্রিগোজিনের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন লুকাশেঙ্কো। সমঝোতা অনুসারে, ওয়াগনার প্রধানের বিরুদ্ধে সবধরনের ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করা হবে।
ঘাঁটিতে ফিরবে ওয়াগনার
ওয়াগনার যোদ্ধাদের সঙ্গে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চুক্তি হবে। চুক্তি মোতাবেক, তারা নিজ নিজ ঘাঁটিতে ফিরে যাবে এবং মস্কোমুখী অভিযানে অংশ নেওয়ায় কোনো আইনি পদক্ষেপের মুখোমুখি হবে না।
বিদ্রোহের সূত্রপাত
প্রিগোজিনের সঙ্গে কয়েক মাস ধরেই রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দ্বন্দ্ব চলছে। গত শুক্রবার (২৩ জুন) তিনি অভিযোগ করেন, তার বাহিনীর ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে মস্কো। এর কঠিন প্রতিশোধ নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ওয়াগনার প্রধান।
এক অডিওবার্তায় প্রিগোজিন ঘোষণা দেন, রুশ নেতৃত্বকে ক্ষমতাচ্যুত করতে প্রয়োজনীয় সব কিছু করবেন তারা। আর এই পথে যা কিছু বাধা হয়ে দাঁড়াবে সেগুলো ধ্বংস করে দেয়া হবে।
সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ টেলিগ্রামে প্রকাশিত বার্তায় প্রিগোজিন জানান, তার বাহিনী ইউক্রেন ছেড়ে রাশিয়ার সীমান্তবর্তী শহর রোস্তভ-অন-ডনে প্রবেশ করেছে। এছাড়া, রুশ বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
একপর্যায়ে রোস্তভে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সামরিক সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নেয় ওয়াগনার গ্রুপ। এই ঘটনাকে ‘পিঠে ছুরিকাঘাত’ উল্লেখ করে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারি দেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। ফলে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আরও সহিংসতার দিকে এগিয়ে যেতে থাকে।
এরই মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশিয়ান প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো। তিনি প্রিগোজিনের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। এরপরই পিছু হটতে শুরু করে ওয়াগনার বাহিনী।