আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

বিদেশি ব্যাংকের কার্ড ক্লোন করে ঢাকায় বুথ থেকে টাকা তোলার চেষ্টা

বাংলাদেশের ইস্টার্ন ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়েছে এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তুর্কি এক নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

হাকান জানবারকান নামের ৫৫ বছর বয়সী ওই তুর্কি নাগরিককে মঙ্গলবার গুলশান-১ থেকে গ্রেফতার করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।

সিটিটিসি বলছে, হাকান জানবারকান আন্তর্জাতিক এটিএম কার্ড ক্লোন চক্রের সদস্য। তার এক বাংলাদেশি সহযোগিকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।  

আজ বুধবার ( ১৯ জানুয়ারি ) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে  হাকানকে গ্রেফতার ও তার বিষয়ে কথা বলেন সিটিটিসির প্রধান আসাদুজ্জামান।

সিটিটিসি বলছে, রাজধানী ঢাকাতে ইবিএলের বুথ ব্যবহার করে শতাধিক বার টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করা হয়েছে। তবে ইবিএল অ্যান্টি স্ক্যামিং সফটওয়্যার ব্যবহার করায় টাকা উত্তোলন চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তবে বিষয়টি টের পেয়ে যায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তারা বিষয়টা পুলিশকে জানায়। এরপর পুলিশ তাকে গ্রেফতারে মাঠে নামে।  

হাকান জানবারকান এটিএম কার্ড ক্লোনিংয়ের দায়ে ২০১৯ সালে ভারতে একবার গ্রেফতার হয়েছিলেন জানিয়ে আসাদুজ্জামান বলেন, কারারক্ষীদের হেফাজতে ভারতের আসামের জিবিপি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তিনি পালিয়ে যান। এরপর ভারত থেকে নেপালে যান। নেপাল থেকে আউটপাস নিয়ে তিনি যান তুরস্কে। ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশে এটিএম কার্ড ক্লোনিং করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

হাকানের সঙ্গে তার যে সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে তার নাম মফিউল ইসলাম।  গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি বিভিন্ন মডেলের ফোন, একটি ল্যাপটপ, ১৫টি ক্লোনিং এটিএম কার্ডসহ মোট ১৭টি কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।

 সিটিটিসিপ্রধান বলেন, ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশে এই তুরস্কের নাগরিক একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। ভারতে ২০১৯ সালে বাংলাদেশি সহযোগি শহিদুল ইসলামসহ গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে হাকান পালিয়ে যেতে পারলেও শহিদুল এখনও ভারতের কারাগারে রয়েছেন। শহিদুলের ভাই মফিউল ইসলাম।  তারা সবাই মিলে এই এটিএম কার্ড ক্লোনিং করে থাকে।

গত ৩১ ডিসেম্বর হাকান জানবারকান বিজনেস ভিসা নিয়ে ঢাকা আসেন। তার একাধিক পাসপোর্ট রয়েছে। তিনি একেকবার একেক পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিদেশ ভ্রমণ করেন। 

আসাদুজ্জামান বলেন, ঢাকায় আসার পর তুরস্কের এই নাগরিক ২ থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ইস্টার্ন ব্যাংকের বিভিন্ন বুথে গিয়ে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, ইউএসএ, ভারত, তুরস্ক, সৌদি আরব, অস্ট্রিয়া, জার্মানি, ভিয়েতনাম, যুক্তরাজ্য, কানাডা, বলিভিয়া, স্পেন, ফিনল্যান্ড, নরওয়েসহ প্রায় ৪০টি দেশের নাগরিকদের ক্লোন করা ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কমপক্ষে একশবার টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করেছেন। কার্ডগুলো তিনি বিদেশ থেকেই ক্লোন করে নিয়ে আসেন বলে আমরা ধারণা করছি।

এই চক্রের সঙ্গে তুরস্ক, বুলগেরিয়া, মেক্সিকো, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক জড়িত বলেও প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন হাকান জানবারকান।

কার্ড ক্লোনিংয়ের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে পল্টন থানায় ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।


এসআই/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন