লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি অভিবাসীকে হত্যার এক আসামি গ্রেপ্তার
বাংলাদেশি ২৬ অভিবাসীকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সন্দেহভাজন এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে লিবিয়া। দীর্ঘদিনের তদন্তে বর্বরোচিত ওই ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তি জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে বলে নিশ্চিত করেছে লিবীয় অপরাধ তদন্ত বিভাগ।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) লিবীয় সংবাদমাধ্যম লিবিয়া অবজার্ভারের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য মতে, লিবিয়ার অপরাধ তদন্ত বিভাগ জানিয়েছে, তাদের নিরাপত্তা দল ত্রিপোলির দক্ষিণাঞ্চল থেকে গুরুতর সব অপরাধ করা অন্যতম বিপজ্জনক পলাতক এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। এতে সহযোগিতা করেছে আজিজিয়া অপরাধ তদন্ত ইউনিট। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ডাকাতি, হত্যা, অস্ত্রের জোরে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও একটি বেসরকারি ব্যাংক বন্ধ করে দেয়া, কর্মীদের ভয় দেখানো ও ক্ষতি করাসহ অন্তত ৯টি অভিযোগ রয়েছে।
২০২০ সালের মে মাসে লিবিয়ায় ৩০ জন অভিবাসীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এর মধ্যে ২৬ জনই বাংলাদেশি, অন্য চারজন আফ্রিকান অভিবাসী। সাহারা মরুভূমি অঞ্চলের মিজদা শহরের এ ঘটনায় আরও ১১ জন আহত হন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, বাংলাদেশিসহ ওই অভিবাসীদের মিজদা শহরের একটি জায়গায় টাকার জন্য জিম্মি করে রেখেছিল মানবপাচারকারী চক্র। এ নিয়ে একপর্যায়ে চক্রের সদস্যদের সঙ্গে মারামারি হয় অভিবাসীদের। এতে এক মানবপাচারকারী মারা যায়। তার প্রতিশোধ নিতে সেই পাচারকারীর পরিবারের লোকজন অভিবাসীদের দিকে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে ২৬ জন প্রাণ হারান।
মুয়াম্মার গাদ্দাফির সময় থেকে তেলনির্ভর অর্থনীতির দেশ লিবিয়া উন্নয়নশীল দেশগুলোর অন্যতম বড় শ্রমবাজার। আরব বসন্তের জেরে গাদ্দাফির পতনের পর গৃহযুদ্ধ বেঁধে গেলে লিবিয়ার শ্রমবাজারও ধাক্কা খায়। একপর্যায়ে দেশটি হয়ে ওঠে ইউরোপে পাড়ি দেওয়ার প্রধানতম রুট। লিবিয়ার জাতীয় সরকার পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থন পেলেও সেখানে বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। ক্ষমতার সংঘাতে দেশটিতে প্রায়ই বেসামরিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এশিয়া-আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে লিবিয়া হয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি- পুরো রুটে মানবপাচারকারী বিশাল চক্র সক্রিয় রয়েছে।
এস