স্বামীর হাতুড়ির আঘাতে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর মৃত্যু
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে স্বামীর হাতুড়ির আঘাতে অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্ ওই ব্যাক্তির নাম- সেলিনা বেগম (৩৮)।
আজ সোমবার (৩১ জুলাই) দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের ঝগড়ারচর পশ্চিমপাড়ার ছলিম সরকারের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২৩ বছর আগে উপজেলার টানকৃঞ্চ গ্রামের জাহের মিয়ার মেয়ে সেলিনা বেগমের সঙ্গে কালিকাপ্রসাদ এলাকার মৃত মুসলিম মিয়ার ছেলে ফয়েজ উদ্দিনের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই স্বামীর সঙ্গে স্ত্রী নানা বিষয় নিয়ে ঝগড়া হতো। গেলো রবিবার রাত ১টার দিকে ফয়েজ উদ্দিনের সঙ্গে সেলিনা বেগমের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। তাদের মধ্য কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ফয়েজ উদ্দিন ঘরে থাকা হাতুড়ি ও জুতা তৈরি করার লহঙ্গা দিয়ে মাথায় আঘাত করে গুরুতর আহত করেন। পরে ঘটনাস্থলেই অতিরিক্ত রক্তকরণে গৃহবধূর মৃত্যু হয়।
নিহতের ভাই নাহিদ হোসেন বলেন, আমার বোনের সঙ্গে তার স্বামী ফয়েজ উদ্দিনের প্রায়ই নানা বিষয়ে নিয়ে ঝগড়া হতো। তিনি আমার বোনের কাছে যৌতুকের টাকা এনে দিতে বলতেন। এসব বিষয়ে নিয়ে আগেও কয়েকবার ঝগড়ায় বোনের মাথা ফাটিয়ে দেয়। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করছি।
নিহত সেলিনা বেগমের ছেলে জীবন আহমেদ রোমান মিয়া বলেন, আমি ঢাকায় একটি জুতার কারখানায় কাজ করি। রাতের দিকে আমার বাবা আমাকে মুঠোফোনে কল দিয়ে জানায় তোর মা মারা গেছে। এই খবর পেয়ে আজ ভোরে ঢাকা থেকে ভৈরবে এসে মাকে মৃত দেখতে পায়। আমার বাবা প্রায়ই আমার মাকে শারীরিক ও মানুষিকভাবে নির্যাতন করতেন। আমাকে লেখাপড়া না করিয়ে ঢাকায় জুতার কারখানায় কাজে পাঠিয়ে দেয়। কিছু দিন পূর্বেও আমার বাবা মাকে মারধর করে তার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিলো। আমার মায়ের হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম জানান, খবর পেয়েই রাতেই ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে। স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে পরর্বতী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।