প্রায় ২৯ ঘণ্টা পর আলোর মুখ দেখলেন ভিসি
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বাসভবনে প্রায় ২৯ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎসংযোগ সচল করেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
গতকাল সোমবার (২৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টার পর এ সংযোগ চালু করে দেন তারা।
অন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, ভিসির বাসার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করায় এর পেছনে থাকা অর্ধশতাধিক কর্মচারির বাসারও সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। তারা রোগীদের অসুবিধাসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা জানালে সংযোগ সচল করা হয়।
গত কয়েকদিন ধরে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলন চলছে শাবিপ্রবিতে। আন্দোলনের অংশ হিসেবেই উপাচার্যের বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এদিকে, সোমবার ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বাসভবনে শিক্ষকরা খাবার নিয়ে প্রবেশ করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, প্রয়োজনে তারাই খাবার সরবরাহ করবেন।
এর আগে, রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ভিসির পদত্যাগের দাবিতে মশাল মিছিল ও কুশপুতুল দাহ করেন। বিকেল থেকে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে মানবপ্রাচীর তৈরি করে অবস্থান নেন।
এরপর সোমবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে সরেজমিনে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা মানবপ্রাচীর তৈরি করে রেখেছেন। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না তারা।
এর আগে শনিবার দিবাগত রাতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ভার্চুয়ালি আলোচনা করেন। তবে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে অনড় থাকেন। আলোচনায় কোনো সমাধান আসেনি।
শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সূত্রপাত ১৩ জানুয়ারি। সেদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েকশ ছাত্রী। গত শনিবার ছাত্রীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ।
পরদিন বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও তাদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। ওই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও হল ছাড়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও হল ছাড়ার ঘোষণা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকাসহ রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, খুলনা ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ।
তাসনিয়া রহমান