আর্কাইভ থেকে আইন-বিচার

আইডিয়ালের ওই ছাত্রীকে বাবার জিম্মায় দিতে রিট

৬০ বছর বয়সী খন্দকার মুশতাক আহমেদকে বিয়ে করা মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রীকে বাবার জিম্মায় নিতে রিট করা হয়েছে।

রোববার (২০ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এটি দায়ের করেন মেয়ের বাবা মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। রিটকারীর আইনজীবী ইউনূস আলী আকন্দ রিটের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

এর আগে, গেলো বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির দাতা সদস্য মুশতাক আহমেদকে বিয়ে করা আইডিয়ালের ছাত্রীকে নিরাপদ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি অভিযুক্ত মুশতাককে আগাম জামিন দেন আদালত।

সেদিন আদালত বলেন, আইডিয়ালের ছাত্রীর বয়স নিয়ে আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। তাই ওই ছাত্রীর বয়স নির্ধারণ করা জরুরি। বয়স নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত ভিকটিম ছাত্রী নারী ও সমাজসেবা অধিদফতরের অধীনে সেইফ হোমে (নিরাপদ হেফাজতে) থাকবে।

এদিকে, ছাত্রীকে প্রলোভন ও ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় খন্দকার মুশতাক আহমেদকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন দেন।

এর আগে, হাইকোর্ট আসামি খন্দকার মুশতাক আহমেদ, আইডিয়ালের ছাত্রী ও তার বাবার বক্তব্য শোনেন।

১৬ আগস্ট এ মামলায় খন্দকার মুশতাক আহমেদের জামিন আবেদন শুনতে অপারগতা প্রকাশ করেছিলেন হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ। বিচারপতি আবু তাহের সাইফুর রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ অপারগতা প্রকাশ করে জামিন আবেদনটি ফেরত দেন।

গেলো (১ আগস্ট) কলেজ ছাত্রীকে প্রলোভন ও ধর্ষণের অভিযোগে রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির দাতা সদস্য মুশতাক আহমেদকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। মামলার অন্য আসামি হলেন ওই কলেজের অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদী। ওই ছাত্রীর বাবা মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, তার মেয়ে (ভুক্তভোগী) মতিঝিল আইডিয়ালের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। আসামি মুশতাক বিভিন্ন অজুহাতে কলেজে আসতেন এবং ভুক্তভোগীকে ক্লাস থেকে প্রিন্সিপালের কক্ষে ডেকে আনতেন। খোঁজ-খবর নেওয়ার নামে আসামি ভুক্তভোগীকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে প্রলুব্ধ করতেন। কিছুদিন পর আসামি মুশতাক ভুক্তভোগীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কু-প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় ভুক্তভোগীকে তুলে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে এবং তাকে ও তার পরিবারকে ঢাকা ছাড়া করবে বলে হুমকি দেন।

ভুক্তভোগী এ রকম আচরণের বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষকে (২ নম্বর আসামি) ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন। তিনি (অধ্যক্ষ) ব্যবস্থা করছি বলে আসামি মুশতাককে তার রুমে নিয়ে আসেন এবং ভুক্তভোগীকেও ক্লাস থেকে নিয়ে এসে রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে আসামিকে সময় ও সঙ্গ দিতে বলেন।

এ বিষয়ে বাদী ২ নম্বর আসামির কাছে প্রতিকার চাইতে গেলেও কোনো সহযোগিতা করেননি। বরং আসামি মুশতাককে অনৈতিক সাহায্য করে আসতে থাকেন। বাদী উপায় না পেয়ে গত ১২ জুন ভুক্তভোগীকে ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়িতে নিয়ে গেলে আসামি মুশতাক তার লোকজন দিয়ে ভিকটিমকে অপহরণ করে নিয়ে যান। এরপর বাদী জানতে পারেন আসামি তার মেয়েকে একেক দিন একেক স্থানে রেখে অনৈতিক কাজে বাধ্য করেছেন এবং যৌন নিপীড়ন করছেন।

এএম/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন