আর্কাইভ থেকে অপরাধ

সাবেক স্বামীর পরিকল্পনায় যুগ্ম কর কমিশনারকে অপহরণ

রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক নারী যুগ্ম কমিশনারকে (৪৯) অপহরণের পর নির্যাতনের ঘটনায় প্রধান আসামি মাসুমসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

শুক্রবার (২৫ আগস্ট) দিবাগত রাতে তাদের গাজীপুরের শ্রীপুর ও রাজধানীর সবুজবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাবের একটি দল।

আজ শনিবার (২৬ আগস্ট) রাজধানীর কাওরানবাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

খন্দকার আল মঈন জানান, গেলো ১৭ আগস্ট রাত আট টা ত্রিশ মিনিটের সময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের একজন যুগ্ম কর কমিশনারকে রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে কতিপয় দুর্বৃত্ত অপহরণ করে। পরের দিন প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর রাজধানীর মাদারটেক এলাকা থেকে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে। পরে ভিকটিম তার সাবেক গাড়ি চালক ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে রমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখা রাজধানী ঢাকা এবং গাজীপুর অভিযান চালিয়ে সাবেক ড্রাইভার মো: মাসুম(৪২) সহযোগী মো আব্দুল জলিল (৪৮) ও মো: হাফিজ (৪৮) কে গ্রেপ্তার করে।

র‌্যাব জানায়, সাবেক ড্রাইভার ২০ দিন চাকরি করে কর্ম হারান যে কারণে তার মধ্যে একটি ক্ষোভ তৈরি হয়। সে সাথে ভিকটিমের সাবেক স্বামী ড্রাইভার মাসুমকে বড় অঙ্কের টাকার প্রলোভন দেখায় যে কারণে মাসুম ভিকটিমকে তার সহযোগীসহ অপহরণ করতে রাজি হয়।

র‌্যাব আরো জানায়, ভিকটিমের সাবেক স্বামী অপহরণের জন্য অগ্রিম ৭০ হাজার টাকা প্রদান করে এবং অপহরণের পর বড় অঙ্কের টাকা দেয়ার কথা ছিলো বলো প্রাথমিক ভাবে স্বীকার করেছে গ্রেপ্তার হওয়া ড্রাইভার মাসুদ।

উল্লেখ্য, গেলো ১৭ আগস্ট রাত ৮টার দিকে মাইক্রোবাসে করে মগবাজার থেকে সিদ্ধেশ্বরীর বাসায় ফেরার সময় যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার ওই নারী কর কর্মকর্তার মাইক্রোবাস থামিয়ে কয়েকজন মিলে চালককে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে গাড়ি থেকে চালককে নামিয়ে মাইক্রোবাসসহ ওই নারীকে অপহরণ করা হয়।

এরপর ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ ছিল না। পরদিন দুপুর ২টার দিকে ওই নারী কৌশলে গাড়ি থেকে নেমে চিৎকার শুরু করলে ঢাকার সবুজবাগ এলাকা থেকে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ও তিন অপহরণকারীকে আটক করে।

যখন ওই নারী কর্মকর্তাকে উদ্ধার করা হয়, তখন তার একটি পা ভাঙা, চোখে ও মাথায় মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন ছিল। তিনি এখন রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ ঘটনায় ঢাকার রমনা থানায় চারজনের নাম উল্লেখ একটি অপহরণ মামলা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে মো. মাসুম নামের এক ব্যক্তিকে, যিনি জুলাই মাসে ওই নারীর ব্যক্তিগত গাড়ির চালক ছিলেন। আগস্ট মাসের ১ তারিখে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।

ওই নারী কর কর্মকর্তা বলেন, অপহরণকারীরা তার কাছে কোনো মুক্তিপণ চাননি। অপহরণকারীদের মধ্যে শুধু মাসুমকে তিনি চিনতে পেরেছেন। ২০-২৫ দিন কাজ করার পর তাকে চাকরিচ্যুত করেছিলেন। অপহরণের পর নির্মম নির্যাতনের সময় মাসুম বারবার তাকে চাকরিচ্যুত করার কারণে ক্ষোভের কথাই বলছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন