আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

রাজধানীতে ৪দিন ব্যাপী ‘কারুপণ্য মেলা’ শুরু কাল

বাংলাদেশের গৌরবময় ঐতিহ্য ও কৃষ্টির অংশ ঐতিহ্যবাহী কারুপণ্য মেলা । তাঁতপণ্যের প্রস্তুতকারক ও শীর্ষস্থানীয় ডিজাইনারদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন, বিলুপ্তি ঠেকানো এবং সর্বোপরি দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায়, এসএমই ফাউন্ডেশন এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্যাশন ডিজাইনার্স বাংলাদেশ (এএফডিবি) চতুর্থবারের মতো এ মেলার আয়োজন করছে।

আজ মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে আগারগাঁওস্থ এসএমই ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

উদ্বোধন উপলক্ষে, এসময় ফেস্টিভ্যালের নানা দিক তুলে ধরেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্যাশন ডিজাইনার্স বাংলাদেশ (এএফডিবি) সভাপতি মানতাশা আহমেদ।

আগামীকাল বুধবার বিকেলে রাজধানীর গুলশান শুটিং ক্লাবে চারদিনব্যপী ‘৪র্থ হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল ২০২২’ কারুপণ্য মেলা। এ ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধন করবেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

ড. মো. মফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ তাঁত ও বুনন শিল্পের ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ। ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় এদেশের এলাকাভেদে বিভিন্ন ধরনের তাঁত, বস্ত্র ও কারুশিল্প বিকশিত  হয়েছে। এর মধ্যে সোনারগাঁওয়ের ঐতিহ্যবাহী জামদানি, মিরপুরের বেনারসী শাড়ি, টাঙ্গাইলের তাঁত ও শাড়ী, সিরাজগঞ্জের লুঙ্গি ও তাঁত বস্ত্র, নকশীকাঁথা, কুমিল্লার খাদী, রাজশাহীর সিল্ক, মনিপুরি তাঁত ও রাঙ্গামাটির নৃ-গোষ্ঠির তাঁতপণ্য দেশজুড়ে বিখ্যাত।

তিনি জানান, মেলার অনলাইন পেজ-এ বয়নশিল্প প্রদর্শন, লাইভ ফ্যাশন শো’র পাশাপাশি প্রায় ৬০টি স্টলে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য প্রদর্শন করা হবে শাড়ী-লুঙ্গি-গামছা, খাদি, নকশিকাঁথা, বেনারসি শাড়ী, টাঙ্গাইল শাড়ী, জামদানি শাড়ী, মনিপুরী কাপড়, রাঙ্গামাটির চাকমাসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কাপড় ও হস্তশিল্প পণ্য। যেমন, পাটজাত পণ্য বাঁশ ও বেতজাত পণ্য। থাকবে খাতভিত্তিক পণ্যের ইতিহাস নিয়ে তথ্যচিত্র, পণ্য সম্পর্কে ক্রেতাদের ধারণা প্রদান, অনলাইন সেমিনারসহ নানা আয়োজন।

ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণ করবেন বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশন, ডিজাইনার, শিল্পী, তাঁতীসহ ঐতিহ্যবাহী পণ্যের উদ্যোক্তাগণ। ফেস্টিভ্যালে লোকজ শিল্পীদের সঙ্গীত পরিবেশনা, ফ্যাশন শো, সেমিনার, ক্রেতা-বিক্রেতা ম্যাচমেকিং ইভেন্টের আয়োজন থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সভাপতি ওয়াসিকা আয়েশা খান এবং সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। সভাপতিত্ব করবেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমান।

ফেস্টিভ্যালের দ্বিতীয় দিন, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং কূটনীতিকগণদের জন্য ‘ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ ডে’ ।  অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন  ভারত, জাপান ও মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূতগণ। বিকেল ৩টায় ‘ঐতিহ্য সংরক্ষণে যুব সমাজের ভূমিকা’ সেমিনারে প্রধান অতিথি থাকবেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। বিশেষ অতিথি থাকবেন শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা।

ফেস্টিভ্যালের তৃতীয় দিন শুক্রবার সকাল ১১টায় ‘ঐতিহ্য সংরক্ষণে প্রযুক্তির ভূমিকা’ সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি সচিব মো. আবুল মনসুর।

ফেস্টিভ্যালের শেষ দিন শনিবার  সন্ধ্যা ৬টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি থাকবেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।

হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যালে দেশের ফ্যাশন ডিজাইন বিষয়ক বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চারুকলা ইনস্টিটিউটসহ অন্যান্য স্টেকহোল্ডাদের সম্পৃক্ত করা হবে। এক্ষেত্রে ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন ডিজাইনারদের প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্টের জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তাদের জন্য পৃথক একটি স্টল বরাদ্দের সুপারিশ করা হয়েছে। এই ফেস্টিভ্যালে একটি তথ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হবে, যেখানে প্রদর্শিত পণ্যের প্রস্তুতকারক ও আয়োজক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করা হবে। এছাড়া ফ্রি ওয়াইফাই সুবিধার ব্যবস্থা রাখা হবে।

গত বছরগুলোর মতো এবারও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ফ্যাশন শো আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া ফেস্টিভাল উপলক্ষ্যে প্রতিদিন বিভিন্ন ডিজাইনার কর্তৃক তাঁতের তৈরি পোশাকের ‘ফ্যাশন শো’ আয়োজন করা হবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে।

এসআই/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন