আর্কাইভ থেকে আইন-বিচার

প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি: কিশোরগঞ্জ কারাগারে চাঁদ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির অভিযোগে করা মামলায় রাজশাহী জেলা বিএনপির সভাপতি আবু সাইদ চাঁদকে এবার কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে কিশোরগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রাশেদুল আমিনের আদালতে চাঁদকে তোলার পর বিচারক এ আদেশ দেন।

এর আগে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।

আদালত সূত্রে জানা যায়, গেলো ২৪ মে আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মুহাম্মদ ইউনুস খান মামলাটি আমলে নিয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসিকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আদেশ দিয়েছিলেন। পরে চাঁদকে রোববার কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে আনা হয়। সোমবার সকালে কিশোরগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রাশেদুল আমিনের আদালতে হাজির করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১৯ মে রাজশাহী জেলা বিএনপির সভাপতি আবু সাঈদ চাঁদ পুঠিয়া এলাকায় প্রকাশ্য জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে বক্তব্য দেন। আসামি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ‘আর ২৭ দফা ১০ দফার মধ্যে আমরা নেই, এখন এক দফা। তা হচ্ছে শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে।’

এতে উল্লেখ করা হয়, চাঁদের বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতির জন্য মর্যাদাহানিকর এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। এ ঘটনায় মামলার বাদী সংক্ষুব্ধ, মর্মাহত ও মানসিকভাবে আহত হয়েছেন।

বাদীর আইনজীবী জেলার দ্রুত বিচার আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) আতিকুল হক বুলবুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেয়ার কারণে রাজশাহী জেলা বিএনপির সভাপতি আবু সাইদ চাঁদের নামে কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু বাদী হয়ে যে মামলা করেছিলেন, সে মামলার আজকে ধার্য তারিখ ছিল। তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল এবং এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পরে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।’

আসামির আইনজীবী মো. জালাল উদ্দিন বলেন, ‘আবু সাইদ চাঁদ নাকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। এ কারণে তার বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জে একটা রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা হয়েছে। আজকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

‘উনার বিরুদ্ধে এ প্রসঙ্গ নিয়ে সারা দেশে ২৬টি মামলা হয়েছে। আমরা আগামীকাল মঙ্গলবার উনার জামিন চাইব। আশা করছি আইন অনুযায়ী উনাকে জামিন দেয়ার কথা।’

তিনি বলেন, ‘দেশের প্রচলিত আইন হলো যে একটা ঘটনায় একটার বেশি মামলা হতে পারে না, কিন্তু উনার বিরুদ্ধে ২৬টি মামলা হয়েছে। হাইকোর্টে রুলিং আছে একজন ব্যক্তিকে এক বিষয়ে একাধিক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো যায় না। এখন আর সেগুলো মানা হচ্ছে না।

‘এক বিষয়ে প্রত্যেক জায়গাতেই মামলা দেয়া হচ্ছে এবং রিমান্ড চাওয়া হচ্ছে। উনি বয়স্ক মানুষ। উনার কিডনি ড্যামেজ। তারপরও উনাকে আইনি সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে না। আমরা আশা করি মঙ্গলবারই কিশোরগঞ্জ থেকে উনার জামিন মঞ্জুর হবে।’

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ দাউদ বলেন, ‘বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে আমরা মামলাটি করি। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।’

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন