আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উন্নত দেশের প্রতিচ্ছবি

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল বদলে দেবে দেশের চিত্র। বদলে যাবে বিমানবন্দরের অভিজ্ঞতা। ২১ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পে থাকছে দুটি হাইস্পিড ট্যাক্সিওয়ে, পণ্য আমদানি ও রপ্তানির আলাদা ভবন আর গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা। যার নির্মাণশৈলী মুগ্ধ করবে যেকোনও যাত্রীকে। যা আগামীর উন্নত দেশের প্রতিচ্ছবি হয়ে বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশকে নতুন করে উপস্থাপন করবে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিরামহীন বিশাল কর্মযজ্ঞ। ভারী ভারী যন্ত্রে ভরা পুরো প্রকল্প এলাকা। সীমানা প্রাচীরের উপর দিয়ে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিতে পড়তে শুরু করেছে তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ কাজ। ইতোমধ্যে টার্মিনাল ভাবনের ৩ তলার কাজ শেষ হয়েছে। অগ্রতির গাণিতিক হিসাবে প্রায় ৩০ শতাংশ।

তথ্য মতে, ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার এলাকাজুড়ে এই টার্মিনাল নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২১ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের আদলে গড়ে তোলা হচ্ছে শাহজালালকে। কাজ শেষ হলে বছরে ২ কোটি যাত্রী এই বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারবেন।

এছাড়া নতুন টার্মিনাল নির্মাণের সঙ্গে সমান্তরালভাবে আরও ৪টি কাজ হচ্ছে। রানওয়েতে উড়োজাহাজের চাপ কমাতে তৈরি হচ্ছে দুটি হাইস্পিড ট্যাক্সিওয়ে। পণ্য আমদানি ও রপ্তানির জন্য দুটি বিশাল ভবন নির্মাণ এগিয়ে চলেছে। বছরে দুই কোটি যাত্রীসেবা দিতে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য তৈরি হচ্ছে ৩ তলা ভবন।

বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, এখন এটা তিন তলা দৃশ্যমান হচ্ছে। স্ট্রাকচার দাঁড়িয়ে যাওয়ার পর আউটসাইড মেটেরিয়াল এবং অপারেশন ইকুইপমেন্টগুলো আসবে। প্রত্যেকটা বিল্ডিংয়ের সঙ্গে অনেকগুলো সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। এটার সঙ্গে আছে ব্যাগেজ হ্যান্ডেল সিস্টেম, লিফট, ফায়ার সিস্টেম, মুভিং ওয়াকার্স আছে।

তিনি বলেন, সিস্টেমের ওপর নির্ভর করে বিল্ডিং ডিজাইন। যে কনসেপ্টে ডিজাইন করা হয়েছে সেটা ঠিকমতো এগোচ্ছে কিনা সেজন্য আমরা প্রতিনিয়ত আর্কিটেকচারের সঙ্গে বসতেছি।

ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, টার্মিনালে ঢুকে যেন দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে না হয়, সেজন্য থাকছে ১১৫টি চেকইন কাউন্টার। নতুন করে তৈরি হচ্ছে ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ। বহির্গমন ইমিগ্রেশন কাউন্টার থাকবে ৬৪টি।

তিনি বলেন, মেইন টার্মিনাল বিল্ডিংয়ের কাজ হচ্ছে, অ্যাপ্রনের কাজ হচ্ছে, ট্যাক্সি ট্র্যাকের কাজ হচ্ছে, কার্গো টার্মিনালের কাজ হচ্ছে, হাইওয়ের সঙ্গে সংযোগ সড়কের কাজ হচ্ছে। একটা বিশাল কর্মযজ্ঞ চলমান আছে। তবে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করার ক্ষেত্রে করোনা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে।

বেবিচকের চেয়ারম্যান বলেন, করোনার কারণে প্রতিদিন অনেক শ্রমিক আক্রান্ত হচ্ছে। তাদেরকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তাদের সঙ্গে যারা সহযোগী শ্রমিক আছে, তাদেরকেও সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সেজন্য কাজে একটা ধীরগতি চলে এসেছে। ২০২৩ সালের মধ্যে উদ্বোধন করার জন্য একটা পর্যায়ে নিয়ে আসব। তবে কিছু কিছু কাজ থেকে যাবে।

এদিকে প্রকল্পের ধীরগতি পুষিয়ে নিতে দিনরাত কাজ করার পাশাপাশি কিছু কৌশল গ্রহণ করেছে কর্তৃপক্ষ। এটি নির্মাণ হলেই সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের চেহারা বদলে যাবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন