আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

‘ডিস্কো ডান্সার’ বাপ্পি লাহিড়ি আর নেই


বলিউডে ডিস্কো মিউজিক মানেই বাপ্পি লাহিড়ি। সেই আটের দশক থেকে কাঁপিয়ে আসছেন। এখনও ফ্লোর কাঁপাতে বাপ্পি ঘরানার গানের জুড়ি মেলা ভার। সেই সংগীত শিল্পী আর নেই। হিন্দি চলচিত্র জগতে অন্যতম জনপ্রিয় এই সংগীত শিল্পী ৬৯ বছর বয়সে মুম্বাইয়ের হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। 

মঙ্গলবার মধ্যরাতে ‘অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (ওএসএ)’-তে আক্রান্ত হয়ে তিনি সবাইকে ছেড়ে চলে যান অপারে। গেলো বছর এপ্রিলে করোনা আক্রান্ত হয়ে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এর কিছুদিন পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন বাপ্পি লাহিড়ি। 

১৯৭০ থেকে ৮০-এর দশকে হিন্দি ছায়াছবির জগতে অন্যতম জনপ্রিয় নাম বাপ্পি লাহিড়ি। হিন্দিতে ‘ডিস্কো ডান্সার’, ‘চলতে চলতে’, ‘শরাবি’, বাংলায় অমর সঙ্গী, আশা ও ভালোবাসা, আমার তুমি, অমর প্রেম প্রভৃতি ছবিতে সুর দিয়েছেন। গেয়েছেন একাধিক গান। ২০২০ সালে তার শেষ গান ‘বাগি-৩’ এর জন্য। কিশোর কুমার ছিলেন বাপ্পির সম্পর্কে মামা। বাবা অপরেশ লাহিড়ি ও মা বাঁশরি লাহিড়ি— দু’জনেই সংগীতজগতের মানুষ। ফলে একমাত্র সন্তান বাপ্পি ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। মা-বাবার কাছেই পান প্রথম গানের তালিম।

১৯৫২ সালের ২৭ নভেম্বর জলপাইগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেন বাপ্পি। তারপর দীর্ঘদিন বাংলা ও হিন্দি ছবির গান গেয়েছেন, সুর দিয়েছেন। প্রচুর স্বর্ণের গয়না পরতে ভালোবাসতেন। ছিল গায়কির নিজস্ব কায়দা, যা তাকে হিন্দি ছবির জগতে অনন্য পরিচিতি দিয়েছিল।

বাপ্পি লাহিড়ি ১৯ বছর বয়সে মুম্বাইয়ে স্থানান্তরিত হন। ১৯৭৩ সালে হিন্দী ভাষায় নির্মিত নানহা শিকারী ছবিতে তিনি প্রথম সংগীত রচনা করেন। এরপর তাহির হুসেনের জখমি (১৯৭৫) চলচ্চিত্রে কাজ করেন। এতে তিনি গান রচনাসহ গায়কের দ্বৈত ভূমিকায় অংশ নেন। অসম্ভব কিছু নয় শিরোনামে মোহাম্মদ রফি এবং কিশোর কুমারের সঙ্গেও দ্বৈত সঙ্গীতে অংশ নেন। তারপরের চলচ্চিত্র হিসেবে চালতে চালতে ছবিটির গানও দর্শক-শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। রবিকান্ত নাগাইচের সুরক্ষা ছবিতে গান গেয়ে সঙ্গীতকার হিসেবে জনপ্রিয়তা পান।

বিজেপিতে যোগ দিয়ে বাপ্পি লাহিড়ি রাজনীতিতেও নেমেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের শ্রীরামপুর কেন্দ্র থেকে ভোটেও লড়েছিলেন। কিন্তু রাজনীতিতে কখনওই স্বচ্ছন্দ বোধ করেননি বাপ্পি।

তাসনিয়া রহমান

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন