নিষেধাজ্ঞা দিলে দেবে, আমাদের তো বাংলাদেশ আছে: প্রধানমন্ত্রী
‘আমি কারো শক্তিতে বিশ্বাস করে ক্ষমতায় আসিনি। আমি ক্ষমতায় এসেছি জনগণের শক্তিতে, জনগণের ভোটে। আমি কাজ করছি জনগণের কল্যাণে। এটাই হলো আমাদের স্বার্থকতা। কাজেই কে স্যাংশন দিলো কে স্যাংশন দিলো না সেটা নিয়ে আমরা চিন্তিত নই, আওয়ামী লীগও চিন্তিত নয়।’ বললে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। নিষেধাজ্ঞা দিলে দেবে। আমাদের তো বাংলাদেশ আছে। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যদি বাংলাদেশের বাইরে থেকে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে, সেক্ষেত্রে এই দেশের জনগণ ওই ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) দেবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি কেবল সরকারি দল নয়—বিরোধী দল যদি সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায় হয়, তাহলে তাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। ‘এতে অন্তত একটা ভালো হয়েছে- বিএনপি যেমন ২০১৩-১৪ সালে নির্বাচন ঠেকাতে অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল আবার ২০১৮ সালে নির্বাচন ঠেকাতে তারা যেমন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়েছিল পুলিশ মেরেছিল, পাঁচশ ভোটকেন্দ্র পুড়িয়ে দিয়েছিল, তিন হাজার ৮৩৫টি যানবাহন পুড়িয়েছিল, যানবাহনের যাত্রীসহ আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছিল এই ভিসা নীতির ফলে অন্তত তারা এবার অদূর হয়তো যেতে পারবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সতর্ক থাকতে হবে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা দেশের বাইরে থেকে যেন না হয়। এটি হলে বাংলাদেশের জনগণই তাদের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দেবে।
তিনি বলেন, ভোট ও ভাতের অধিকার আওয়ামী লীগই করেছে। ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’ এটি আমারই স্লোগান।
এর আগে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দক্ষতা ও বৈধতা নিয়ে মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে। এর ফলে একটা শান্তিপূর্ণ এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে অর্জিত সাফল্য ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
তিনি বলেন, করোনা, জলবায়ু সংকটের প্রভাব এবং বিশ্বব্যাপী খাদ্য, অর্থায়ন এবং জ্বালানি নিরাপত্তার ওপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব উন্নয়নশীল দেশগুলোতে উন্নয়ন-লক্ষ্যসমূহ অর্জনে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকলের জন্য নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ এবং টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য অভিন্ন সংকট মোকাবেলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এ জন্য অবশ্যই বিভাজন, সংকীর্ণতা ও বিচ্ছিন্নতার বিপরীতে একতা, সহমর্মিতা ও বহুপাক্ষিকতা বেছে নিতে হবে।
তিনি বলেন, শান্তি ও টেকসই সমৃদ্ধি অর্জনের উদ্দেশ্যে আমাদের অবশ্যই সুবিচার, ন্যায় ও ন্যায্যতার নীতি অনুসরণ করতে হবে, যার ভিত্তি হবে জাতিসংঘ সনদ এবং ২০৩০ এজেন্ডা।
তিনি আরও বলেন, এমন একটি আন্তর্জাতিক আর্থিক অবকাঠামো জরুরিভাবে প্রয়োজন যা উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বিশেষ ছাড়ে, কম খরচে, কম সুদে এবং ন্যূনতম শর্তে অর্থ সংগ্রহে সহায়তা করবে। তাছাড়া, জরুরি অবস্থা এবং দুর্যোগের সময় আইএমএফের এসডিআর তহবিলে উন্নয়নশীল দেশগুলির ন্যায়সঙ্গত প্রবেশাধিকার থাকতে হবে।
সরকারপ্রধান বলেন, সমস্ত ঋণ ব্যবস্থায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংক্রান্ত বিশেষ বিধান অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। ৫০০ বিলিয়ন ডলারের একটি প্রণোদনা প্যাকেজ প্রস্তাবনার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবকে আমরা আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আমরা এই প্রস্তাবনার দ্রুত বাস্তবায়ন দাবি করছি।