আর্কাইভ থেকে আইন-বিচার

বিচারকের সই জাল করে পালাল দুই পুলিশ

ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শেখ সাদীর সই জাল করে নিজেরাই সই দিয়ে আসছিলেন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফুয়াদ উদ্দিন ও কনস্টেবল আবু মুসা। বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর তারা আদালত থেকে পালিয়ে যান।

এই দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে সোমবার রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন সিএমএম আদালত-১০ এর বেঞ্চ সহকারী ইমরান হোসেন।

ফুয়াদ উদ্দিন আদালতের মোটরযান শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ। আর আবু মুসা জেনারেল রেজিস্টার অফিসার (জিআরও) হিসেবে আছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, লাইসেন্স না থাকায় (ঢাকা মেট্রো-ল ২ ৫৫ ৮২২০ এবং ঢাকা মেট্রো- ল ৩৪ ০৯১৮) এই দুটি গাড়ির চালককে জরিমানা করে ট্রাফিক পুলিশ। জরিমানার টাকা না দেয়ায় তাদের বিরুদ্ধে নন এফআইআর পৃথক দুটি মামলা আদালতে পাঠানো হয়। আদালত দুই চালকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। পরবর্তীতে পরোয়ানা ফেরতের কাগজে এসআই ফুয়াদ উদ্দিন ও কনস্টেবল আবু মুসা বিচারকের সই জাল করে। এ ঘটনা জানাজানি হলে পালিয়ে যায় তারা। মামলা করেন সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে কমিশনার বরাবর লিখিত দিয়েছে আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগ।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ‘আমার স্যারের (মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শেখ সাদী) ১০ নম্বর আদালতের পাশাপাশি মোটরযান সম্পর্কিত মামলা পরিচালনার দায়িত্বে থাকি। ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে আদালতের মোটরযান শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ এসআই মো. ফুয়াদ উদ্দিন নন এফআইআর দুটি মামলা বিচারকের কাছে উপস্থাপন করেন। পরে মামলা দুটির আসামি না থাকায় বিচারক কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেননি। পরে বিচারক জানতে পারেন যে মামলা দুটির জব্দ করা আলামত এসআই ফুয়াদ ও মোটরযান শাখার জিআরও মো. আবু মুছা অন্যান্য সহযোগীদের যোগসাজশে পরোয়ানা ফেরত কাগজে ম্যাজিস্ট্রেট স্যারের সইয়ের জায়গায় নিজেরাই সই দিয়ে আসামিদের দিয়ে দেন।’

এজাহারে আরো বলা হয়, মামলার নথিতে বিচারকের কোনো সই নাই, এবং কোনো জরিমানা করেন নাই। এরই মধ্যে বিচারক জানতে পেরেছেন যে, মোটরযান শাখার ইনচার্জ মো. ফুয়াদ উদ্দিন ও জিআরও মো. আবু মুছা দীর্ঘদিন ধরে বিচারকের সই জাল করে একই ধরনের অপরাধ করে আসছেন।

মামলার বাদী ইমরান হোসেন বলেন, তার (ম্যাজিস্ট্রেট শেখ সাদী) সই জাল করে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিলেন আসামিরা। এ ঘটনায় আমরা একটা মামলা করেছি।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (প্রশাসন) মো. কামরুল আহসান বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত খারাপ ও ঘৃণিত কাজ। আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য হেডকোয়ার্টারে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছি। বর্তমানে তারা পলাতক থাকায় আইনে সোপর্দ করতে পারি নাই।

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন