রোডমার্চের নামে বিএনপি মিথ্যাচার করছে: সেতুমন্ত্রী
রোডমার্চের নামে বিএনপি নেতারা জনগণের কাছে মিথ্যা অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। বিএনপির আন্দোলনের তর্জন গর্জন আষাঢ়ে গল্পের মতোই হাস্যকর। বললেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে বিএনপির নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বিএনপি নেতৃবৃন্দ তথাকথিত রোডমার্চের নামে জনগণের কাছে মিথ্যা অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। সারা বাংলাদেশের আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার মতো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাড়কের নতুন নতুন ব্রিজ, ফ্লাইওভার এবং গড়ে ওঠা নতুন শিল্পাঞ্চল ও বদলে যাওয়া বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন দেখে তাদের চোখ, অন্তর, বিবেক ও মস্তিষ্ক দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তাই একের পর এক ব্যর্থ আলটিমেটামের রেশ না কাটতেই তথাকথিত এক দফার জন্য তারা পুনরায় হাস্যকর আলটিমেটাম দিয়েছে।
কাদের বলেন, জনগণ ভুলে যায়নি, তাদের এক দফা দশ দফা- একত্রিশ দফা চরম ব্যর্থতায় বিলীন হয়ে গেছে। তাদের ঈদের পর পূজার পর, পরীক্ষার পর কঠোর আন্দোলনের হুমকি আজ জনগণের কাছে উপহাসের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। বিএনপির সব তর্জন গর্জন, হুংকার আষাঢ়ে গল্পের মতোই হাস্যকর।
তিনি বলেন, বিএনপি যতবার আন্দোলনের ডাক দিয়েছে, জনগণ ততবারই তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। কারণ বাংলাদেশের জনগণ জানে, বিএনপির এই আন্দোলন দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া ও তার কুপুত্র তারেক রহমানকে হত্যা-ক্যু- ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মসনদে বসানোর আন্দোলন।
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, জন্মগতভাবেই বিএনপি একটি ব্যর্থ রাজনৈতিক দল, সংবিধান ও গণতন্ত্র হত্যাকারী দল, ভোটাধিকার হরণকারী দল। বন্দুকের নলের মুখে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল, কারফিউ বহাল রেখে সংবিধান স্থগিত করে হ্যাঁ/না ভোটের প্রহসনের নির্বাচনের আয়োজন করা, হওয়া ভবন-খোয়াব ভবন খুলে রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বস্তরে সন্ত্রাস ও দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া, এতিমের টাকা আত্মসাৎ, বিদেশে অর্থপাচার, বাংলাদেশকে উগ্র সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত করার মধ্য দিয়ে গণবিরোধী অবস্থান ব্যতীত দেশ ও জনগণের কল্যাণে বিএনপির ন্যূনতম কোনো অবদান নেই। কেবল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে মিথ্যা সমালোচনা, সরকার ও দেশবিরোধী অপপ্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা এবং দেশের সার্বভৌমত্বকে বিকিয়ে দিয়ে স্বাধীনতা ও দেশবিরোধী অপশক্তিকে একত্রিত করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকা ছাড়া একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির জনকল্যাণে কোনো আদর্শ নেই।
বিএনিপর সমালোচনা করে বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নেতারা শুধু আওয়ামী লীগ নয়, দেশের বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে বিষোদগার করছে। উস্কানির মাধ্যমে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। আওয়ামী লীগ দেশের শান্তিকামী জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির যেকোনো ধরনের অপচেষ্টা প্রতিহত করতে সংকল্পবদ্ধ।
প্রধানমন্ত্রীর বিদেশে সফর কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা কখনো খালি হাতে ফেরেন না। তিনি বাংলাদেশের জন্য সবসময় মর্যাদা, সমৃদ্ধি ও স্বীকৃতি নিয়ে আসেন। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে তাদের অর্জন ছিল দুর্নীতিতে টানা পাঁচবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, সারাবিশ্বে বাংলাদেশ ছিল ক্ষুধা-দারিদ্র্য, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের অপর নাম। হাত ধরে বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে, বিশ্বসভায় উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রস্তাবিত শান্তি, ন্যায়বিচার ও উন্নয়নের জন্য জনগণের ক্ষমতায়ন মডেল' জাতিসংঘ অধিবেশনে রেজুলেশন আকারে গৃহীত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য তার অসাধারণ উদ্ভাবনী 'কমিউনিটি ক্লিনিক সার্ভিস' জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহের কাছে দ্যা শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ' হিসেবে মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি পেয়েছে। তাই জাতিসংঘে শেখ হাসিনার ১৯তম গৌরবোজ্জ্বল উপস্থিতি বিএনপির গাত্রদাহের কারণ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাঙালি বিশ্বসভায় আজ আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়নের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও খ্যাতিমান প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অসংখ্য স্বীকৃতি, পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। বাংলাদেশের জন্য তিনি বারবার গৌরব নিয়ে এসেছেন। বাংলাদেশের জনগণ বিএনপি-জামায়াত অপশক্তির সেই অন্ধকার যুগে আর কখনো ফিরে যাবে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাঙালি জাতির এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।