আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

মিল ছেড়ে বাজারে কেন, ভোক্তা অধিকারকে ব্যবসায়ীদের প্রশ্ন

মৌলভীবাজারে সয়াবিন তেলের পাইকারি মোকামে ভোক্তা অধিকারের অভিযানের সময় ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ী চিৎকার করে বলতে থাকে, অভিযান কেন কারখানায় না গিয়ে এখানে করা হচ্ছে, ‘মিলে মাল ডেলিভারি দিচ্ছে না। মিলরে বলেন আগে ডেলিভারি ফ্রি করতে। বাংলাদেশে কয়টা মিল আছে? সব মিলেই এই সংকট। আমরা টাকা দিয়েও ১৫/২০ দিনে মাল পাচ্ছি না, এর দায়ভার কে নেবে?’ 

খোলা সয়াবিনের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য যা বেঁধে দেয়া আছে, বাজারে দাম তার চেয়ে বেশি হওয়ার কারণ জানা গেল পাইকারি বাজারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানে।

যে দামে ভোক্তাদের কাছে তেল বিক্রি করার কথা, সেই দামে তেল বিক্রি হচ্ছে পাইকারি বাজারেই। এরপর পরিবহন খরচ আর মুনাফার পর তা বিক্রি হবে ভোক্তাদের কাছে।

এই অভিযানে আবার পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ। তারা চিৎকার করে সরকারি কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের গালাগাল করছিলেন। বলছিলেন, অভিযান কেন কারখানায় না গিয়ে এখানে করা হচ্ছে?

আজ রোববার ৬মার্চ রাজধানীর মৌলভীবাজারে সয়াবিন তেলের পাইকারি মোকামে অভিযানে যায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। দুপুরে শুরু হওয়া এই অভিযানে জরিমানা করা হয় চারটি দোকানে।

ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, মিলেও দামে পার্থক্য আছে। বলেন, ‘ঢাকা-চিটাগংয়ে ২০০ টাকা ৩০০ টাকা কেন দামে ডিফারেন্স হবে?’

এই সময় একজোট হয়ে থাকা ব্যবসায়ীদের ঠেলেই বিভিন্ন দোকানে ঢোকেন কর্মকর্তারা।
জব্বার স্টোরে গিয়ে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে পামঅয়েল বিক্রির প্রমাণ পেয়ে দোকানটিকে জরিমানা করা হয় ৫০ হাজার টাকা।

তখন দোকানমালিক তার ভাউচার দেখান। তিনি ১৪৪ টাকা লিটার দরে কারখানা থেকে তেল কিনে কেবল ৫০ পয়সা মুনাফায় বিক্রি করেছেন।
তাহলে আমার দোষ কোথায়? বিক্রেতার এই মন্তব্যে অভিযানে থাকা এক কর্মকর্তা তাকে বলেন, ‘আপনি যে দামেই কেনেন না কেন, ১৩৩ টাকা দরে বিক্রি করতে হবে।’

তখন সেই ব্যবসায়ী বলেন, ‘এইভাবে চললে তো তেল বেচা বন্ধ করে দেয়া লাগবে।’

এরপর ঢাকা ট্রেডার্স ও মুসলিম স্টোরকেও সমপরিমাণ জরিমানা করা হয়। মুসলিম অ্যান্ড ব্রাদার্স নামে ছোট একটি দোকানকে জরিমানা করা হয় ১০ হাজার টাকা।

তিনটি দোকানেই পাইকারি ব্যবসায়ীরা তাদেরকে সাজা দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রশ্ন রাখেন কেন মিলে অভিযান চালানো হচ্ছে না।

একজন ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, মিল থেকে তাদেরকে যে বেশি দামে তেল কিনতে হচ্ছে, তার যেন কোনো প্রমাণ না থাকে, সে জন্য কোনো রসিদও দেয়া হয় না।

তখন অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহারিয়ার ব্যবসায়ীদের ফোনের কথোপকথন রেকর্ড অথবা তাদের সামনে কথা বলে তেলের অর্ডার নেয়ার পরামর্শ দেন।
 
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবদুল জব্বার মণ্ডল  বলেন, শবনম ভেজিটেবল অয়েল মিলে আমরা ইতোমধ্যে অভিযান চালিয়েছি। কিন্তু অভিযান চালাতে যে তথ্য-উপাত্ত দরকার হয়, তা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আমরা চিঠি দিয়েছি। আজকে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে তথ্য পেয়েছি। তাদের তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করে আমরা অভিযান পরিচালনা করব।

 

এসআই/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন