আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

শ্রমিকদের বিক্ষোভ-অবরোধ, মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গার্মেন্টস শ্রমিকদের নূন্যতম বেতন বৃদ্ধির দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে।

বুধবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে তৃতীয় দিনের মত কালিয়াকৈর উপজেলা মৌচাকে তৈরি পোশাক, জুতা ও ওষুধসহ বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে আন্দোলন করে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় যানবাহন চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়।

এসময় পুলিশের সাথে শ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রথমদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মুখোমুখি হলে শ্রমিকরা পুলিশের উপর ইটপাটকেল ছুঁড়েন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ টিয়ারশেল ও কাদানিগ্যাস নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। এক পর্যায়ে ভাংচুর করা হয়েছে বেশকিছু গাড়ি।

কারখানার শ্রমিক ও পুলিশ জানায়, উপজেলার তেলিরচালা এলাকার পূর্বানী গ্রুপের করিম টেক্সটাইল কারখানার শ্রমিকরা সর্বনিম্ন বেসিক বেতন ১৫ হাজার টাকা করার দাবিতে বুধবার সকাল ৯ টায় কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এসময় আশপাশের লগোজ অ্যাপারেলস, হাইড্রো অক্সাইড সোয়েটার কারখানা, এপিএস অ্যাপারেলস, বে ফুটওয়ার কারখানার শ্রমিকরা তাদের সঙ্গে যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। পরে শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে। এতে ওই মহাসড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উভয় দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়ে ওই পথে চলাচলকারীরা। সকাল ৯ টা থেকে শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করলে গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা থেকে কালিয়াকৈর উপজেলার পল্লিবিদুৎ পর্যন্ত দীর্ঘ ১০-১৫ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়।

ঘটনার পর থেকে জেলা পুলিশ, মেট্রোপলিটন ও শিল্প পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়।

আন্দোলনরত একাধিক শ্রমিক বলেন, আমাদের হেলপারের বেতন ৮ হাজার এবং সুপারভাইজারের বেতন ১১ হাজার টাকা ২০১৮ সাল থেকে। এরপর আর কোন বেতন বাড়ানো হয়নি। দ্রব্যমূল্যের যে দাম তাতে আমাদের জীবন চলছে না। এক কেজি মুলার দাম ৮০ টাকা, ১ কেজি সিমের দাম ১২০ টাকা। গ্যাসের দাম বেড়েছে, বাসা ভাড়া বেড়েছে। আমাদের বেতন ২৩ হাজার করতে হবে৷ এটাই আমাদের দাবি৷ এই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন করে যাব, পুলিশ যতোই আমাদের উপর আক্রমণ করুক আন্দোলন চলবেই।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মইনুল ইসলাম জানান, শ্রমিকদের আন্দোলন শুরু হলে আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা পুলিশের উপর হামলা চালালে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। পরবর্তী সময় দুপুর একটা পরে আন্দোলন বন্ধ হয়নি। এ ঘটনায় মহাসড়কে বেশকিছু গাড়ি ভাংচুর হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন