আর্কাইভ থেকে জাতীয়

‘যে কারখানা আপনাদের রুটি-রুজি দেয়,সেখানে ভাঙচুর চালালে আল্লাহও নারাজ হবেন’

‘আওয়ামী লীগ পরপর তিনবার ক্ষমতায়। এই তিনবার মজুরি ১৬০০ টাকা থেকে ৮ হাজার ৩০০ টাকা পর্যন্ত  উন্নীত করেছি।  আমি তাদের বলবো-যে কারখানায় আপনাদের রুটি রুজি দেয়, যে কারখানায় শ্রম দিয়ে আপনারা টাকা কামাই করেন-সেই কারখানা ভাঙচুর করলে আল্লাহও নারাজ হবেন।’ বললেন প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা।

শনিবার(৪ নভেম্বর) রাজধানীবাসীর দীর্ঘদিনের বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করার পর বিকেলে  আরামবাগে  আয়োজিত মহাসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে শ্রমিক অসন্তোষ হয়েছে। উস্কানি দিয়েছে তারা। এই শ্রমিকেরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। বিএনপির আমলে সেই ৫০০ টাকা মজুরি ছিল। আমি ১৯৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় আসি তখন দেখি মাত্র ৮০০ টাকা মজুরি। আমি সরকারে এসে তাদেরটা ১৬০০ টাকা করেছিলাম। এরপর বিএনপি ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল। কই তারাতো এক পয়সাও বাড়ায়নি তাদের মজুরি। আওয়ামী লীগ সরকারে এসে ২০০৯ সালে আবার আমি শ্রমিকদের মজুরি ৩ হাজার ২০০ টাকা করি। পাশাপাশি সকল শ্রমিকদের মজুরি আমরা বাড়িয়ে দেই। দ্বিতীয় বার ৫ হাজার ৩০০ টাকা করি। তৃতীয়বার ৮ হাজার ৩০০ টাকা বৃদ্ধি করি। আওয়ামী লীগ পরপর তিনবার ক্ষমতায়। এই তিনবার মজুরি ১৬০০ টাকা থেকে ৮ হাজার ৩০০ টাকা পর্যন্ত উন্নীত করেছি।  আমি তাদের বলবো-যে কারখানা আপনাদের রুটি রুজি দেয়, যে কারখানায় শ্রম দিয়ে আপনারা টাকা কামাই করেন-সেই কারখানা ভাঙচুর করলে আল্লাহও নারাজ হবেন।

সমাবেশে বিএনপির সহিংতার সমালোচনা করে সরকারপ্রধান বলেন,২৮অক্টোবর কি ঘটাল বিএনপি। পুলিশ পিছনে হটে গেছে। সেখানে পুলিশকে মেরেছে। একজন পুলিশকে পিটিয়ে মেরেছে। এটা কি কোন মানুষের কাজ হতে পারে। আমাদের আওয়ামী লীগের মেয়েদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করেছে ২৮অক্টোবরে।

এসময় শেখ হাসিনা বলেন, আগুন সন্ত্রাস তাদের নতুন না।এটা তাদের পুরানো অভ্যাস। তাদের এই ধ্বংযজ্ঞ বন্ধ করতে হবে। না হলে কিভাবে বন্ধ করেতে হয় তা আমরা জানি । তাদের গাড়ি নেই? সেগুলো যদি পোড়ানো শুরু করে তাহলে আপনারা কোথায় যাবেন। কি করবেন। যদি কেউ আগুন দিয়ে গাড়ী পোড়ায় তাকে ধরে ঐ আগুনে ফেলে দেবেন। যে হাতে আগুন দেবে সে হাত পুড়ে দেবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতটুকু বলতে পারি, পথ হারায়নি বাংলাদেশ। আমরা একের পর এক বড় বড় স্বপ্ন পূরণ করছি। একটা উন্নত দেশ যা যা পেয়েছে, আমাদের দেশের মানুষও সবই পাবে। আমরা জাতিকে শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নত জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এখন আমাদের স্বপ্ন স্মার্ট বাংলাদেশ। স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট সোসাইটি। এটাই আমার বড় আকাঙ্ক্ষা। বাংলাদেশ কারও কাছে হাত পেতে চলবে না। নিজের পায়ে দাঁড়াবে, বিজয়ী জাতি হিসেবে সারা বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবো।

তিনি বলেন, আমার বাবা (বঙ্গবন্ধু) বাঙালি জাতির একটা উন্নত সমৃদ্ধ জীবন দেবেন বলেই এ দেশেকে স্বাধীন করেছেন। আমার একটাই প্রত্যয়, আমি বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবো। আমার আমিত্ব বলে কিছু নেই, আমি আমাকে উৎসর্গ করেছি এদেশের মানুষের কল্যাণে। মানুষ যখন শান্তি পাবে, তখন আমার বাবাও শান্তি পাবে, তিনি খুশি হবেন, তিনি নিশ্চয় সেটা দেখছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি খুবই আনন্দিত। যারা এই কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন তাদের ধন্যবাদ জানাই। জাপান সরকারকেও ধন্যবাদ জানাই। তারাও এই কাজে সম্পৃক্ত ছিল। এই কাজে যারা সম্পৃক্ত ছিলেন, তারা সবাই অত্যন্ত আন্তরিকভাবে আমাদের এই কাজটা সফল করে দিয়েছেন। এটি উন্নত প্রযুক্তির ও পরিবেশবান্ধব। এর ফলে সময় বাঁচবে, যানজট কমবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন