আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

বিশ্বে এক তৃতীয়াংশ নারী শারীরিক বা যৌন সহিংসতার শিকার; ডব্লিউএইচও

বিশ্বে প্রতি তিনজনে একজন নারী শারীরিক বা যৌন সহিংসতার শিকার। মঙ্গলবার ডব্লিউএইচও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নতুন প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য। করোনা মহামারির মধ্যে নারীদের প্রতি সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ২০০০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ১৬১টি দেশে করা জরিপে দেখা গেছে, খুব কম বয়স থেকেই নারীদের হয়রানির শিকার হতে হয়। ১৫ বছর বয়স থেকেই সহিংসতার শিকার হয়েছে বিশ্বের ৮৫ কোটি ২০ লাখের বেশি নারী। এর মধ্যে বেশিরভাগই স্বামী বা কাছের মানুষের মাধ্যমে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতি চারজনে একজন ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সেই যৌন নির্যাতনের মুখোমুখি হয়।

দক্ষিণ এশিয়া, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপাঞ্চল, সাব সাহারা আফ্রিকাসহ নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে নারী নির্যাতনের হার সবচেয়ে ভয়াবহ। একই ইস্যুতে ২০১৩ সালে গবেষণায় পাওয়া ফলাফলের সঙ্গে এবারের প্রতিবেদনে খুব একটা পার্থক্য নেই। তবে এবারের গবেষণাটি সবচেয়ে বড় পরিসরে হয়েছে বলে জানায় ডব্লিউএইচও।

সহিংসতার কথা প্রকাশ না করায় নির্যাতনের শিকার নারীদের আসল সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে নির্যাতনের শিকার নারীদের জন্য সেবার মান বাড়ানো এবং নারী-পুরুষের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। 

শুধুমাত্র আর্থিকভাবে স্বাবলম্বি না হওয়ায় অনেক নারী ও মেয়ে পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে নিপীড়নের শিকার হওয়ার পরও ওই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যেতে পারে না।

ডব্লিউএইচওর কর্মকর্তারা বলছে, ছেলেশিশুদের স্কুলেই সমঝোতার ভিত্তিতে পারষ্পরিক সম্পর্কের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং পরষ্পরের সম্মতিতে যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলার বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া উচিত।

ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়াসুস বলেন, বিশ্বের সব দেশে এবং সাংস্কৃতিতে নারীদের উপর নৃশংসতা খুবই নিয়মিত চিত্র। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে লাখ লাখ নারী এবং তাদের পরিবার। কোভিড-১৯ মহামারীর সঙ্গে নারী নির্যাতন আরো বেড়ে গেছে।

গরীব দেশগুলোতে এই নির্যাতনের চিত্র রীতিমত হতাশাজনক। তবে নিপীড়িত নারীর প্রকৃত সংখ্যা জরিপে উঠে আসা সংখ্যার থেকেও অনেক বেশি বলে মনে করে ডব্লিউএইচও। কারণ যৌন নিপীড়নের ‍অনেক ঘটনা অজানা থেকে যায়।

ডব্লিউএইচওর এই জরিপের লেখক ক্লাউডিয়া গার্সিয়া-মরেনো মনে করেন, কোনো কোনো অঞ্চলে অর্ধেকের বেশি নারীই কোনো না কোনোভাবে নিপীড়নের শিকার।

তিনি বলেন, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপাঞ্চল, সাব সাহারা আফ্রিকা এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে নারী নির্যাতন বেশি হয়। আর সব থেকে কম নিপীড়নের শিকার হয় ইউরোপের নারীরা, ২৩ শতাংশ। তরুণ বয়স থেকেই নিপীড়ন শুরু হয় বলেও জানায় ডব্লিউএইচও।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন