আর্কাইভ থেকে এশিয়া

আবারও আলোচনায় লাদেন, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের মধ্যেই তার চিঠি!

আবারো বিশ্ববাসীর সামনে ওসামা বিন লাদেন। ১২ বছর আগে নিহত হলেও নতুন করে কোটি কোটি মানুষের আলোচনায় এসেছেন আল কায়েদার এই প্রতিষ্ঠাতা।মার্কিন নাগরিকদের উদ্দেশ্যে ২১ বছর আগে লেখা একটি চিঠি ফের ভাইরাল হওয়ায় তিনি এখন টক অব দ্য ওয়ার্ল্ড। কি আছে লাদেনের চিঠিতে,কেন এটি ফের ভাইরাল হলো,কেনই বা তাকে নিয়ে এত আলোচনা—এসব প্রশ্ন এখন নেটিজেনদের আলোচনার টেবিলে।

২০১১ সালের ২ মে। পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদের একটি বাড়িতে রাতের অন্ধকারে অভিযান চালিয়ে ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করেছিল মার্কিন সেনাবাহিনী।তারপর, ১২ বছর কেটে গিয়েছে।তবে লাদেনের যেনো মৃত্যু হয়নি।ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ যেনো ফের কবর খুঁড়ে তুলে এনেছে ওসামা বিন লাদেনকে।আর মার্কিন-ইসরায়েলিদের সম্পর্কে নতুন করে জানতে পেরেছে নতুন প্রজন্মসহ বিশ্ববাসী-এমনটাই ধা্রণা নেটজেনদের অনেকের।

একুশ বছর আগে চিঠিটি লিখেছিলেন ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের তকমা পাওয়া আলকায়েদার এই প্রতিষ্ঠাতা।কি আছে লাদেনের এই চিঠিতে, যার জন্য এটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলো। কি বার্তা দিয়েছিলেন যার জন্য এখন নেটিজেনদের অনেকেই নিহত আল কায়েদা নেতার সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন!

ভাইারাল হওয়া চিঠিতে নাইন-ইলেভেন হামলার ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন লাদেন। ২০০২ সালে সংবাদ মাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে এই চিঠিটি প্রকাশিত হয়।চিঠিটি ভাইরাল হওয়ার পর,দ্য গার্ডিয়ান কর্তৃপক্ষ তাদের ওয়েবসাইট থেকে এটি সরিয়ে ফেলে।

‘লেটার টু আমেরিকা’ শিরোনামে ওই চিঠিতে ২০০১ সালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলা ও হত্যাযজ্ঞকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন লাদেন।ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন কেন ওয়াল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলা চালানা হলো।অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন ‘ফিলিস্তিন দখলকারী ইসরায়েলিদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন’ই হামলার কারণ।

চিঠিতে নইন-ইলেভেন হামলার ব্যাখ্যায় লাদেনের বক্তব্য ছিলো, ‘ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র লক্ষাধিক সৈন্য নামিয়েছে। তাদের উপর অত্যাচার করেছে।জমি দখলের জন্য ইসরায়েলিদের সঙ্গে জোট গঠন করেছে। এটাই নাইন-ইলেভেন হামলার পেছনে মূল কারণ। কয়েক দশক ধরে ইসরায়েলের দখলে রয়েছে ফিলিস্তিন।১১ সেপ্টেম্বরের আগে পর্যন্ত কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই বিষয়ে কথা বলেননি।’

চিঠিতে আল কায়েদা নেতা আরও লিখেছিলেন, ফিলিস্তিনকে আর বন্দি রাখা যাবে না। তারা এই শিকল ভাঙবেই। খ্রিস্টানদের রক্ত দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তার ঔদ্ধত্যের মূল্য চোকাতে হবে।

চিঠিতে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের উল্লেখই ওসামার চিঠিটি ফের ভাইরাল হওয়ার মূল কারণ বলে মনে করছেন নেটিজেনরা। লাদেনের পক্ষে-বিপক্ষে মত দিয়েছেন অনেকে।

তারা বলছেন,চিঠিতে বেসামিরিক নাগরিকদের হত্যাকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বিন লাদেন। এই চিঠিকে কেউ কীভাবে সমর্থন করতে পারে? এর জবাবে অন্যজন লিখেছেন,গাজাতেও সন্ত্রাসবাদীদের খতম করার নামে,ফিলিস্তিনের হাজারো নিরপরাধ বেসামরিক জনগণকে হত্যা করছে ইসরায়েল।একইভাবে,মিথ্যা বলে ইরাকে হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।ওসামার কাজ সন্ত্রাসবাদ হলে,এই হামলাগুলিকে কী বলা হবে?

গত ৭ অক্টোবর নিজের দেশে হামলা চালানো হামাসকে নির্মূল করতে গিয়ে বিমান ও স্থলপথে হামলা চালিয়ে ১২ হাজারের বেশি-সাধারণ মানুষকে মেরে ফেলেছে ইসরায়েল।এই নির্লজ্জ হত্যালীলাকে সবুজ সঙ্কেত দিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।এই প্রেক্ষিতেই ওসামা বিন লাদেনের চিঠিকে প্রাসঙ্গিক এবং সমর্থনযোগ্য মনে করছে নতুন প্রজন্ম।আর চিঠিটি ফের সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠে আসে এবং ভাইরাল হয়।এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন